ঝলমলে সাফল্যের যাত্রা
ঠ্য তৈরি করেছি।
স্যাবরিনা কার্পেন্টারের ক্যারিয়ার একেবারেই থেমে নেই। গত বছরের আগস্টে তিনি প্রকাশ করেন ‘শর্ট এন সুইট’ অ্যালবাম, যা ১৯টি দেশে চার্টের শীর্ষে ওঠে। অ্যালবামের তিনটি গান—‘এসপ্রেসো’, ‘প্লিজ প্লিজ প্লিজ’ এবং ‘টেস্ট’—একসঙ্গে আমেরিকার বিলবোর্ড তালিকার প্রথম পাঁচে জায়গা করে নেয়। একক শিল্পী হিসেবে এই রেকর্ড প্রথম করেন তিনি; এর আগে কেবল দ্য বিটলসই এমন কৃতিত্ব দেখাতে পেরেছিল।
জনপ্রিয়তার দ্রুত উত্থান
তার অবস্থান অল্প সময়েই দৃঢ় হয়েছে। ২০২২ সালের প্রথমার্ধে আমেরিকায় তার গান শোনা হয়েছিল ৭ কোটি ৩০ লাখ বার। এ বছরের একই সময়ে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯০ কোটি। ডেটা ফার্ম লুমিনেট জানিয়েছে, ২০২৫ সালের এপ্রিলে স্যাবরিনার ভক্তসংখ্যা অন্য যেকোনো সংগীতশিল্পীর তুলনায় দ্রুত বেড়েছে।
নতুন অ্যালবামের ঝড়
এবার তিনি ফিরেছেন নতুন অ্যালবাম ‘ম্যানস বেস্ট ফ্রেন্ড’ নিয়ে, যা প্রকাশিত হয়েছে ২৯ আগস্ট। এর প্রধান গান ‘ম্যানচাইল্ড’ ইতিমধ্যে আমেরিকা ও ব্রিটেনের চার্টে শীর্ষে উঠে গেছে। আগামী মাসগুলোতে তার গান গাড়ির রেডিও থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরীদের শোবার ঘরে বারবার শোনা যাবে।
তিনটি কারণেই সাফল্য
আসক্তিকর সুর
তিনি দীর্ঘ সময় ধরে নিজের জন্য সঠিক সাউন্ড খুঁজেছেন। ‘ম্যানস বেস্ট ফ্রেন্ড’ হলো তার সপ্তম অ্যালবাম। ডিজনি চ্যানেলের শিশু অভিনেত্রী হিসেবে শুরু করা স্যাবরিনা ২০১৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম গান প্রকাশ করেন। এরপর তিনি লোকসংগীত থেকে ইলেকট্রনিক ডান্স মিউজিক—সবকিছু নিয়েই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তার সেরা ফল এসেছে ‘শর্ট এন সুইট’-এ। মাত্র ৩৬ মিনিটে তৈরি এই অ্যালবামে রয়েছে ডিস্কো, কান্ট্রি থেকে শুরু করে হিপ-হপের ছোঁয়া।
প্রযোজক জ্যাক অ্যান্টোনফ (টেলর সুইফটের সঙ্গেও কাজ করেন) বলেছেন, ‘প্লিজ প্লিজ প্লিজ’-এর আসল আকর্ষণ হলো ড্রাম মেশিনের কড়াকড়ি আর ভেসে বেড়ানো সিন্থেসাইজারের মধ্যে টানাপোড়েন। শুনলে মনে হয়, একসঙ্গে একটু মাতাল আর স্বপ্নময়।
বুদ্ধিদীপ্ত গীত
স্যাবরিনার গানগুলোতে আছে খুনসুটি, ফ্লার্টি ভাব এবং মজার ছড়ানো রসিকতা। এরিকা ক্যাম্পবেল, যিনি তার ওপর একটি বই লিখছেন, বলেন—তিনি এমন সব গান করেন যা একদিকে মজার, অন্যদিকে কখনো ফাজলামিপূর্ণ, আবার কখনো অযৌক্তিকভাবে খেলাচ্ছল।
তার সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ‘এসপ্রেসো’-তে তিনি গেয়েছেন—“সেই ইউ ক্যান্ট স্লিপ, বেবি, আই নো / দ্যাটস দ্যাট মি এসপ্রেসো।” আবার ‘বেড কেম’-এ লিখেছেন—“হোয়্যার আর্ট দাও? হোয়াই নট uponeth মি?”
এই দুষ্টুমিই তাকে আলাদা করে তোলে। উইনচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের পপসংগীত বিশেষজ্ঞ গ্লেন ফসব্রে বলেন, “তিনি সবসময় শ্রোতার দিকে এক ধরনের চোখ টেপা ভঙ্গিতে গান করেন।” কখনো ইঙ্গিতপূর্ণ, যেমন ‘বেড কেম’-এ গেয়েছেন—“কাম রাইট অন মি, আই মিন ক্যামেরাডারি।” আবার ‘টেস্ট’-এ মজা করে বলেন—“আই লিভ কোয়াইট অ্যান ইমপ্রেশন / ফাইভ ফিট টু বি একজ্যাক্ট।”
তার এই দুষ্টু ভাব লাইভ কনসার্ট আর মিউজিক ভিডিওতেও স্পষ্ট। যেমন ‘ম্যানচাইল্ড’-এর ভিডিওতে খারাপ প্রেমিকদের ব্যঙ্গ করতে তিনি শূকরের সঙ্গে স্নান করার দৃশ্য করেছেন।
৩. সুপরিকল্পিত ব্র্যান্ড ইমেজ
শুধু গান নয়, তার ফ্যাশনও চেনার মতো। এরিকা ক্যাম্পবেল বলেন, “স্যাবরিনার গান যেমন আলাদা করে বোঝা যায়, তার পোশাকও তেমন সহজে চেনা যায়।” মঞ্চে তিনি থাকেন করসেট ও ছোট স্কার্টে, আবার ‘শর্ট এন সুইট’ ট্যুরে পরেছিলেন ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটের বিশেষভাবে তৈরি অন্তর্বাস।
বিতর্ক ও সমালোচনা
তবে তার খোলামেলা ইমেজ নিয়ে সমালোচনাও আছে। ‘ম্যানস বেস্ট ফ্রেন্ড’ অ্যালবামের প্রচ্ছদে দেখা যায়, এক পুরুষ তার চুল টেনে ধরেছে আর তিনি চার হাত-পায়ে ভর দিয়ে আছেন। অনেকে একে পশ্চাৎগামী ও আপত্তিকর বলেছেন। ভক্তরা বিকল্প কভারের দাবি তুললে তিনি দেন এক সাদা-কালো কভার, যা মূলত মেরিলিন মনরোর একটি বিখ্যাত ছবির পুনর্নির্মাণ। এতে তিনি বুঝিয়ে দেন, খ্যাতির আসল মূল্য তিনি ভালোভাবেই বোঝেন।