০২:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
নন-প্রফিট কাঠামোতে যাচ্ছে মাষ্টডন, সিইও পদ ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন রখকো” ইউটিউবে রেকর্ড ভিউ, তবু ‘বেবি শার্ক’ নির্মাতার আয় সীমিত কেন” চীনের এআই দৌড়ে তীব্র প্রতিযোগিতা, লোকসানে কেঁপে উঠল বাইদু গোপন সসের নিরাপত্তায় নতুন জোর দিচ্ছে রেইজিং কেইন’স  সিডনিতে জমজমাট ২০২৫ এআরআইএ অ্যাওয়ার্ড, এগিয়ে নিনাজারাচি ও ডম ডোলা তাইওয়ানের স্যাটেলাইট যুগের সূচনা: স্পেসএক্স উৎক্ষেপণে বড় অগ্রগতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৯) শেয়ারবাজারে টানা উত্থান, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব আরও ইতিবাচক সিরাজগঞ্জে ব্র্যাক–ফিলিপস ফাউন্ডেশনের নতুন চার হেলথ সেন্টার প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমলেও আস্থার লড়াইয়ে এগোচ্ছে চীন

টি এ টাওয়ার: ঢাকার বাণিজ্যিক দিগন্তে আধুনিকতার নতুন প্রতীক

ঢাকার আকাশরেখায় নতুন চমক

রাজধানী ঢাকার আকাশরেখা দিন দিন বদলে যাচ্ছে। আধুনিক স্থাপত্য ও উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলো শহরের রূপান্তরে নতুন মাত্রা যোগ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মালিবাগে তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম ৪৫ তলাবিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন ‘টি এ টাওয়ার’। ৫০০ ফুট উচ্চতার এই ভবন শুধু ঢাকার নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্যই এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। ট্রপিক্যাল হোমস্ লিমিটেডের এই প্রকল্পটি একদিকে ঢাকার ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও আধুনিক করবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানের করপোরেট পরিবেশের পথও তৈরি করবে।


কৌশলগত অবস্থান ও সুবিধা

টি এ টাওয়ারের অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত। মতিঝিলের মতো পুরোনো ব্যবসায়িক এলাকা ও হাতিরঝিলের মতো আধুনিক সংযোগস্থলের মাঝামাঝি জায়গায় এর অবস্থান ভবনটিকে দ্রুতই ব্যবসায়িক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করবে। সামনের ১২০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা এবং আশপাশের ১০০ ও ২০ ফুট রাস্তার কারণে এখানে যাতায়াতও হবে সহজ। রাজধানীর ক্রমবর্ধমান যানজটের শহরে এ ধরনের অবকাঠামো ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডকে গতি দেবে।


অবকাঠামো ও নকশার বৈশিষ্ট্য

টি এ টাওয়ারের নির্মাণশৈলীতে আধুনিক স্থাপত্যের প্রভাব স্পষ্ট। ভবনটির মোট জায়গার ৫০ শতাংশ খোলা রাখা হয়েছে, যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে এবং নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়।

  • ছয়টি বেসমেন্টসহ বিশাল কমপ্লেক্স
  • প্রতিটি ফ্লোরে প্রায় ১৭,৯৮২ বর্গফুট জায়গা
  • অফিস স্পেসের আকার ১,৩০৬ থেকে ২,৮১৩ বর্গফুট
  • ৩২৮ গাড়ির পার্কিং সুবিধা

এই সবকিছু মিলিয়ে ভবনটি একাধারে আধুনিক, কার্যকরী ও ব্যবসাবান্ধব এক বাণিজ্যিক স্থাপনা হয়ে উঠছে।


কর্মীদের জন্য আধুনিক কর্মপরিবেশ

আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তৈরি এই ভবন শুধু অফিসের জন্য নয়, বরং কর্মীদের আরাম ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্যও পরিকল্পিত।

  • ১৪টি প্যাসেঞ্জার লিফট ও ২টি সার্ভিস লিফট
  • ৬ জোড়া এস্কেলেটর
  • সুনিপুণভাবে নকশা করা লবি ও রিসেপশন

এগুলো কর্মজীবী মানুষের জন্য নির্বিঘ্ন চলাচল ও আরামদায়ক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবে।


বিনোদন ও জীবনধারার আয়োজন

টি এ টাওয়ার শুধুই কাজের জায়গা নয়, এখানে রয়েছে কর্মী ও অতিথিদের জন্য বিনোদন ও বিশ্রামের বিশেষ ব্যবস্থা।

  • বিলাসবহুল বুটিক হোটেল ও সুপারমার্কেট
  • একাধিক রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল ও কমিউনিটি হল
  • ছাদের ওপরে সুইমিংপুল, সিটিভিউ কর্নার, কফি কর্নার ও হেলিপ্যাড
  • আধুনিক জিম, স্টিম রুম, সাউনা, জ্যাকুজি
  • নারীদের জন্য আলাদা পারলার ও পুরুষদের জন্য সেলুন
  • শিশুদের খেলার জায়গা, ৩ডি মুভি থিয়েটার, ভিআর রুম ও ইনডোর গেমিং জোন

এই সব সুযোগ-সুবিধা কর্মক্ষেত্রকে পূর্ণাঙ্গ জীবনধারার অভিজ্ঞতায় রূপ দেবে।


নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত মানদণ্ড

ভবনটি নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ভবন কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী। এতে রয়েছে—

  • ‘ইউএল’ সার্টিফায়েড অগ্নি-প্রতিরোধী দরজা
  • চাপযুক্ত অগ্নিনির্বাপক সিঁড়ি
  • ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি নজরদারি ও নিরাপত্তা মনিটরিং
  • কেন্দ্রীয় পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম
  • সম্পূর্ণ পাওয়ার ব্যাকআপ সুবিধা
  • শক্তি সাশ্রয়ী ডাবল-গ্লেজড কাচ

এই সব প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবসায়ী ও কর্মীদের জন্য নির্ভরযোগ্য পরিবেশ তৈরি করবে।


বিশেষজ্ঞদের হাত ধরে ভবিষ্যতের পথে

টি এ টাওয়ারের কাঠামোগত নকশা তৈরি করেছেন বুয়েটের অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা। স্ট্রাকচারাল কনসালট্যান্ট হিসেবে দায়িত্বে আছেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফখরুল আমিন। দেশীয় নকশাকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত করতে সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। ট্রপিক্যাল হোমস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ রবিউল হক জানান, “উঁচু ভবন নির্মাণ সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। তবে দক্ষ প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় আমরা এটি বাস্তবায়ন করেছি।”


ব্যবসায়িক নতুন সম্ভাবনার কেন্দ্র

টি এ টাওয়ার ঢাকার অর্থনৈতিক অবকাঠামোতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে। ব্যাংকিং, প্রযুক্তি, করপোরেট হেডকোয়ার্টার থেকে শুরু করে নতুন স্টার্ট-আপ—সব ক্ষেত্রেই এটি হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ব্যবসায়িক কেন্দ্র।

এই আকাশচুম্বী ভবন যেমন ঢাকার দিগন্তরেখাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক মানের কর্মপরিবেশ এনে দিয়েছে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে এমন এক কর্মক্ষেত্র তৈরি হওয়া নিঃসন্দেহে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য অনন্য এক অভিজ্ঞতা।

জনপ্রিয় সংবাদ

নন-প্রফিট কাঠামোতে যাচ্ছে মাষ্টডন, সিইও পদ ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন রখকো”

টি এ টাওয়ার: ঢাকার বাণিজ্যিক দিগন্তে আধুনিকতার নতুন প্রতীক

১২:৩০:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকার আকাশরেখায় নতুন চমক

রাজধানী ঢাকার আকাশরেখা দিন দিন বদলে যাচ্ছে। আধুনিক স্থাপত্য ও উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলো শহরের রূপান্তরে নতুন মাত্রা যোগ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মালিবাগে তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম ৪৫ তলাবিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন ‘টি এ টাওয়ার’। ৫০০ ফুট উচ্চতার এই ভবন শুধু ঢাকার নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্যই এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। ট্রপিক্যাল হোমস্ লিমিটেডের এই প্রকল্পটি একদিকে ঢাকার ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও আধুনিক করবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানের করপোরেট পরিবেশের পথও তৈরি করবে।


কৌশলগত অবস্থান ও সুবিধা

টি এ টাওয়ারের অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত। মতিঝিলের মতো পুরোনো ব্যবসায়িক এলাকা ও হাতিরঝিলের মতো আধুনিক সংযোগস্থলের মাঝামাঝি জায়গায় এর অবস্থান ভবনটিকে দ্রুতই ব্যবসায়িক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করবে। সামনের ১২০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা এবং আশপাশের ১০০ ও ২০ ফুট রাস্তার কারণে এখানে যাতায়াতও হবে সহজ। রাজধানীর ক্রমবর্ধমান যানজটের শহরে এ ধরনের অবকাঠামো ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডকে গতি দেবে।


অবকাঠামো ও নকশার বৈশিষ্ট্য

টি এ টাওয়ারের নির্মাণশৈলীতে আধুনিক স্থাপত্যের প্রভাব স্পষ্ট। ভবনটির মোট জায়গার ৫০ শতাংশ খোলা রাখা হয়েছে, যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল করতে পারে এবং নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়।

  • ছয়টি বেসমেন্টসহ বিশাল কমপ্লেক্স
  • প্রতিটি ফ্লোরে প্রায় ১৭,৯৮২ বর্গফুট জায়গা
  • অফিস স্পেসের আকার ১,৩০৬ থেকে ২,৮১৩ বর্গফুট
  • ৩২৮ গাড়ির পার্কিং সুবিধা

এই সবকিছু মিলিয়ে ভবনটি একাধারে আধুনিক, কার্যকরী ও ব্যবসাবান্ধব এক বাণিজ্যিক স্থাপনা হয়ে উঠছে।


কর্মীদের জন্য আধুনিক কর্মপরিবেশ

আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তৈরি এই ভবন শুধু অফিসের জন্য নয়, বরং কর্মীদের আরাম ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্যও পরিকল্পিত।

  • ১৪টি প্যাসেঞ্জার লিফট ও ২টি সার্ভিস লিফট
  • ৬ জোড়া এস্কেলেটর
  • সুনিপুণভাবে নকশা করা লবি ও রিসেপশন

এগুলো কর্মজীবী মানুষের জন্য নির্বিঘ্ন চলাচল ও আরামদায়ক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবে।


বিনোদন ও জীবনধারার আয়োজন

টি এ টাওয়ার শুধুই কাজের জায়গা নয়, এখানে রয়েছে কর্মী ও অতিথিদের জন্য বিনোদন ও বিশ্রামের বিশেষ ব্যবস্থা।

  • বিলাসবহুল বুটিক হোটেল ও সুপারমার্কেট
  • একাধিক রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল ও কমিউনিটি হল
  • ছাদের ওপরে সুইমিংপুল, সিটিভিউ কর্নার, কফি কর্নার ও হেলিপ্যাড
  • আধুনিক জিম, স্টিম রুম, সাউনা, জ্যাকুজি
  • নারীদের জন্য আলাদা পারলার ও পুরুষদের জন্য সেলুন
  • শিশুদের খেলার জায়গা, ৩ডি মুভি থিয়েটার, ভিআর রুম ও ইনডোর গেমিং জোন

এই সব সুযোগ-সুবিধা কর্মক্ষেত্রকে পূর্ণাঙ্গ জীবনধারার অভিজ্ঞতায় রূপ দেবে।


নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত মানদণ্ড

ভবনটি নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ভবন কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী। এতে রয়েছে—

  • ‘ইউএল’ সার্টিফায়েড অগ্নি-প্রতিরোধী দরজা
  • চাপযুক্ত অগ্নিনির্বাপক সিঁড়ি
  • ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি নজরদারি ও নিরাপত্তা মনিটরিং
  • কেন্দ্রীয় পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম
  • সম্পূর্ণ পাওয়ার ব্যাকআপ সুবিধা
  • শক্তি সাশ্রয়ী ডাবল-গ্লেজড কাচ

এই সব প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবসায়ী ও কর্মীদের জন্য নির্ভরযোগ্য পরিবেশ তৈরি করবে।


বিশেষজ্ঞদের হাত ধরে ভবিষ্যতের পথে

টি এ টাওয়ারের কাঠামোগত নকশা তৈরি করেছেন বুয়েটের অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা। স্ট্রাকচারাল কনসালট্যান্ট হিসেবে দায়িত্বে আছেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফখরুল আমিন। দেশীয় নকশাকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত করতে সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। ট্রপিক্যাল হোমস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ রবিউল হক জানান, “উঁচু ভবন নির্মাণ সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। তবে দক্ষ প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় আমরা এটি বাস্তবায়ন করেছি।”


ব্যবসায়িক নতুন সম্ভাবনার কেন্দ্র

টি এ টাওয়ার ঢাকার অর্থনৈতিক অবকাঠামোতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে। ব্যাংকিং, প্রযুক্তি, করপোরেট হেডকোয়ার্টার থেকে শুরু করে নতুন স্টার্ট-আপ—সব ক্ষেত্রেই এটি হয়ে উঠতে পারে আদর্শ ব্যবসায়িক কেন্দ্র।

এই আকাশচুম্বী ভবন যেমন ঢাকার দিগন্তরেখাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক মানের কর্মপরিবেশ এনে দিয়েছে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে এমন এক কর্মক্ষেত্র তৈরি হওয়া নিঃসন্দেহে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য অনন্য এক অভিজ্ঞতা।