০৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিশ্ব সঙ্গীতে এআই-এর সৃজনশীল ঢেউ আইএফএ বার্লিন ২০২৫: যে গ্যাজেটগুলো নিয়ে সবার আলোচনা এআই প্রশিক্ষণে আইনি নজির: লেখকদের সাথে Anthropic-এর $১.৫ বিলিয়ন সমঝোতা যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় আকাশ হামলা লন্ডনের ডানপন্থী সমাবেশে সহিংসতা, রেকর্ড সমাগমে উত্তেজনা দোহায় হামাস নেতাদের ওপর হামলা, যুদ্ধবিরতির আলাপ জটিলতায় নতুন গবেষণা: আটলান্টিক প্রবাহ ভাঙার ঝুঁকি এখন অনেক বেশি” ডাকসু ও জাকসুতে বৈষম্যবিরোধীদের বিপর্যয়, চ্যালেঞ্জের মুখে এনসিপি? জাতীয় নির্বাচনকে ডাকসুর সঙ্গে মেলানো যাবে না, মডেল হিসেবে কাজ করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার – আকাশ চোপড়া-অশ্বিনকেই ‘সঠিক’ প্রমাণ করছে বাংলাদেশ?

ম্যাংগ্রোভ বন ও প্রাণী: যার বড় অংশ বাংলাদেশে

প্রস্তাবনা

সমুদ্র উপকূলে লবণাক্ত পানিতে জন্মানো বিশেষ ধরণের বৃক্ষ হচ্ছে ম্যাংগ্রোভ। এই গাছের শিকড় ও পাতার গঠন এমনভাবে তৈরি যে তারা নোনা পানিতে বেঁচে থাকতে পারে। সাধারণ গাছ যেখানে পানি ব্যবহার করে খাদ্য পরিবহন করে, সেখানে ম্যাংগ্রোভ গাছ লবণ ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংগ্রহ করে। এ প্রতিবেদনে ম্যাংগ্রোভ বন ও সেখানে বসবাসকারী প্রাণীদের অভিযোজন, জীবনযাত্রা এবং পরিবেশগত গুরুত্ব তুলে ধরা হলো।

ম্যাংগ্রোভ বন

ম্যাংগ্রোভ বন ভেজা মাটি, আর্দ্র আবহাওয়া এবং লবণাক্ত পরিবেশের জন্য পরিচিত। এটি বহু সামুদ্রিক ও উপকূলীয় প্রাণীর একমাত্র আবাসস্থল। পাশাপাশি এখানে অনেক জলজ প্রাণীর প্রজনন ঘটে, ফলে জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়।

ম্যাংগ্রোভ গাছের শ্বাসমূল মাটির ওপরে উঠে অক্সিজেন গ্রহণ করে, কারণ জলাভূমির ভেতরে অক্সিজেনের প্রবাহ সীমিত। এই গাছ নোনা পানিতে টিকে থাকতে সক্ষম এবং জটিল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের বিশেষ শিকড় ব্যবস্থা রয়েছে। জোয়ার-ভাটার প্রভাবে কাদা ও পলি জমে থাকা অঞ্চলে ম্যাংগ্রোভ গাছ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ।

ম্যাংগ্রোভের বৈশিষ্ট্য

ম্যাংগ্রোভ গাছ ছোট ঝোপের মতোও হতে পারে, আবার ৪০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। সাধারণত গড় উচ্চতা প্রায় ৯ মিটার বা ৩০ ফুট। পাতাগুলো সবুজ এবং মোমের মতো শক্ত অথবা লোমশ হতে পারে। ফুল সাধারণত সাদা বা হলুদ রঙের হয়ে থাকে।

ম্যাংগ্রোভের অভিযোজন

ম্যাংগ্রোভ গাছ অতিরিক্ত নোনাভাব ও অনিশ্চিত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য শরীর ও আচরণে নানা পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

  • লবণ নিয়ন্ত্রণ: শোষণ, সংরক্ষণ ও নিঃসরণের মাধ্যমে লবণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
  • শিকড় ব্যবস্থা: লম্বা ভূগর্ভস্থ শিকড় পুষ্টি সংগ্রহ করে ঘন জালের মতো ভিত্তি তৈরি করে।
  • শ্বাসমূল: প্নিউমাটোফোর নামের শিকড় বাতাস থেকে অক্সিজেন নেয়।
  • বাট্রেস ও স্টিল্ট রুট: গাছকে নরম মাটিতে শক্ত করে ধরে রাখে।
  • লেন্টিসেল গ্রন্থি: উদ্ভিদ ও বায়ুমণ্ডলের মধ্যে গ্যাস বিনিময় ঘটায়।
  • মোম-আবৃত পাতা: পানির বাষ্পীভবন কমায়।
  • বিশেষ প্রজনন পদ্ধতি (ভিভিপারি): বীজ মায়ের গাছেই অঙ্কুরিত হয়ে ছোট গাছের মতো মাটিতে পড়ে শিকড় গেঁড়ে বড় হয়।

ম্যাংগ্রোভ বনের প্রাণী

ম্যাংগ্রোভ শুধু গাছ নয়, নানা প্রাণীর আশ্রয়ও বটে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বোর্নিও দ্বীপে লম্বা নাকওয়ালা প্রোবসিস বানর পাওয়া যায়। এরা নাক ব্যবহার করে সঙ্গী আকর্ষণ করে এবং পায়ের ঝিল্লির সাহায্যে সাঁতার কেটে শিকারি থেকে পালায়।

অস্ট্রেলিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির ম্যাংগ্রোভে ছোট আকারের উলের মতো পশমে ঢাকা মারসুপিয়াল প্রাণী বাস করে।

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী ডুগং বা সি-কাউ সমুদ্রতলের ঘাস খেয়ে জীবন কাটায় এবং অগভীর পানি ও ম্যাংগ্রোভ খালে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের ম্যাংগ্রোভ বন ও প্রাণী

বাংলাদেশের সুন্দরবন হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক ম্যাংগ্রোভ বন। এর আয়তন প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার, যার বিশাল অংশ বাংলাদেশে অবস্থিত। সুন্দরবনকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এর অনন্য জীববৈচিত্র্যের কারণে।

এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সবচেয়ে বিখ্যাত বাসিন্দা। পাশাপাশি চিত্রা হরিণ, বন্য শূকর, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, সাদা বক, কুমির, বনবিড়াল, বনশূকর, সামুদ্রিক কচ্ছপ, গঙ্গার ডলফিনসহ অসংখ্য প্রাণীর বাস। এছাড়া সুন্দরবনের নদী-খালে ইলিশ, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ধরা হয়, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও জীবিকার বড় উৎস।

সুন্দরবন শুধু প্রাণীর আবাসস্থল নয়, বরং প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবেও কাজ করে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা থেকে উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষা করে এই বন। স্থানীয় মানুষের সংস্কৃতি, লোককথা এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির সঙ্গেও সুন্দরবনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

ভারতের ম্যাংগ্রোভ বন ও প্রাণী

ভারতের সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে সমৃদ্ধ ম্যাংগ্রোভ বনগুলোর একটি। পশ্চিমবঙ্গ অংশের আয়তন প্রায় ২১১২ বর্গকিলোমিটার। এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিশাল সংখ্যা রয়েছে। এছাড়া গঙ্গার ডলফিন, অলিভ রিডলি কচ্ছপ, লোনা পানির কুমির ও ম্যাংগ্রোভ হর্সশু কাঁকড়া পাওয়া যায়।

তামিলনাডুর কাডালোর জেলার ভেলার ও কোলেরুন নদীর মোহনার মাঝে পিচাভারাম ম্যাংগ্রোভ বন অবস্থিত। এখানে সাধারণত ছোট বক, পানকৌড়ি, করমোর্যান্ট ও ওপেনবিল স্টর্কসহ নানা পাখি দেখা যায়। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি ভারতের অন্যতম সুন্দর ম্যাংগ্রোভ অঞ্চল।

ম্যাংগ্রোভ বন পৃথিবীর বহু স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। এগুলো মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়, তবে নাতিশীতোষ্ণ ও শীতল জলবায়ুতেও সীমিত আকারে রয়েছে। নোনা বা আধা-নোনা পানিতে বেড়ে ওঠা এই গাছপালা প্রাণীদের জন্য বিশেষ আবাস তৈরি করেছে।

বাংলাদেশের সুন্দরবনসহ ভারতের উপকূল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার নানা অঞ্চলে প্রোবসিস বানর, হরিণ, ভাল্লুক, বোয়া সাপ, টাপির, ডুগং, কচ্ছপ ও নানা পাখির প্রজাতি পাওয়া যায়। এসব প্রাণী বিশেষ অভিযোজনের মাধ্যমে আর্দ্র ও জটিল পরিবেশে টিকে রয়েছে।

ম্যাংগ্রোভ বন শুধু জীববৈচিত্র্যের ভান্ডার নয়, বরং মানুষ ও প্রকৃতির জন্য এক অমূল্য সম্পদ।

বিশ্ব সঙ্গীতে এআই-এর সৃজনশীল ঢেউ

ম্যাংগ্রোভ বন ও প্রাণী: যার বড় অংশ বাংলাদেশে

১২:৪৪:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রস্তাবনা

সমুদ্র উপকূলে লবণাক্ত পানিতে জন্মানো বিশেষ ধরণের বৃক্ষ হচ্ছে ম্যাংগ্রোভ। এই গাছের শিকড় ও পাতার গঠন এমনভাবে তৈরি যে তারা নোনা পানিতে বেঁচে থাকতে পারে। সাধারণ গাছ যেখানে পানি ব্যবহার করে খাদ্য পরিবহন করে, সেখানে ম্যাংগ্রোভ গাছ লবণ ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংগ্রহ করে। এ প্রতিবেদনে ম্যাংগ্রোভ বন ও সেখানে বসবাসকারী প্রাণীদের অভিযোজন, জীবনযাত্রা এবং পরিবেশগত গুরুত্ব তুলে ধরা হলো।

ম্যাংগ্রোভ বন

ম্যাংগ্রোভ বন ভেজা মাটি, আর্দ্র আবহাওয়া এবং লবণাক্ত পরিবেশের জন্য পরিচিত। এটি বহু সামুদ্রিক ও উপকূলীয় প্রাণীর একমাত্র আবাসস্থল। পাশাপাশি এখানে অনেক জলজ প্রাণীর প্রজনন ঘটে, ফলে জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়।

ম্যাংগ্রোভ গাছের শ্বাসমূল মাটির ওপরে উঠে অক্সিজেন গ্রহণ করে, কারণ জলাভূমির ভেতরে অক্সিজেনের প্রবাহ সীমিত। এই গাছ নোনা পানিতে টিকে থাকতে সক্ষম এবং জটিল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের বিশেষ শিকড় ব্যবস্থা রয়েছে। জোয়ার-ভাটার প্রভাবে কাদা ও পলি জমে থাকা অঞ্চলে ম্যাংগ্রোভ গাছ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ।

ম্যাংগ্রোভের বৈশিষ্ট্য

ম্যাংগ্রোভ গাছ ছোট ঝোপের মতোও হতে পারে, আবার ৪০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। সাধারণত গড় উচ্চতা প্রায় ৯ মিটার বা ৩০ ফুট। পাতাগুলো সবুজ এবং মোমের মতো শক্ত অথবা লোমশ হতে পারে। ফুল সাধারণত সাদা বা হলুদ রঙের হয়ে থাকে।

ম্যাংগ্রোভের অভিযোজন

ম্যাংগ্রোভ গাছ অতিরিক্ত নোনাভাব ও অনিশ্চিত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য শরীর ও আচরণে নানা পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

  • লবণ নিয়ন্ত্রণ: শোষণ, সংরক্ষণ ও নিঃসরণের মাধ্যমে লবণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
  • শিকড় ব্যবস্থা: লম্বা ভূগর্ভস্থ শিকড় পুষ্টি সংগ্রহ করে ঘন জালের মতো ভিত্তি তৈরি করে।
  • শ্বাসমূল: প্নিউমাটোফোর নামের শিকড় বাতাস থেকে অক্সিজেন নেয়।
  • বাট্রেস ও স্টিল্ট রুট: গাছকে নরম মাটিতে শক্ত করে ধরে রাখে।
  • লেন্টিসেল গ্রন্থি: উদ্ভিদ ও বায়ুমণ্ডলের মধ্যে গ্যাস বিনিময় ঘটায়।
  • মোম-আবৃত পাতা: পানির বাষ্পীভবন কমায়।
  • বিশেষ প্রজনন পদ্ধতি (ভিভিপারি): বীজ মায়ের গাছেই অঙ্কুরিত হয়ে ছোট গাছের মতো মাটিতে পড়ে শিকড় গেঁড়ে বড় হয়।

ম্যাংগ্রোভ বনের প্রাণী

ম্যাংগ্রোভ শুধু গাছ নয়, নানা প্রাণীর আশ্রয়ও বটে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বোর্নিও দ্বীপে লম্বা নাকওয়ালা প্রোবসিস বানর পাওয়া যায়। এরা নাক ব্যবহার করে সঙ্গী আকর্ষণ করে এবং পায়ের ঝিল্লির সাহায্যে সাঁতার কেটে শিকারি থেকে পালায়।

অস্ট্রেলিয়া ও পাপুয়া নিউ গিনির ম্যাংগ্রোভে ছোট আকারের উলের মতো পশমে ঢাকা মারসুপিয়াল প্রাণী বাস করে।

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী ডুগং বা সি-কাউ সমুদ্রতলের ঘাস খেয়ে জীবন কাটায় এবং অগভীর পানি ও ম্যাংগ্রোভ খালে পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের ম্যাংগ্রোভ বন ও প্রাণী

বাংলাদেশের সুন্দরবন হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক ম্যাংগ্রোভ বন। এর আয়তন প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার, যার বিশাল অংশ বাংলাদেশে অবস্থিত। সুন্দরবনকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এর অনন্য জীববৈচিত্র্যের কারণে।

এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সবচেয়ে বিখ্যাত বাসিন্দা। পাশাপাশি চিত্রা হরিণ, বন্য শূকর, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, সাদা বক, কুমির, বনবিড়াল, বনশূকর, সামুদ্রিক কচ্ছপ, গঙ্গার ডলফিনসহ অসংখ্য প্রাণীর বাস। এছাড়া সুন্দরবনের নদী-খালে ইলিশ, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ধরা হয়, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও জীবিকার বড় উৎস।

সুন্দরবন শুধু প্রাণীর আবাসস্থল নয়, বরং প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবেও কাজ করে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা থেকে উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষা করে এই বন। স্থানীয় মানুষের সংস্কৃতি, লোককথা এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির সঙ্গেও সুন্দরবনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

ভারতের ম্যাংগ্রোভ বন ও প্রাণী

ভারতের সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে সমৃদ্ধ ম্যাংগ্রোভ বনগুলোর একটি। পশ্চিমবঙ্গ অংশের আয়তন প্রায় ২১১২ বর্গকিলোমিটার। এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিশাল সংখ্যা রয়েছে। এছাড়া গঙ্গার ডলফিন, অলিভ রিডলি কচ্ছপ, লোনা পানির কুমির ও ম্যাংগ্রোভ হর্সশু কাঁকড়া পাওয়া যায়।

তামিলনাডুর কাডালোর জেলার ভেলার ও কোলেরুন নদীর মোহনার মাঝে পিচাভারাম ম্যাংগ্রোভ বন অবস্থিত। এখানে সাধারণত ছোট বক, পানকৌড়ি, করমোর্যান্ট ও ওপেনবিল স্টর্কসহ নানা পাখি দেখা যায়। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি ভারতের অন্যতম সুন্দর ম্যাংগ্রোভ অঞ্চল।

ম্যাংগ্রোভ বন পৃথিবীর বহু স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। এগুলো মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়, তবে নাতিশীতোষ্ণ ও শীতল জলবায়ুতেও সীমিত আকারে রয়েছে। নোনা বা আধা-নোনা পানিতে বেড়ে ওঠা এই গাছপালা প্রাণীদের জন্য বিশেষ আবাস তৈরি করেছে।

বাংলাদেশের সুন্দরবনসহ ভারতের উপকূল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার নানা অঞ্চলে প্রোবসিস বানর, হরিণ, ভাল্লুক, বোয়া সাপ, টাপির, ডুগং, কচ্ছপ ও নানা পাখির প্রজাতি পাওয়া যায়। এসব প্রাণী বিশেষ অভিযোজনের মাধ্যমে আর্দ্র ও জটিল পরিবেশে টিকে রয়েছে।

ম্যাংগ্রোভ বন শুধু জীববৈচিত্র্যের ভান্ডার নয়, বরং মানুষ ও প্রকৃতির জন্য এক অমূল্য সম্পদ।