০২:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
নন-প্রফিট কাঠামোতে যাচ্ছে মাষ্টডন, সিইও পদ ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন রখকো” ইউটিউবে রেকর্ড ভিউ, তবু ‘বেবি শার্ক’ নির্মাতার আয় সীমিত কেন” চীনের এআই দৌড়ে তীব্র প্রতিযোগিতা, লোকসানে কেঁপে উঠল বাইদু গোপন সসের নিরাপত্তায় নতুন জোর দিচ্ছে রেইজিং কেইন’স  সিডনিতে জমজমাট ২০২৫ এআরআইএ অ্যাওয়ার্ড, এগিয়ে নিনাজারাচি ও ডম ডোলা তাইওয়ানের স্যাটেলাইট যুগের সূচনা: স্পেসএক্স উৎক্ষেপণে বড় অগ্রগতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৯) শেয়ারবাজারে টানা উত্থান, বিনিয়োগকারীদের মনোভাব আরও ইতিবাচক সিরাজগঞ্জে ব্র্যাক–ফিলিপস ফাউন্ডেশনের নতুন চার হেলথ সেন্টার প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কমলেও আস্থার লড়াইয়ে এগোচ্ছে চীন

দুর্যোগ মোকাবিলায় নারী নেতৃত্বের অগ্রাধিকার

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ও ঘনঘন দুর্যোগে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। জাতিসংঘের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্যোগে গৃহহীন হলে বা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকালে নারীরা নানা বিপদ ও সহিংসতার শিকার হন। খাদ্য ও চিকিৎসার ঘাটতি, নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব এবং চাকরি হারানোর সম্ভাবনা তাদের জীবনকে আরও অনিরাপদ করে তোলে।

প্রতিবেদনটি জোর দিয়েছে যে দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রস্তুতিতে নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

নতুন প্রকল্প: জিআরডিআরআরআইবিবি

এই বাস্তবতায় ব্র্যাক, ইউএন উইমেন এবং সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) সহায়তায় “Gender Responsive Disaster Risk Reduction in Bangladesh (GRBDRRIBB)” নামে একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছে।

প্রকল্পটির উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা

প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ. আব্দুল ওয়াদুদ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন —

  • ইউএন উইমেনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি নবনীতা বসু সিনহা
  • সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন সাব্বিনা সভানসন
  • ব্র্যাকের হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের পরিচালক কাজী সাগর সওদাগর
  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সরজওয়ানুর রহমান

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নগর উন্নয়ন কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. গোলাম কায়কোত আলী।

প্রকল্পের লক্ষ্য ও কার্যক্রম

এই প্রকল্প জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সিভিল সোসাইটি এবং অন্যান্য অংশীদারকে একত্রিত করবে। এর মাধ্যমে —

  • দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করা,
  • দুর্বল জনগোষ্ঠীকে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলা,
  • নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া,
  • স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা গড়ে তোলা হবে।

বক্তাদের মূল বক্তব্য

  • এ. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা ও আর্থিক সক্ষমতা জরুরি। নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া কার্যকর দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব নয়।
  • নবনীতা বসু সিনহা জানান, বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের পথে নিতে হলে দুর্যোগ মোকাবিলা ও সহনশীলতায় লিঙ্গসমতার নিশ্চয়তা অপরিহার্য।
  • সাব্বিনা সভানসন বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় লিঙ্গ সমতা কেবল প্রয়োজন নয়, এটি অপরিহার্য। দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে রূপান্তর আনা সম্ভব।
  • কাজী সাগর সওদাগর জানান, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি ছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলার কার্যকারিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
  • সরজওয়ানুর রহমান বলেন, দুর্যোগকালে নারী, শিশু, প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে। তাদের অভিজ্ঞতা ও চাহিদাকে দুর্যোগ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
  • ড. গোলাম কায়কোত আলী বলেন, স্থানীয় জনগণকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। বাস্তবভিত্তিক অংশগ্রহণ ছাড়া স্থায়ী সমাধান আসবে না।

বাস্তবায়ন এলাকা ও সময়সীমা

প্রকল্পটি ২০২৫ সালের আগস্ট থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ১২টি দুর্যোগপ্রবণ জেলায় বাস্তবায়ন করা হবে। এসব জেলা হলো — কুড়িগ্রাম, জয়পুরহাট, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, কুমিলা, শরীয়তপুর, নড়াইল, সাভার, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, খুলনা ও সাতক্ষীরা।

প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো একটি লিঙ্গ-সংবেদনশীল জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি এবং সরকারি কার্যক্রম ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

জনপ্রিয় সংবাদ

নন-প্রফিট কাঠামোতে যাচ্ছে মাষ্টডন, সিইও পদ ছাড়ছেন প্রতিষ্ঠাতা ইউজেন রখকো”

দুর্যোগ মোকাবিলায় নারী নেতৃত্বের অগ্রাধিকার

০৫:৩৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ও ঘনঘন দুর্যোগে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। জাতিসংঘের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্যোগে গৃহহীন হলে বা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকালে নারীরা নানা বিপদ ও সহিংসতার শিকার হন। খাদ্য ও চিকিৎসার ঘাটতি, নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব এবং চাকরি হারানোর সম্ভাবনা তাদের জীবনকে আরও অনিরাপদ করে তোলে।

প্রতিবেদনটি জোর দিয়েছে যে দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রস্তুতিতে নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

নতুন প্রকল্প: জিআরডিআরআরআইবিবি

এই বাস্তবতায় ব্র্যাক, ইউএন উইমেন এবং সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) সহায়তায় “Gender Responsive Disaster Risk Reduction in Bangladesh (GRBDRRIBB)” নামে একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছে।

প্রকল্পটির উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা

প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ. আব্দুল ওয়াদুদ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন —

  • ইউএন উইমেনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি নবনীতা বসু সিনহা
  • সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন সাব্বিনা সভানসন
  • ব্র্যাকের হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের পরিচালক কাজী সাগর সওদাগর
  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সরজওয়ানুর রহমান

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নগর উন্নয়ন কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. গোলাম কায়কোত আলী।

প্রকল্পের লক্ষ্য ও কার্যক্রম

এই প্রকল্প জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সিভিল সোসাইটি এবং অন্যান্য অংশীদারকে একত্রিত করবে। এর মাধ্যমে —

  • দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করা,
  • দুর্বল জনগোষ্ঠীকে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলা,
  • নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া,
  • স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা গড়ে তোলা হবে।

বক্তাদের মূল বক্তব্য

  • এ. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা ও আর্থিক সক্ষমতা জরুরি। নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া কার্যকর দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব নয়।
  • নবনীতা বসু সিনহা জানান, বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের পথে নিতে হলে দুর্যোগ মোকাবিলা ও সহনশীলতায় লিঙ্গসমতার নিশ্চয়তা অপরিহার্য।
  • সাব্বিনা সভানসন বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় লিঙ্গ সমতা কেবল প্রয়োজন নয়, এটি অপরিহার্য। দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে রূপান্তর আনা সম্ভব।
  • কাজী সাগর সওদাগর জানান, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি ছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলার কার্যকারিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
  • সরজওয়ানুর রহমান বলেন, দুর্যোগকালে নারী, শিশু, প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে। তাদের অভিজ্ঞতা ও চাহিদাকে দুর্যোগ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
  • ড. গোলাম কায়কোত আলী বলেন, স্থানীয় জনগণকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। বাস্তবভিত্তিক অংশগ্রহণ ছাড়া স্থায়ী সমাধান আসবে না।

বাস্তবায়ন এলাকা ও সময়সীমা

প্রকল্পটি ২০২৫ সালের আগস্ট থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ১২টি দুর্যোগপ্রবণ জেলায় বাস্তবায়ন করা হবে। এসব জেলা হলো — কুড়িগ্রাম, জয়পুরহাট, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, কুমিলা, শরীয়তপুর, নড়াইল, সাভার, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, খুলনা ও সাতক্ষীরা।

প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো একটি লিঙ্গ-সংবেদনশীল জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি এবং সরকারি কার্যক্রম ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।