০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
জাপানে স্ট্যান্ড-আপ কমেডির জোয়ার: বিদেশি ও দ্বিভাষী শিল্পীদের হাতে নতুন হাসির পথ ডায়ানা ড্যানিয়েলের জন্য একটি নতুন সকাল প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৩৭) বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো প্যারিস থেকে তেঙ্গাহ: একটি ফরাসি রেট্রো থিমের বাসা অন্ধকার ভ্রমণের উত্থান: অতীতের ক্ষত দেখতেই কেন বাড়ছে পর্যটকের ভিড় সেনেগালে দুর্নীতি দমন না রাজনৈতিক প্রতিশোধ? ফায়ে–সোঙ্কো সরকারের কড়াকড়িতে বিতর্ক তুঙ্গে মরক্কোর দাখলা অ্যাটলান্টিক বন্দর: আফ্রিকা-সাহেল বাণিজ্যের নতুন প্রবেশদ্বার বিশ্বের ৯৯% চিপ প্রযুক্তির নায়ক: সেমিকন্ডাক্টর কিংবদন্তি চি-তাং সা’র অস্থি চীনে সমাহিত রাশিয়ায় নির্বাসন থেকে সিরীয় উপকূলে নতুন বিদ্রোহের ছক আঁকছেন আসাদের সাবেক গুপ্তচরপ্রধান ও কোটিপতি চাচাতো ভাই

সাহায্যের আহ্বান: ভূমিধসে সুদানের গ্রাম ধ্বংস, নিহত এক হাজার

ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলের জেবেল মারা পাহাড়ি এলাকায় টারসিন গ্রামে ভয়াবহ ভূমিধস হয়েছে। স্থানীয় সশস্ত্র সংগঠন সুদান লিবারেশন মুভমেন্ট/আর্মি (এসএলএম/এ) জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে পুরো গ্রাম মাটির নিচে

এসএলএম/এ জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর কাছে দ্রুত সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটির নেতা আবদেলওয়াহিদ মোহাম্মদ নূর বলেন, অব্যাহত ভারি বর্ষণ আরও ভূমিধসের আশঙ্কা তৈরি করছে। আশপাশের গ্রামগুলো আতঙ্কে রয়েছে যে একই পরিণতি তাদেরও হতে পারে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার কার্যক্রম, আশ্রয়কেন্দ্র এবং সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বান জানান।


ধ্বংসপ্রাপ্ত টারসিন

টারসিন গ্রাম সাইট্রাস উৎপাদনের জন্য পরিচিত ছিল। কিন্তু এই দুর্যোগে গ্রামটি সম্পূর্ণ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। প্রবল বৃষ্টি এলাকায় যাতায়াত কঠিন করে তুলেছে, যা উদ্ধার এবং ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও জটিল করে তুলছে।


মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন তথ্য

জাতিসংঘের স্থানীয় সমন্বয়কারীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ৩০০ থেকে ১,০০০-এর মধ্যে হতে পারে। ইতিমধ্যে স্বেচ্ছাসেবীরা মাত্র নয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করতে পেরেছে। টারসিন গ্রামে আগে থেকেই সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল।


প্রবেশের কঠিন পথ

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক কর্মকর্তা আরজিমন্দ হুসেইন জানান, টারসিনে যাওয়ার শেষ ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা যানবাহনের অযোগ্য। কেবল হেঁটে বা গাধার পিঠে চড়ে যাওয়া সম্ভব। এ কারণে উদ্ধার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।


চলমান গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপট

সুদানে দুই বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) রাজধানী আল-ফাশির নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে। এই সংঘাতে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে এবং লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অনেকে জেবেল মারা আশ্রয় নিয়েছে, কিন্তু খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসার ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া তাওইলা অঞ্চলে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।


সরকারের প্রতিক্রিয়া

সুদানের সেনা-নিয়ন্ত্রিত সরকার গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং সহায়তার ইচ্ছা জানিয়েছে। অন্যদিকে আরএসএফ-নিয়ন্ত্রিত নবগঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান আল-তাইশি বলেছেন, তিনি এসএলএম/এর সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ভ্যাটিকান থেকে জানানো হয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করছেন এবং শোক প্রকাশ করেছেন।


এই মর্মান্তিক ভূমিধস সুদানের চলমান মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে, যেখানে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ একসঙ্গে মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানে স্ট্যান্ড-আপ কমেডির জোয়ার: বিদেশি ও দ্বিভাষী শিল্পীদের হাতে নতুন হাসির পথ

সাহায্যের আহ্বান: ভূমিধসে সুদানের গ্রাম ধ্বংস, নিহত এক হাজার

১১:১৫:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলের জেবেল মারা পাহাড়ি এলাকায় টারসিন গ্রামে ভয়াবহ ভূমিধস হয়েছে। স্থানীয় সশস্ত্র সংগঠন সুদান লিবারেশন মুভমেন্ট/আর্মি (এসএলএম/এ) জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে পুরো গ্রাম মাটির নিচে

এসএলএম/এ জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর কাছে দ্রুত সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটির নেতা আবদেলওয়াহিদ মোহাম্মদ নূর বলেন, অব্যাহত ভারি বর্ষণ আরও ভূমিধসের আশঙ্কা তৈরি করছে। আশপাশের গ্রামগুলো আতঙ্কে রয়েছে যে একই পরিণতি তাদেরও হতে পারে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার কার্যক্রম, আশ্রয়কেন্দ্র এবং সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বান জানান।


ধ্বংসপ্রাপ্ত টারসিন

টারসিন গ্রাম সাইট্রাস উৎপাদনের জন্য পরিচিত ছিল। কিন্তু এই দুর্যোগে গ্রামটি সম্পূর্ণ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। প্রবল বৃষ্টি এলাকায় যাতায়াত কঠিন করে তুলেছে, যা উদ্ধার এবং ত্রাণ কার্যক্রমকে আরও জটিল করে তুলছে।


মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন তথ্য

জাতিসংঘের স্থানীয় সমন্বয়কারীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ৩০০ থেকে ১,০০০-এর মধ্যে হতে পারে। ইতিমধ্যে স্বেচ্ছাসেবীরা মাত্র নয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করতে পেরেছে। টারসিন গ্রামে আগে থেকেই সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল।


প্রবেশের কঠিন পথ

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক কর্মকর্তা আরজিমন্দ হুসেইন জানান, টারসিনে যাওয়ার শেষ ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা যানবাহনের অযোগ্য। কেবল হেঁটে বা গাধার পিঠে চড়ে যাওয়া সম্ভব। এ কারণে উদ্ধার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।


চলমান গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপট

সুদানে দুই বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) রাজধানী আল-ফাশির নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে। এই সংঘাতে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে এবং লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অনেকে জেবেল মারা আশ্রয় নিয়েছে, কিন্তু খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসার ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া তাওইলা অঞ্চলে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।


সরকারের প্রতিক্রিয়া

সুদানের সেনা-নিয়ন্ত্রিত সরকার গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং সহায়তার ইচ্ছা জানিয়েছে। অন্যদিকে আরএসএফ-নিয়ন্ত্রিত নবগঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান আল-তাইশি বলেছেন, তিনি এসএলএম/এর সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ভ্যাটিকান থেকে জানানো হয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করছেন এবং শোক প্রকাশ করেছেন।


এই মর্মান্তিক ভূমিধস সুদানের চলমান মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে, যেখানে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ একসঙ্গে মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করছে।