মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার কিম জং-উনের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়েছেন।
চীন বুধবার বেইজিংয়ে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিজয় দিবসের প্যারেড আয়োজন করে। এতে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওই অনুষ্ঠানে পুতিন ও কিম সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। মোট ২৬ জন রাষ্ট্রপ্রধান এতে অংশ নেন। বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলোর বিরোধিতার মুখে এই উপস্থিতি এক ধরনের রাজনৈতিক বার্তা।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের সময় দয়া করে ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং-উনকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাবেন।”
এর আগে পুতিন বেইজিংয়ে আলোচনার সময় চীন-রাশিয়ার সম্পর্ককে “অভূতপূর্ব” বলে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে কিম জং-উন তার মেয়েকে নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

ট্রাম্পের বক্তব্যে দ্বিধা
যদিও সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্প সরাসরি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন, পরে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, চীন ও তার মিত্ররা যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কোনো জোট গঠন করছে বলে তিনি মনে করেন না।
তার ভাষায়, “না, মোটেই না। চীন আমাদের প্রয়োজন করে। আমাদের চেয়ে অনেক বেশি তাদের আমাদের প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “আমার প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমি কোনো ষড়যন্ত্র দেখছি না।”
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গ
নিজের পোস্টে ট্রাম্প দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চীনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ত্যাগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, “চীনের বিজয় ও গৌরবের অভিযাত্রায় বহু আমেরিকান প্রাণ দিয়েছে। তাদের সাহস ও আত্মত্যাগের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া উচিত।”
চীনের প্যারেডটি মূলত জাপানের আত্মসমর্পণ ও যুদ্ধজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত হয়।

সামরিক শক্তি নিয়ে আত্মবিশ্বাস
রেডিও সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া ও চীনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন। তার ভাষায়, “আমেরিকার পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী রয়েছে। তারা কখনও আমাদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেবে না। সেটা তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হবে।”
ইউক্রেন ইস্যুতে হতাশা
একই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি “খুবই হতাশ”। গত মাসে আলাস্কায় বৈঠকে তারা ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো শান্তিচুক্তি করতে পারেননি।
ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি হতাশ। তবে আমরা ইউক্রেনের মানুষদের জন্য কিছু করব যাতে তারা ভালোভাবে বাঁচতে পারে।” তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

চীনের ভূমিকা ও পশ্চিমাদের অভিযোগ
চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের সমালোচনা করেনি। পশ্চিমাদের অভিযোগ, চীন রাশিয়াকে যুদ্ধসামগ্রী ও তেল কেনার মাধ্যমে সহায়তা দিচ্ছে। তবে বেইজিং এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইউক্রেনের সতর্কবার্তা
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া নতুন করে সীমান্তরেখার বিভিন্ন অংশে সেনা মোতায়েন করছে।
তিনি রাতে দেওয়া ভাষণে বলেন, “[পুতিন] শান্তিতে আসতে একেবারেই অস্বীকার করছেন।”
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















