০১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ডাকসু ও জাকসুতে বৈষম্যবিরোধীদের বিপর্যয়, চ্যালেঞ্জের মুখে এনসিপি? জাতীয় নির্বাচনকে ডাকসুর সঙ্গে মেলানো যাবে না, মডেল হিসেবে কাজ করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার – আকাশ চোপড়া-অশ্বিনকেই ‘সঠিক’ প্রমাণ করছে বাংলাদেশ? ভেঙে দেওয়া সংসদ পুনর্বহাল চায় নেপালের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো রেমিট্যান্স যেভাবে বদলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের অনেক গ্রাম নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার প্রথমদিনে শান্ত হতে শুরু করেছে নেপাল অবশেষে জাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা, কেনো এত সময় লাগলো? ঝালকাঠির হালতা নদী: ইতিহাস, জীবন ও ভবিষ্যতের লড়াই সাগর দ্বীপ : যাকে মানুষ চেনে গঙ্গাসাগর নামে ফরাসি মাস্টার সেজান তাঁর পারিবারিক প্রাসাদে

বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমশৈল এ২৩এ ভেঙে যাচ্ছে

হিমশৈলের ভাঙন শুরু

বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমশৈল ‘এ২৩এ’ দ্রুত ভেঙে একাধিক বড় খণ্ডে পরিণত হচ্ছে। ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের (BAS) বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এসব খণ্ড এত বড় যে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আইস সেন্টার এগুলোকে আলাদা বড় হিমশৈল হিসেবে নথিভুক্ত করেছে।

আকার ও ইতিহাস

এ২৩এ একসময় প্রায় এক ট্রিলিয়ন মেট্রিক টন ওজনের ছিল এবং আয়তনে ৩ হাজার ৬৭২ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত ছিল—যা রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের চেয়েও বড়। এটি ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার-রনি আইস শেলফ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকেই বিজ্ঞানীদের নজরে ছিল।


১৯৮০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত এ২৩এ একাধিকবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় জীবিত হিমশৈলের খেতাব ধরে রেখেছে। তবে মাঝে মাঝে এর চেয়ে বড় কিন্তু স্বল্পস্থায়ী হিমশৈল—যেমন ২০১৭ সালের এ৬৮ এবং ২০২১ সালের এ৭৬—একে ছাড়িয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক অবস্থা

বর্তমানে এ২৩এ-এর আয়তন কমে প্রায় ১ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে, যা গ্রেটার লন্ডনের সমান। দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় এটি অ্যান্টার্কটিকার ওয়েডেল সাগরের তলদেশে আটকে ছিল। ২০২০ সালে এটি সাগরের স্রোতে ভেসে যায় এবং বারবার আটকে থেকে আবারও মুক্ত হয়। এ বছর মার্চে এটি মহাদেশীয় শেলফে আটকে ছিল, তবে মে মাসে আবার ভেসে ওঠে।

কেন ভাঙছে এ২৩এ

বিএএস-এর মহাসাগরবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু মেইজার্স জানিয়েছেন, মে মাসে মুক্ত হওয়ার পর থেকে এটি শক্তিশালী স্রোত দক্ষিণ অ্যান্টার্কটিক সার্কাম্পোলার কারেন্ট ফ্রন্ট (SACCF) বরাবর ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরছে। এই স্রোতই শেষ পর্যন্ত হিমশৈল ও এর টুকরোগুলোকে উত্তর-পূর্ব দিকে ‘আইসবের্গ অ্যালি’ অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছে।


তিনি আরও জানান, এ২৩এ-এর ভাঙনের ধারা অনেকটা ২০২১ সালের এ৬৮ ও ২০২৩ সালের এ৭৬-এর মতো, যেগুলোও সাউথ জর্জিয়ার কাছাকাছি এসে ভেঙে গিয়েছিল। তবে এ২৩এ টিকে ছিল আরও দীর্ঘ সময়।

নতুন সবচেয়ে বড় হিমশৈল

এ২৩এ ভেঙে যাওয়ায় এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমশৈলের খেতাব পেয়েছে ডি১৫এ। এর আয়তন প্রায় ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং এটি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিস বেসের কাছে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। এ২৩এ এখন দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্রুত ভেঙে খণ্ডে খণ্ডে ছোট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থানও আর বেশিদিন থাকবে না।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

মেইজার্স বলেন, বরফ ভাঙা বা ক্যালভিং প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরের উষ্ণতা ও স্রোতের ধরণ বদলে যাওয়ায় অ্যান্টার্কটিকার আইস শেলফগুলো গত কয়েক দশকে ট্রিলিয়ন টন বরফ হারিয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশই হিমশৈল ভেঙে সাগরে ভেসে যাওয়ার মাধ্যমে ক্ষয় হয়েছে।
মানুষের তৈরি জলবায়ু পরিবর্তন অ্যান্টার্কটিকায় ভয়াবহ পরিবর্তন আনছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বিপর্যয়করভাবে বাড়াতে পারে।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ঝুঁকি

বিএএস-এর গবেষক দল গবেষণা জাহাজ আরআরএস স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো দিয়ে এ২৩এ-তে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে, যা যুক্তরাজ্যে নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হিমশৈলের আটকে থাকা এবং প্রচুর ঠান্ডা মিঠা পানির মুক্তি সাগরের তলদেশ ও আশপাশের প্রাণীর ওপর বড় প্রভাব ফেলেছে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ভবিষ্যতে সাউথ জর্জিয়া অঞ্চলে এ ধরনের বড় হিমশৈল আরও দেখা যেতে পারে।

ডাকসু ও জাকসুতে বৈষম্যবিরোধীদের বিপর্যয়, চ্যালেঞ্জের মুখে এনসিপি?

বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমশৈল এ২৩এ ভেঙে যাচ্ছে

০৩:০৮:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হিমশৈলের ভাঙন শুরু

বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমশৈল ‘এ২৩এ’ দ্রুত ভেঙে একাধিক বড় খণ্ডে পরিণত হচ্ছে। ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের (BAS) বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এসব খণ্ড এত বড় যে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আইস সেন্টার এগুলোকে আলাদা বড় হিমশৈল হিসেবে নথিভুক্ত করেছে।

আকার ও ইতিহাস

এ২৩এ একসময় প্রায় এক ট্রিলিয়ন মেট্রিক টন ওজনের ছিল এবং আয়তনে ৩ হাজার ৬৭২ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত ছিল—যা রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের চেয়েও বড়। এটি ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার-রনি আইস শেলফ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকেই বিজ্ঞানীদের নজরে ছিল।


১৯৮০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত এ২৩এ একাধিকবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় জীবিত হিমশৈলের খেতাব ধরে রেখেছে। তবে মাঝে মাঝে এর চেয়ে বড় কিন্তু স্বল্পস্থায়ী হিমশৈল—যেমন ২০১৭ সালের এ৬৮ এবং ২০২১ সালের এ৭৬—একে ছাড়িয়ে গেছে।

সাম্প্রতিক অবস্থা

বর্তমানে এ২৩এ-এর আয়তন কমে প্রায় ১ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে, যা গ্রেটার লন্ডনের সমান। দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় এটি অ্যান্টার্কটিকার ওয়েডেল সাগরের তলদেশে আটকে ছিল। ২০২০ সালে এটি সাগরের স্রোতে ভেসে যায় এবং বারবার আটকে থেকে আবারও মুক্ত হয়। এ বছর মার্চে এটি মহাদেশীয় শেলফে আটকে ছিল, তবে মে মাসে আবার ভেসে ওঠে।

কেন ভাঙছে এ২৩এ

বিএএস-এর মহাসাগরবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু মেইজার্স জানিয়েছেন, মে মাসে মুক্ত হওয়ার পর থেকে এটি শক্তিশালী স্রোত দক্ষিণ অ্যান্টার্কটিক সার্কাম্পোলার কারেন্ট ফ্রন্ট (SACCF) বরাবর ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরছে। এই স্রোতই শেষ পর্যন্ত হিমশৈল ও এর টুকরোগুলোকে উত্তর-পূর্ব দিকে ‘আইসবের্গ অ্যালি’ অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছে।


তিনি আরও জানান, এ২৩এ-এর ভাঙনের ধারা অনেকটা ২০২১ সালের এ৬৮ ও ২০২৩ সালের এ৭৬-এর মতো, যেগুলোও সাউথ জর্জিয়ার কাছাকাছি এসে ভেঙে গিয়েছিল। তবে এ২৩এ টিকে ছিল আরও দীর্ঘ সময়।

নতুন সবচেয়ে বড় হিমশৈল

এ২৩এ ভেঙে যাওয়ায় এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমশৈলের খেতাব পেয়েছে ডি১৫এ। এর আয়তন প্রায় ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং এটি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিস বেসের কাছে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। এ২৩এ এখন দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্রুত ভেঙে খণ্ডে খণ্ডে ছোট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থানও আর বেশিদিন থাকবে না।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

মেইজার্স বলেন, বরফ ভাঙা বা ক্যালভিং প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরের উষ্ণতা ও স্রোতের ধরণ বদলে যাওয়ায় অ্যান্টার্কটিকার আইস শেলফগুলো গত কয়েক দশকে ট্রিলিয়ন টন বরফ হারিয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশই হিমশৈল ভেঙে সাগরে ভেসে যাওয়ার মাধ্যমে ক্ষয় হয়েছে।
মানুষের তৈরি জলবায়ু পরিবর্তন অ্যান্টার্কটিকায় ভয়াবহ পরিবর্তন আনছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বিপর্যয়করভাবে বাড়াতে পারে।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ঝুঁকি

বিএএস-এর গবেষক দল গবেষণা জাহাজ আরআরএস স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো দিয়ে এ২৩এ-তে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে, যা যুক্তরাজ্যে নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হিমশৈলের আটকে থাকা এবং প্রচুর ঠান্ডা মিঠা পানির মুক্তি সাগরের তলদেশ ও আশপাশের প্রাণীর ওপর বড় প্রভাব ফেলেছে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে ভবিষ্যতে সাউথ জর্জিয়া অঞ্চলে এ ধরনের বড় হিমশৈল আরও দেখা যেতে পারে।