সারসংক্ষেপ
- বর্তমান ও সাবেক এফবিআই কর্মীরা জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন
- গোপনে ব্যবহৃত গাড়িগুলো উন্মোচিত হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি উপস্থিতির কারণে
- সাবেক ডিএইচএস কর্মকর্তা সতর্ক করেছেন, সংবেদনশীল তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
- এফবিআই মুখপাত্র অভিযোগ অস্বীকার করেছেন

ওয়াশিংটন পরিস্থিতি
ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে হঠাৎ বিপুল সংখ্যক ফেডারেল আইনশৃঙ্খলা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস বলছে, এই অভিযান সহিংস অপরাধ দমনের জন্য; তবে বাস্তবে বহু গ্রেপ্তারই ক্ষুদ্র অপরাধে হয়েছে।
নয়জন বর্তমান ও সাবেক এফবিআই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই মোতায়েন এফবিআইয়ের গোপন গাড়িগুলোর পরিচয় ফাঁস করছে, যা তাদের জাতীয় নিরাপত্তা, গুপ্তচরবৃত্তি প্রতিরোধ ও মাদকচক্র মোকাবিলায় মারাত্মকভাবে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

গোপন কার্যক্রম ঝুঁকিতে
সাধারণত আড়ালে থেকে যারা তদন্ত করেন সেই এজেন্টরা, তারাও এখন নিয়মিত পুলিশি দায়িত্ব পালন করছেন। তারা কৌশলগত পোশাকে পরিচিত এলাকায় হাজির হচ্ছেন এবং গোপন গাড়ি থেকে বের হচ্ছেন। এতে এই গাড়িগুলোকে সহজেই চিহ্নিত করা যাচ্ছে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, “প্রতিবার যখন আমরা গোপন গাড়ি থেকে বের হয়ে এফবিআই ভেস্ট পরে দাঁড়াই, তখনই সেই গাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়—এটি আর গোপনে ব্যবহারযোগ্য থাকে না।”
অন্য এক কর্মকর্তা সতর্ক করেছেন, এতে মাদকচক্র, বিদেশি গুপ্তচর কিংবা সহিংস গ্যাংয়ের ওপর নজরদারি কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এফবিআইয়ের প্রতিক্রিয়া
এফবিআই মুখপাত্র বেন উইলিয়ামসন অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এই অভিযোগগুলো এফবিআইয়ের নিরাপত্তা নীতিমালার ভুল বোঝাপড়া। এজেন্টদের সুরক্ষায় একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নেতৃত্বের কাছে কোনো উদ্বেগ আসেনি। প্রকৃত উদ্বেগ থাকলে সদর দপ্তর বা ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিসে জানানো হতো, সংবাদমাধ্যমে নয়।”

নিরাপত্তা হুমকি বাড়ছে
বর্তমান ও সাবেক কর্মীদের মতে, ওয়াশিংটনে এক হাজার পর্যন্ত এফবিআই গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে। এ সময় কার্টেল, গ্যাং ও বিদেশি রাষ্ট্রগুলো এজেন্ট ও তাদের গাড়ি শনাক্ত করতে তৎপর।
সাবেক হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তা জন কোহেন বলেন, “এভাবে এজেন্টরা প্রকাশ্যে আসছেন, যা তাদের পরবর্তী সংবেদনশীল তদন্তে গুরুতর সমস্যা তৈরি করবে।”
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা
প্রাক্তন এফবিআই এজেন্ট ড্যান ব্রুনার বলেছেন, “এটি পাগলামি, বিপজ্জনক এবং ব্যুরোর জন্য ক্ষতিকর। ওয়াশিংটন হলো গুপ্তচরের শহর। গাড়িগুলোর নম্বর প্লেট ইতিমধ্যেই রেকর্ড করা হচ্ছে।”
যদিও কোনো বিদেশি শক্তি গাড়িগুলো অনুসরণ করছে এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে কর্মকর্তাদের মতে মাদকচক্র ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সবসময় এ ধরনের চেষ্টা করে থাকে।

২০১৮ সালে মেক্সিকোতে সিনালোয়া কার্টেলের হয়ে কাজ করা এক হ্যাকার এফবিআইয়ের এক কর্মীর ফোন রেকর্ড ও সিসিটিভি ব্যবহার করে সাক্ষীদের শনাক্ত করে হত্যা করতে সাহায্য করেছিল।
একজন বর্তমান কর্মী বলেন, “এটি কল্পনার বিষয় নয়, বাস্তবে মেক্সিকোতেই দেখা গেছে।”
সমাধানের পথ
ব্রুনারের মতে, অন্তত এই অভিযানে ব্যবহৃত সব গাড়ির নম্বর প্লেট বদলানো উচিত। ভবিষ্যতে হলে ভিন্ন গাড়ি, এমনকি অন্য সংস্থার গাড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোহেনের মতে, উচ্চ অপরাধপ্রবণ এলাকায় দৃশ্যমান পুলিশি উপস্থিতি অপরাধ দমন করতে পারে। তবে ফেডারেল সংস্থার মূল শক্তি হলো গোপন তদন্ত, যেখানে এজেন্টদের পরিচয় ও ব্যবহৃত সম্পদ গোপন রাখা হয়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















