চেন মেইয়ের অভিজ্ঞতা
গুয়াংডং প্রদেশের পশ্চিম উপকূলে সমুদ্রের ধারে চার বছর ধরে ছুটি কাটানোর জন্য ভাড়া বাসা দিচ্ছিলেন চেন মেই। কিন্তু চাহিদা কমে যাওয়ায় এখন তিনি আফসোস করছেন এই ব্যবসায় নামার সিদ্ধান্তে।
চেন বলেন, মহামারির পর স্থানীয় পর্যটনের চাহিদা দ্রুত বাড়বে ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু আসলে ঘটেছে উল্টো—ভাড়ার দামে প্রতিযোগিতা বাড়তে বাড়তে লাভ কমে গেছে প্রতি বছরই। তাই তিনি ধীরে ধীরে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। তাঁর মতে, যদি আবার সুযোগ মিলত, এই খাতে বিনিয়োগ করতেন না।

শিল্পের সামগ্রিক চিত্র
চেন মেইয়ের অভিজ্ঞতা আসলে চীনের পুরো প্রাইভেট হোমস্টে খাতের বর্তমান পরিস্থিতিকে প্রতিফলিত করে। এখানে ছোট গেস্ট হাউস, ভিলা ভাড়া কিংবা বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্ট—সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত।
২০২২ সালের শেষদিকে মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসার পর পর্যটনে এক ধরনের উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছিল। এই সময়টাকে বলা হয়েছিল ‘রিভেঞ্জ ট্রাভেল’। সুযোগ বুঝে নতুন বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তারা দলে দলে নামেন বাজারে। কিন্তু চাহিদার সেই উত্থান ছিল স্বল্পস্থায়ী।
বুম থেকে মন্দায় পতন
স্বল্প সময়ে অতিরিক্ত সরবরাহ তৈরি হয়। অতিথিদের খরচ কমতে থাকে, বুকিংও কমতে শুরু করে। ফলে মাত্র দুই বছরের মধ্যেই খাতটি বুম থেকে মন্দার চক্রে পড়ে যায়। এর ফলে চেন মেইয়ের মতো উদ্যোক্তারা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন।

বাজারের পরিসংখ্যান
বেইজিংভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফাস্টডাটা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর চীনে প্রাইভেট হোমস্টে ব্যবসার সংখ্যা ছিল চার লাখের বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই তিন বছরের কম সময় আগে চালু হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২৪ সালে বুকিং থেকে আয় করেছে ৪২.২৭ বিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ৫.৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
তবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সামগ্রিক বাজারের মনোভাব খারাপ। প্রায় ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা বলেছেন, তারা এই খাতে নামার জন্য অনুতপ্ত।

উদ্যোক্তাদের হতাশা
এক নারী উদ্যোক্তার বক্তব্য প্রতিবেদনে উদ্ধৃত করা হয়েছে—
“আমি লাখ লাখ ইউয়ান ঢেলেছি এই হোমস্টে ব্যবসায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকে পেয়েছি গৃহপরিচারিকার সমান আয় করতে।”
এই চিত্রই দেখাচ্ছে, মহামারি-পরবর্তী স্বল্পস্থায়ী উচ্ছ্বাসের পর চীনের হোমস্টে খাত এখন গভীর সংকটে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















