দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। ধারাবাহিক সহিংসতা, ধর্মীয় উগ্রতা এবং সংঘর্ষ দেশের জনজীবনে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বীকার করেছেন, পরিস্থিতি এখন কিছুটা অবনতির দিকে যাচ্ছে।
গোয়ালন্দে সংগঠিত সহিংসতা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি এখন আর নিছক কবরস্থান-সংক্রান্ত কোনো বিরোধ নয়, বরং একটি পরিকল্পিত মব ভায়োলেন্স হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, একটি সংগঠিত দল পরিকল্পিতভাবে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয় এবং সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করে। এ সময় সংঘর্ষে ২ জন নিহত এবং অন্তত ডজনখানেক মানুষ আহত হন।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গোয়ালন্দে যে ঘটনা ঘটেছে তা একটি পরিকল্পিত সহিংসতা। সরকার এ ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।”

হাটহাজারীতে সংঘর্ষ ও ১৪৪ ধারা
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গত রাতে মাদরাসার ছাত্রদের সঙ্গে ধর্মীয় অনুসারীদের সংঘর্ষ ঘটে। এই সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করলেও সহিংসতা থামানো যায়নি। সংঘর্ষে ৩ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে কড়াকড়ি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামবাসীদের সংঘর্ষে ক্যাম্পাসে অশান্তি বিরাজ করছে। দফায় দফায় সংঘর্ষের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ করছে তারা।
সরকারের উদ্বেগ
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত করছে, সমাজে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।” তিনি স্বীকার করেন, “বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্পষ্টভাবেই কিছুটা অবনতি ঘটেছে। ”

সার্বিক চিত্র
গোয়ালন্দের সংগঠিত সহিংসতা, হাটহাজারীতে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিরতা—সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন এক গভীর সংকটের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে অস্থিরতা বাড়তে থাকলে শুধু সাধারণ মানুষের জীবন নয়, দেশের বিনিয়োগ ও সামগ্রিক অর্থনীতিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















