তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলন ও নেতাদের সাক্ষাৎ
চীনের তিয়ানজিনে ২০২৫ সালের সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। এই সাক্ষাৎ-এর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কড়া মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের হতাশা ও মন্তব্য
শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ভারত ও রাশিয়া যেন চীনের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত হয়ে গেছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “মনে হচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে হারিয়ে ফেলেছি গভীরতম, অন্ধকারতম চীনের কাছে। তাদের দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ কামনা করি।”

তবে পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন না যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে হারিয়েছে। তিনি ভারতকে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কেনার জন্য সমালোচনা করেন এবং জানান, এ বিষয়ে তিনি মোদিকে জানিয়েছেন।
ভারত, চীন ও রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকেও কারো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সম্মেলনে পুতিন ও মোদিকে হাত ধরাধরি করে শি জিনপিংয়ের দিকে যেতে দেখা যায় এবং পরে তিনজন পাশাপাশি দাঁড়ান।

ট্রাম্প-মোদির সম্পর্ক
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সব সময় মোদির বন্ধু থাকব। তিনি একজন মহান প্রধানমন্ত্রী। তবে এই মুহূর্তে যা করছেন, সেটি আমার ভালো লাগেনি। তবে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক বিশেষ, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। মাঝেমধ্যে এমন মুহূর্ত আসে।”
এরপর মোদি এক্স-প্ল্যাটফর্মে লেখেন, তিনি ট্রাম্পের ইতিবাচক মন্তব্যকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করছেন। তিনি জানান, ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক একটি ইতিবাচক ও অগ্রসরমান ‘কমপ্রিহেনসিভ অ্যান্ড গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক ও বৃহত্তর প্রেক্ষাপট
ট্রাম্পের আমলে বাণিজ্য ও অন্যান্য ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। তবে মোদি সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে নিতে চাইছেন।
রাশিয়া-চীন ঘনিষ্ঠতা নিয়েও ট্রাম্প হতাশা প্রকাশ করেছেন, যদিও তিনি বলেছেন এতে তার উদ্বেগ নেই। একই সঙ্গে তিনি পুতিনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি হতাশ। ট্রাম্প জানান, শীঘ্রই পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে।
এসসিও সম্মেলনে তিন শক্তিশালী নেতার সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের মন্তব্য তার অস্বস্তি প্রকাশ করেছে, তবে একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্কের বিশেষত্বও জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 




















