০৬:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রহস্যময় ‘ডার্ক ডিএনএ’ আর নাচের মাকড়সার বৈচিত্র্যের গোপন রহস্য নতুন প্রজন্মের তারকা সোম্বর: ভক্তদের ভালোবাসায় ভর করে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী পাঠানোর সম্ভাবনা: আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু গাজা শহরে আশ্রয়ের অভাবে মানুষ: বোমার ঝুঁকিতে সবাই প্যারামাউন্টের নতুন চিফ প্রোডাক্ট অফিসার মেটার শীর্ষ নির্বাহী ডেন গ্লাসগো এক রাতের সহিংসতার পর আলোচনার ভরসা সামরিক বাহিনী চায়নার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অঙ্গীকার: বৈদেশিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা আনতে পূর্ণ সহায়তা জেন জে-এর চাকরিগুলো এ আই নিয়ে নেবে নিউইয়র্কের খাদ্য বর্জ্য থেকে ‘কালো সোনা’ তৈরির গল্প ভারতীয় প্রবাসীরা দুবাই থেকে ফিরলে স্বর্ণ আনার নিয়ম ও শুল্ক হার

সিআইএফটিসে এআই গাইড ও প্রযুক্তিভিত্তিক প্রত্নতত্ত্ব

সাংস্কৃতিক উদ্ভাবনের নতুন দিগন্ত

২০২৫ সালের চায়না ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার ফর ট্রেড ইন সার্ভিসেস (CIFTIS) চলছে বেইজিংয়ের শোগাং পার্কে। সেখানে ৫০০-রও বেশি সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদসহ নানা ঐতিহাসিক স্থাপনা-ভিত্তিক সামগ্রী। পাশাপাশি একেবারে নতুন ২০টি পণ্যের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। প্রদর্শনীর অন্যতম আকর্ষণ এআই এবং মিক্সড রিয়ালিটি (MR)-ভিত্তিক অভিজ্ঞতা, যা দেখাচ্ছে কিভাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক খাতকে নতুনভাবে গড়ে তুলছে।


এআই-চালিত ডিজিটাল গাইড

এবারের বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে এআই-ভিত্তিক ডিজিটাল পার্ক গাইড।
আইকেশেং ডিজিটাল কালচারাল (বেইজিং) কোং লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট চেন ঝেনফং জানান, বেইজিং প্রাচীন স্থাপত্য জাদুঘরে এই গাইড ব্যবহার করলে দর্শনার্থীরা ব্লুটুথের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ব্যাখ্যা পাবেন। শুধু শব্দ ও লেখাই নয়, এতে রয়েছে ভিডিও ফিচার, যা বিশেষত তরুণদের কাছে আকর্ষণীয়।

প্রচলিত অডিও গাইডের তুলনায় এই এআই ডিজিটাল গাইড অনেক বেশি কার্যকর। এতে রয়েছে ৯৮% এর বেশি সঠিকতা, তাৎক্ষণিক বহু-ভাষা পরিবর্তনের সুবিধা এবং প্রশ্নোত্তরের ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্যবস্থা। এমনকি জাদুঘর থেকে বের হওয়ার পরও দর্শনার্থীরা তিন দিন পর্যন্ত মোবাইল সংযোগের মাধ্যমে এই তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন।

কোম্পানিটি ইতোমধ্যে সারা দেশের ১০০-রও বেশি জাদুঘরের সঙ্গে কাজ করছে এবং এআই গাইড ব্যবহারের শিল্পমান নির্ধারণে ভূমিকা রাখছে। এছাড়া “ট্রেসিং সিভিলাইজেশন” নামে একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তরুণদের চীনা ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার সুযোগ দিচ্ছে।


প্রযুক্তিভিত্তিক প্রত্নতত্ত্ব

বেইজিং মিউনিসিপাল কালচারাল হেরিটেজ ব্যুরোর উদ্যোগে সাংস্কৃতিক নিদর্শন সংরক্ষণ বিভাগেও প্রযুক্তির প্রয়োগ চোখে পড়েছে। এখানে উচ্চ রেজোলিউশনের 3D মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে দর্শনার্থীরা মাটির পাত্র, বীজ ও অস্থির ক্ষুদ্র নমুনা ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে পেরেছেন। প্রদর্শিত নিদর্শনের মধ্যে ছিল লিউলিহে প্রত্নস্থল থেকে পাওয়া মৃৎপাত্র, মিং ও চিং রাজবংশের চীনামাটির ভাঙা টুকরা, হান যুগের মুদ্রা এবং প্রাচীন মাটির নমুনা।

বেইজিং প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওয়াং শুইইউন জানান, প্রচলিত খননের বাইরে প্রযুক্তি-নির্ভর বিশ্লেষণ আমাদের নিদর্শনের আকৃতি, গঠন ও কারিগরি বুঝতে সাহায্য করছে। এর মাধ্যমে প্রাচীন উৎপাদন কৌশল ও দৈনন্দিন জীবনের নানা দিক পুনর্গঠন সম্ভব হচ্ছে। একইসাথে দর্শনার্থীরা ডিজিটাল উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রত্নতত্ত্বকে আরও স্পষ্ট ও আকর্ষণীয়ভাবে জানতে পারছেন।


নতুন সাংস্কৃতিক পণ্যের আত্মপ্রকাশ

এবারের মেলায় একাধিক নতুন সাংস্কৃতিক পণ্যের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদের সেভেন্টিন আর্চ ব্রিজের ছবি যুক্ত ফ্রিজম্যাগনেট, বেইজিং চিড়িয়াখানার এআই-সক্ষম নরম খেলনা যা কথা বলতে পারে এবং প্রাণীদের অভ্যাস সম্পর্কে জানায়।

এছাড়া লুক্সিয়ান কাউন্টি প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ পার্ক থেকে প্রাচীন মুদ্রার ‘ব্লাইন্ডবক্স’ এবং হান যুগের স্বর্ণালঙ্কার দ্বারা অনুপ্রাণিত বুকমার্কও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করেছে। এগুলো দর্শকদের ২ হাজার বছর আগের জীবন ও কারুশিল্পের স্বাদ দিয়েছে।


উদ্ভাবনী অভিজ্ঞতা ও সাংস্কৃতিক কর্মশালা

সাংস্কৃতিক পণ্য ছাড়াও, বেইজিংয়ের বিভিন্ন পার্ক প্রদর্শনীতে সরাসরি অভিজ্ঞতার সুযোগ এনেছে। বৃহস্পতিবার ঝংশান পার্ক আয়োজন করে সঙ যুগের কাপড় বুনন কর্মশালা। শুক্রবার লুক্সিয়ান কাউন্টি প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ পার্ক দর্শকদের সোনার পাত দিয়ে প্রতিরূপ তৈরির কার্যক্রমে আমন্ত্রণ জানাবে।

বেইজিং পার্ক ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের এক প্রতিনিধি বলেন, পার্কগুলো শুধু সবুজ এলাকা নয়, বরং সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্মও বটে। প্রত্নতাত্ত্বিক অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে সৃজনশীল কর্মশালা—সবই শহরের পর্যটনকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলছে।


রহস্যময় ‘ডার্ক ডিএনএ’ আর নাচের মাকড়সার বৈচিত্র্যের গোপন রহস্য

সিআইএফটিসে এআই গাইড ও প্রযুক্তিভিত্তিক প্রত্নতত্ত্ব

০৩:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাংস্কৃতিক উদ্ভাবনের নতুন দিগন্ত

২০২৫ সালের চায়না ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার ফর ট্রেড ইন সার্ভিসেস (CIFTIS) চলছে বেইজিংয়ের শোগাং পার্কে। সেখানে ৫০০-রও বেশি সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদসহ নানা ঐতিহাসিক স্থাপনা-ভিত্তিক সামগ্রী। পাশাপাশি একেবারে নতুন ২০টি পণ্যের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। প্রদর্শনীর অন্যতম আকর্ষণ এআই এবং মিক্সড রিয়ালিটি (MR)-ভিত্তিক অভিজ্ঞতা, যা দেখাচ্ছে কিভাবে প্রযুক্তি সাংস্কৃতিক খাতকে নতুনভাবে গড়ে তুলছে।


এআই-চালিত ডিজিটাল গাইড

এবারের বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে এআই-ভিত্তিক ডিজিটাল পার্ক গাইড।
আইকেশেং ডিজিটাল কালচারাল (বেইজিং) কোং লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট চেন ঝেনফং জানান, বেইজিং প্রাচীন স্থাপত্য জাদুঘরে এই গাইড ব্যবহার করলে দর্শনার্থীরা ব্লুটুথের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ব্যাখ্যা পাবেন। শুধু শব্দ ও লেখাই নয়, এতে রয়েছে ভিডিও ফিচার, যা বিশেষত তরুণদের কাছে আকর্ষণীয়।

প্রচলিত অডিও গাইডের তুলনায় এই এআই ডিজিটাল গাইড অনেক বেশি কার্যকর। এতে রয়েছে ৯৮% এর বেশি সঠিকতা, তাৎক্ষণিক বহু-ভাষা পরিবর্তনের সুবিধা এবং প্রশ্নোত্তরের ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্যবস্থা। এমনকি জাদুঘর থেকে বের হওয়ার পরও দর্শনার্থীরা তিন দিন পর্যন্ত মোবাইল সংযোগের মাধ্যমে এই তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন।

কোম্পানিটি ইতোমধ্যে সারা দেশের ১০০-রও বেশি জাদুঘরের সঙ্গে কাজ করছে এবং এআই গাইড ব্যবহারের শিল্পমান নির্ধারণে ভূমিকা রাখছে। এছাড়া “ট্রেসিং সিভিলাইজেশন” নামে একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তরুণদের চীনা ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার সুযোগ দিচ্ছে।


প্রযুক্তিভিত্তিক প্রত্নতত্ত্ব

বেইজিং মিউনিসিপাল কালচারাল হেরিটেজ ব্যুরোর উদ্যোগে সাংস্কৃতিক নিদর্শন সংরক্ষণ বিভাগেও প্রযুক্তির প্রয়োগ চোখে পড়েছে। এখানে উচ্চ রেজোলিউশনের 3D মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে দর্শনার্থীরা মাটির পাত্র, বীজ ও অস্থির ক্ষুদ্র নমুনা ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে পেরেছেন। প্রদর্শিত নিদর্শনের মধ্যে ছিল লিউলিহে প্রত্নস্থল থেকে পাওয়া মৃৎপাত্র, মিং ও চিং রাজবংশের চীনামাটির ভাঙা টুকরা, হান যুগের মুদ্রা এবং প্রাচীন মাটির নমুনা।

বেইজিং প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওয়াং শুইইউন জানান, প্রচলিত খননের বাইরে প্রযুক্তি-নির্ভর বিশ্লেষণ আমাদের নিদর্শনের আকৃতি, গঠন ও কারিগরি বুঝতে সাহায্য করছে। এর মাধ্যমে প্রাচীন উৎপাদন কৌশল ও দৈনন্দিন জীবনের নানা দিক পুনর্গঠন সম্ভব হচ্ছে। একইসাথে দর্শনার্থীরা ডিজিটাল উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রত্নতত্ত্বকে আরও স্পষ্ট ও আকর্ষণীয়ভাবে জানতে পারছেন।


নতুন সাংস্কৃতিক পণ্যের আত্মপ্রকাশ

এবারের মেলায় একাধিক নতুন সাংস্কৃতিক পণ্যের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদের সেভেন্টিন আর্চ ব্রিজের ছবি যুক্ত ফ্রিজম্যাগনেট, বেইজিং চিড়িয়াখানার এআই-সক্ষম নরম খেলনা যা কথা বলতে পারে এবং প্রাণীদের অভ্যাস সম্পর্কে জানায়।

এছাড়া লুক্সিয়ান কাউন্টি প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ পার্ক থেকে প্রাচীন মুদ্রার ‘ব্লাইন্ডবক্স’ এবং হান যুগের স্বর্ণালঙ্কার দ্বারা অনুপ্রাণিত বুকমার্কও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করেছে। এগুলো দর্শকদের ২ হাজার বছর আগের জীবন ও কারুশিল্পের স্বাদ দিয়েছে।


উদ্ভাবনী অভিজ্ঞতা ও সাংস্কৃতিক কর্মশালা

সাংস্কৃতিক পণ্য ছাড়াও, বেইজিংয়ের বিভিন্ন পার্ক প্রদর্শনীতে সরাসরি অভিজ্ঞতার সুযোগ এনেছে। বৃহস্পতিবার ঝংশান পার্ক আয়োজন করে সঙ যুগের কাপড় বুনন কর্মশালা। শুক্রবার লুক্সিয়ান কাউন্টি প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ পার্ক দর্শকদের সোনার পাত দিয়ে প্রতিরূপ তৈরির কার্যক্রমে আমন্ত্রণ জানাবে।

বেইজিং পার্ক ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের এক প্রতিনিধি বলেন, পার্কগুলো শুধু সবুজ এলাকা নয়, বরং সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্মও বটে। প্রত্নতাত্ত্বিক অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে সৃজনশীল কর্মশালা—সবই শহরের পর্যটনকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলছে।