সমকালের একটি শিরোনাম “মালয়েশিয়ায় পাচারের সময় নারী-শিশুসহ ৬৬ জন উদ্ধার”
কক্সবাজারের টেকনাফে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশে জড়ো করা ৬৬ জনকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। তাদের মধ্যে ৪৪ জনই নারী ও শিশু। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চালানো অভিযানে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া এলাকার গহিন পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
কোস্টগার্ড জানায়, উদ্ধার হওয়া ৬৬ জনের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা নাগরিক। সংঘবদ্ধ একটি দালাল চক্রের সহায়তায় পাচারকারীরা তাদের গহীন পাহাড়ের ভেতরে একটি আস্তানায় জড়ো করে। তাদের মধ্যে কাউকে মালয়েশিয়ায় উন্নত জীবনযাপনের প্রলোভন, আবার কাউকে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়। অপহরণ করে নিয়ে আসা ব্যক্তিদের সেখানে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা চলছিল। গোপনে খবর পেয়ে ওই আস্তানায় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৬৬ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও পাচারকারী দলের ১৫ থেকে ২০ জন পালিয়ে যায়।
কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, পাচারকারী দলের সদস্যদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া ৬৬ জনের পরিচয় যাচাই-বাছাই করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় টেকনাফ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তবে আজ শুক্রবার দুপুরে কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশন কার্যালয়ে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে তুলে ধরা হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত টেকনাফে ৬২ মানব পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং উদ্ধার করা হয়েছে ৭৭ জনকে। শীত মৌসুমে মানব পাচারের ঘটনা বেশি ঘটে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: গণভোটের সময়-প্রশ্ন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ”
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সাংবিধানিক আদেশে বাস্তবায়ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, যার বৈধতা দিতে জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট করার মতামত তাঁদের। বিএনপি বলছে, গণভোট হতে পারে; তবে তা হতে হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর। কিন্তু জায়ামাতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ অন্য কয়েকটি দলের মত হলো, গণভোট করতে চাইলে আগে করাই ভালো। সেটা সম্ভব না হলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শমতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটের আয়োজন করা হোক। এ ছাড়া কোন প্রশ্নে কীভাবে গণভোট হবে, তা নিয়েও দলগুলোর অবস্থানে এখনো ফারাক রয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গত বুধবারের সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সনদের সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নে মত দিয়েছে বিশেষজ্ঞ প্যানেল। তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার সনদের মূল সংস্কারগুলো অন্তর্ভুক্ত করে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে একটি ‘সাংবিধানিক আদেশ’ (কনস্টিটিউশনাল অর্ডার) জারি করতে পারে। এ আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। এতে গণভোটের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট হবে। জনগণের সমর্থন পেলে তা জারির তারিখ থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।
বুধবার একাধিক রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, সনদের ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। কিন্তু গণভোট হলে কয়টি প্রশ্ন থাকবে, তা পরিষ্কার নয়। আবার এটি সময়সাপেক্ষও। গণভোটে নেতিবাচক ফল আসার আশঙ্কাও করেন কেউ কেউ। বিএনপিসহ তার সমমনা দলগুলো সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে সাংবিধানিক বিষয়গুলো সমাধানের পরামর্শ দেয়।
কোন প্রশ্নে গণভোট হবে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়নি বলে প্যানেলের একাধিক বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯ দফার পক্ষে সমর্থন আছে কি না, সে বিষয়ে গণভোট করেছিলেন। সেখানে ১৯ দফার সব উল্লেখ ছিল না। একইভাবে ১৯৮৫ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও একইভাবে গণভোট করেছিলেন। কিন্তু এবার অনেক বিষয় থাকলেও সেগুলো নিয়ে নানান আলোচনার মাধ্যমে জনগণ জানতে ও বুঝতে পারছেন বলে মনে করেন ওই বিশেষজ্ঞ। জুলাই সনদকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেব কি দেব না—এ প্রশ্নে গণভোট নেওয়া যেতে পারে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “বেড়েছে মাছ, সবজি মুরগি ও ডিমের দাম”
চাল-ডালের দাম স্থিতিশীল থাকলেও রাজধানীর বাজারে বেড়েছে মাছ, সবজি, মুরগি ও ডিমের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত। অধিকাংশ সবজির দাম কেজিপ্রতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় হাতেগোনা কয়েকটি সবজির দাম ১০ টাকা পর্যন্ত কমলেও বেড়ছে অধিকাংশ সবজির দাম। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১০ টাকা ও ডিম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে। সরবরাহ কম থাকায় মাছ ও সবজির দাম বেড়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের। অনেক পণ্যের দাম বাড়লেও বিক্রি কম হওয়ায় বাজার নিয়ে অসন্তুষ্ট তারা।
গতকাল রাজধানী প্রধান পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনটা দেখা গেছে। তবে রামপুরা, হাতিরপুলসহ রাজধানীর অন্যান্য বাজারের সঙ্গে কারওয়ান বাজারের দামের পার্থক্য রয়েছে। রাজধানীর বড় পাইকারি বাজার হওয়ায় এ বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা কম থাকে।
কারওয়ান বাজারে মাছের দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রকারভেদে মাছের দাম বেড়েছে ৩০-৫০ টাকা পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে চিংড়ির। গত সপ্তাহে বড় সাইজের বাগদা প্রতি কেজি ৮৩০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয় ৯০০ টাকায়। এছাড়া গলদা চিংড়ি ৮৫০ ও ছোট চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে ওজনভেদে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ৬০০ ও এক কেজির কিছুটা কম ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া বড় রুই ৫০০ টাকা, মাঝারি ৪৬০ ও ছোট রুই বিক্রি হয় ৩৬০ টাকা কেজি দরে। কাতল মাছ ৩৬০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। গত সপ্তাহে বড় সাইজের কাতলের দাম ছিল ৩৮০ টাকা। ছোট কোরাল মাছ ৭০০-৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০, সিলভার কার্প ২৫০, পাবদা ৪০০, রূপচাঁদা ৮৫০ ও টেংরা ৮০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
মানবজমিনের একটি শিরোন “বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ১১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো”
গত জুনে মাসে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে বিদেশি ঋণ বেড়ে ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ২১৫ কোটি ডলার হয়েছে। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এতে দেশের ইতিহাসে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ আবারও নতুন রেকর্ড গড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান বৈদেশিক ঋণের মধ্যে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলারই বেড়েছে গত সাড়ে ১৫ বছরে, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে। এই সময়ে সরকার আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ব্যাপক হারে ঋণ গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে, বেসরকারি উদ্যোক্তারাও বিদেশি উৎস থেকে কম সুদের ঋণে ঝুঁকেছেন।
গত কয়েকবছর ধরে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি থাকায় দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়। বিদায়ী সরকারের সময়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি ঋণ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও রিজার্ভের পতন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে। প্রবাসী আয় বেড়েছে, পাশাপাশি বিদেশি ঋণের প্রবাহ চালু থাকায় ডলারের বিনিময় হারেও স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জুন মাস (অর্থবছর) শেষে সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ১১২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ২১৬ কোটি ডলার। এই অর্থ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকার সমান (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত মার্চ মাসে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ১০৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। সেই হিসেবে গত তিন মাসের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৭৩৬ কোটি ডলার। আর ছয় মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৮৪৩ কোটি ডলার; গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ছিল ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি ডলার।
২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত ১০ বছরে এই ঋণ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণের মাইলফলক অতিক্রম করে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখ। সেই হিসেবে, মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ এখন দাঁড়িয়েছে ৬৩৮ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৭৭ হাজার ৪৩৩ টাকা। ১০ বছর আগে এই পরিমাণ ছিল মাত্র ২৫৭ ডলারের কিছু বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে রয়েছে ৮২ শতাংশ, আর বেসরকারি খাতে রয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুন শেষে সরকারি খাতের ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৩৭ কোটি ডলার, যা মার্চে ছিল ৮ হাজার ৪৯২ কোটি ডলার। অর্থাৎ তিন মাসে সরকারি ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অন্যদিকে, বেসরকারি খাতের ঋণ জুন শেষে ছিল ১ হাজার ৯৭ কোটি ডলার, যা মার্চে ছিল ১ হাজার ৯৮ কোটি ডলার।