০৬:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
‘সুগার কিউব’ থেকে ইউরোপীয় আধুনিকতা: আশির দশকের পার্টি হাউসের রূপান্তর নওগাঁ সীমান্তে বিএসএফের পুশইন: ১৬ জন আটক উইন্ডসরের প্রাসাদে মেলানিয়া ট্রাম্পের রহস্যময় সাজ আফগান বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ করল তালেবান জাপানের আনন্দময় “সাকে ট্রেন”-এ এক যাত্রা সফটব্যাংক ভিশন ফান্ডে বড় ধরনের ছাঁটাই। লক্ষ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৌদি- পাকিস্তান সামরিক প্যাক্ট ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব এশিয়ার বিলিয়ন-ডলারের মুনকেক বাজারে নতুন ধারা: দুবাই চকলেট ও পিস্তাচিওর ছোঁয়া শিম্পাঞ্জিদের খাদ্যে অ্যালকোহলের উপস্থিতি ১৯৮৮ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের উত্তরাধিকার আজও মিয়ানমার

পেরুর মরুভূমি থেকে আবিষ্কৃত নতুন নগরী: আমেরিকার ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হচ্ছে

প্রাচীন নগরী পেনিকোর উন্মোচন

পেরুর সুপে ভ্যালির মরুভূমির ঢালে প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে পেয়েছেন ৩ হাজার ৮০০ বছর আগের এক নগরী। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে প্রত্নতত্ত্ববিদ রুথ শ্যাডি উন্মোচন করেন ‘পেনিকো’ নগরীকে, যা কারাল সভ্যতার অংশ। এখানে ১৮টি স্থাপনা মিলেছে, যার মধ্যে রয়েছে আনুষ্ঠানিক মন্দির ও আবাসিক ভবন। সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হলো – এই নগরীর মানুষরা জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলা করেছিল শান্তিপূর্ণভাবে, যুদ্ধ ছাড়াই।

শ্যাডি বললেন, “পেনিকো কারাল সভ্যতার সেই দর্শনেরই ধারাবাহিকতা, যেখানে সংঘাতহীন জীবনের চর্চা ছিল।”

আমেরিকার শান্তিপূর্ণ সভ্যতার শেকড়

আজটেক, মায়া বা ইনকা সভ্যতার বহু আগে পেরুর উপকূলীয় শুষ্ক অঞ্চলে গড়ে ওঠে কারাল সভ্যতা। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে এটি গড়ে ওঠে, একই সময়ে যখন মেসোপটেমিয়া ও মিশরে প্রাচীন নগর সভ্যতা জন্ম নিচ্ছিল। তবে ভিন্নতা হলো—কারালে কোনো প্রতিরক্ষামূলক প্রাচীর ছিল না, পাওয়া যায়নি কোনো অস্ত্রের প্রমাণও।

গবেষণায় জানা গেছে, কারাল নগরীতে প্রায় ৩ হাজার মানুষ বাস করত। সুপে ভ্যালি প্রশান্ত মহাসাগর, আন্দিজ পর্বতশ্রেণীর উর্বর উপত্যকা ও দূরবর্তী অ্যামাজনের সঙ্গে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। তারা তুলা, মিষ্টি আলু, কুমড়া, মরিচ ও ফল ফলাতো, আর পর্বত থেকে খনিজ ও আমাজন থেকে বাঁদর ও মাকাও পাখি পেত পোষা প্রাণী হিসেবে। উপকূলে তারা মাছ, শামুক ও সামুদ্রিক শৈবাল সংগ্রহ করত।

ভ্রমণ নির্দেশিকা: কারাল ও পেনিকো

কারাল প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশমূল্যে সাইট মিউজিয়াম ও কাছাকাছি অন্যান্য স্থান ভ্রমণ অন্তর্ভুক্ত। পেনিকো কারাল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে। উভয় সাইটে স্থানীয় প্রশিক্ষিত গাইডরা ভ্রমণকারীদের রাজনীতি, ধর্ম, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও কৃষি বিষয়ে সমৃদ্ধ তথ্য দেন।

শ্যাডির ভাষায়, “তারা জঙ্গল, পর্বত ও দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল।” যা আজটেক, মায়া বা ইনকার যুদ্ধকেন্দ্রিক সংস্কৃতির বিপরীতে এক অনন্য উদাহরণ।

শিল্পকলা ও স্থাপত্যের উৎকর্ষ

কারালের স্থাপত্য ভূমিকম্প-সহনশীল ছিল। অ্যাম্ফিথিয়েটার এমনভাবে নকশা করা হয়েছিল যে শক্তিশালী ভূমিকম্পও টিকতে পারত। এখানে পাওয়া গেছে ৩২টি বাঁশি, কিছু পেলিক্যানের হাড় দিয়ে তৈরি, আবার কিছু বানর ও কনডরের নকশায় অলঙ্কৃত। এসব প্রমাণ করে তারা দীর্ঘ দূরত্বে বাণিজ্য করত এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল।

জলবায়ু পরিবর্তন ও পতন

প্রায় ৪ হাজার বছর আগে দীর্ঘ ১৩০ বছরের খরায় ফসল নষ্ট হয়, নদী শুকিয়ে যায় এবং দুর্ভিক্ষে সভ্যতা ভেঙে পড়ে। কারালের নগরকেন্দ্রগুলো মরুভূমিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তবে গবেষকরা ভেবেছিলেন মানুষ উপকূলে চলে যায়। কিন্তু পেনিকোর আবিষ্কার জানাল অন্য গল্প।

অভিযোজনের গল্প: পেনিকো

কারাল থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০ মিটার উঁচুতে গড়ে ওঠে পেনিকো। এখানে হিমবাহ থেকে আসা পানির কাছে বসতি স্থাপন করে তারা টিকে থাকতে সক্ষম হয়। উল্লেখযোগ্য হলো—দুর্ভিক্ষ ও সঙ্কটকালেও তারা যুদ্ধ বা দুর্গ নির্মাণে যায়নি।

এখানে পাওয়া গেছে সূক্ষ্ম মাটির পুতুল, নকশা করা গহনা, খোদাই করা হাড় ও রঙিন ভাস্কর্য। এক নারীর মাথার ভাস্কর্যে জটিল চুলের সাজ আর লাল রঙে রঞ্জিত মুখ দেখা গেছে। এগুলো প্রমাণ করে সাংস্কৃতিক পরিচয় ও সামাজিক ঐক্য ধরে রাখতে তারা শিল্প ও আচার-অনুষ্ঠানে মনোযোগী ছিল।

প্রাক-ইনকা ইতিহাসের আরো নিদর্শন

পেরুর উপকূলজুড়ে নানা প্রাচীন সভ্যতার স্মৃতি এখনো রয়েছে। উত্তরে চান চান নগরী, লিমায় হুয়াকা পুক্ল্লানা ও পচাকামাক, দক্ষিণে বিখ্যাত নাজকা রেখাচিত্র এসব ইতিহাসের অংশ।

পর্যটকদের জন্য সুযোগ

পেনিকোতে ইতোমধ্যে ভিজিটর সেন্টার চালু হয়েছে, যা গোলাকার নকশায় নির্মিত, কারাল ও পেনিকোর কেন্দ্রীয় প্লাজার প্রতিফলন। এখানে প্রশাসনিক কাঠামো ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, যা প্রাচীন গ্রীসের থেকেও ২ হাজার বছর আগে বিদ্যমান ছিল বলে ধারণা।

গাইড গ্যাসপার সিহুয়ে বলেন, “সুপে ভ্যালি মূল পর্যটন পথের বাইরে হওয়ায় এখানে ভ্রমণ ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা।” তবে শ্যাডি মনে করিয়ে দেন, “এখনো অনেক স্থাপনা মরুভূমির নিচে চাপা আছে, আমাদের শেখার অনেক কিছু বাকি।”

অতীত থেকে শিক্ষা

পেনিকোর প্লাজায় দাঁড়িয়ে বোঝা যায়, কীভাবে প্রাচীন মানুষরা সংকটকে যুদ্ধ নয়, অভিযোজনের মাধ্যমে মোকাবিলা করেছিল। পানির উৎসের কাছে সরে আসা, বাণিজ্য চালু রাখা এবং শিল্প-সংস্কৃতি ধরে রাখা ছিল তাদের টিকে থাকার কৌশল।

৩ হাজার ৮০০ বছর আগের সেই শিক্ষা আজও প্রমাণ করে, সহযোগিতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই মানবতার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে।

‘সুগার কিউব’ থেকে ইউরোপীয় আধুনিকতা: আশির দশকের পার্টি হাউসের রূপান্তর

পেরুর মরুভূমি থেকে আবিষ্কৃত নতুন নগরী: আমেরিকার ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হচ্ছে

০৩:৪৭:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রাচীন নগরী পেনিকোর উন্মোচন

পেরুর সুপে ভ্যালির মরুভূমির ঢালে প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে পেয়েছেন ৩ হাজার ৮০০ বছর আগের এক নগরী। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে প্রত্নতত্ত্ববিদ রুথ শ্যাডি উন্মোচন করেন ‘পেনিকো’ নগরীকে, যা কারাল সভ্যতার অংশ। এখানে ১৮টি স্থাপনা মিলেছে, যার মধ্যে রয়েছে আনুষ্ঠানিক মন্দির ও আবাসিক ভবন। সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হলো – এই নগরীর মানুষরা জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলা করেছিল শান্তিপূর্ণভাবে, যুদ্ধ ছাড়াই।

শ্যাডি বললেন, “পেনিকো কারাল সভ্যতার সেই দর্শনেরই ধারাবাহিকতা, যেখানে সংঘাতহীন জীবনের চর্চা ছিল।”

আমেরিকার শান্তিপূর্ণ সভ্যতার শেকড়

আজটেক, মায়া বা ইনকা সভ্যতার বহু আগে পেরুর উপকূলীয় শুষ্ক অঞ্চলে গড়ে ওঠে কারাল সভ্যতা। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে এটি গড়ে ওঠে, একই সময়ে যখন মেসোপটেমিয়া ও মিশরে প্রাচীন নগর সভ্যতা জন্ম নিচ্ছিল। তবে ভিন্নতা হলো—কারালে কোনো প্রতিরক্ষামূলক প্রাচীর ছিল না, পাওয়া যায়নি কোনো অস্ত্রের প্রমাণও।

গবেষণায় জানা গেছে, কারাল নগরীতে প্রায় ৩ হাজার মানুষ বাস করত। সুপে ভ্যালি প্রশান্ত মহাসাগর, আন্দিজ পর্বতশ্রেণীর উর্বর উপত্যকা ও দূরবর্তী অ্যামাজনের সঙ্গে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। তারা তুলা, মিষ্টি আলু, কুমড়া, মরিচ ও ফল ফলাতো, আর পর্বত থেকে খনিজ ও আমাজন থেকে বাঁদর ও মাকাও পাখি পেত পোষা প্রাণী হিসেবে। উপকূলে তারা মাছ, শামুক ও সামুদ্রিক শৈবাল সংগ্রহ করত।

ভ্রমণ নির্দেশিকা: কারাল ও পেনিকো

কারাল প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশমূল্যে সাইট মিউজিয়াম ও কাছাকাছি অন্যান্য স্থান ভ্রমণ অন্তর্ভুক্ত। পেনিকো কারাল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে। উভয় সাইটে স্থানীয় প্রশিক্ষিত গাইডরা ভ্রমণকারীদের রাজনীতি, ধর্ম, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও কৃষি বিষয়ে সমৃদ্ধ তথ্য দেন।

শ্যাডির ভাষায়, “তারা জঙ্গল, পর্বত ও দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল।” যা আজটেক, মায়া বা ইনকার যুদ্ধকেন্দ্রিক সংস্কৃতির বিপরীতে এক অনন্য উদাহরণ।

শিল্পকলা ও স্থাপত্যের উৎকর্ষ

কারালের স্থাপত্য ভূমিকম্প-সহনশীল ছিল। অ্যাম্ফিথিয়েটার এমনভাবে নকশা করা হয়েছিল যে শক্তিশালী ভূমিকম্পও টিকতে পারত। এখানে পাওয়া গেছে ৩২টি বাঁশি, কিছু পেলিক্যানের হাড় দিয়ে তৈরি, আবার কিছু বানর ও কনডরের নকশায় অলঙ্কৃত। এসব প্রমাণ করে তারা দীর্ঘ দূরত্বে বাণিজ্য করত এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল।

জলবায়ু পরিবর্তন ও পতন

প্রায় ৪ হাজার বছর আগে দীর্ঘ ১৩০ বছরের খরায় ফসল নষ্ট হয়, নদী শুকিয়ে যায় এবং দুর্ভিক্ষে সভ্যতা ভেঙে পড়ে। কারালের নগরকেন্দ্রগুলো মরুভূমিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। তবে গবেষকরা ভেবেছিলেন মানুষ উপকূলে চলে যায়। কিন্তু পেনিকোর আবিষ্কার জানাল অন্য গল্প।

অভিযোজনের গল্প: পেনিকো

কারাল থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০ মিটার উঁচুতে গড়ে ওঠে পেনিকো। এখানে হিমবাহ থেকে আসা পানির কাছে বসতি স্থাপন করে তারা টিকে থাকতে সক্ষম হয়। উল্লেখযোগ্য হলো—দুর্ভিক্ষ ও সঙ্কটকালেও তারা যুদ্ধ বা দুর্গ নির্মাণে যায়নি।

এখানে পাওয়া গেছে সূক্ষ্ম মাটির পুতুল, নকশা করা গহনা, খোদাই করা হাড় ও রঙিন ভাস্কর্য। এক নারীর মাথার ভাস্কর্যে জটিল চুলের সাজ আর লাল রঙে রঞ্জিত মুখ দেখা গেছে। এগুলো প্রমাণ করে সাংস্কৃতিক পরিচয় ও সামাজিক ঐক্য ধরে রাখতে তারা শিল্প ও আচার-অনুষ্ঠানে মনোযোগী ছিল।

প্রাক-ইনকা ইতিহাসের আরো নিদর্শন

পেরুর উপকূলজুড়ে নানা প্রাচীন সভ্যতার স্মৃতি এখনো রয়েছে। উত্তরে চান চান নগরী, লিমায় হুয়াকা পুক্ল্লানা ও পচাকামাক, দক্ষিণে বিখ্যাত নাজকা রেখাচিত্র এসব ইতিহাসের অংশ।

পর্যটকদের জন্য সুযোগ

পেনিকোতে ইতোমধ্যে ভিজিটর সেন্টার চালু হয়েছে, যা গোলাকার নকশায় নির্মিত, কারাল ও পেনিকোর কেন্দ্রীয় প্লাজার প্রতিফলন। এখানে প্রশাসনিক কাঠামো ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, যা প্রাচীন গ্রীসের থেকেও ২ হাজার বছর আগে বিদ্যমান ছিল বলে ধারণা।

গাইড গ্যাসপার সিহুয়ে বলেন, “সুপে ভ্যালি মূল পর্যটন পথের বাইরে হওয়ায় এখানে ভ্রমণ ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা।” তবে শ্যাডি মনে করিয়ে দেন, “এখনো অনেক স্থাপনা মরুভূমির নিচে চাপা আছে, আমাদের শেখার অনেক কিছু বাকি।”

অতীত থেকে শিক্ষা

পেনিকোর প্লাজায় দাঁড়িয়ে বোঝা যায়, কীভাবে প্রাচীন মানুষরা সংকটকে যুদ্ধ নয়, অভিযোজনের মাধ্যমে মোকাবিলা করেছিল। পানির উৎসের কাছে সরে আসা, বাণিজ্য চালু রাখা এবং শিল্প-সংস্কৃতি ধরে রাখা ছিল তাদের টিকে থাকার কৌশল।

৩ হাজার ৮০০ বছর আগের সেই শিক্ষা আজও প্রমাণ করে, সহযোগিতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই মানবতার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে।