০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রবার্ট রেডফোর্ড মৃত্যুকে যেমন দেখেছিলেন

শুটিং সেটে মৃত্যুচিন্তার মুখোমুখি

২০১৩ সালে নির্মিত ‘অল ইজ লস্ট’ ছবির শুটিং চলাকালে পরিচালক জে.সি. চ্যান্ডর হঠাৎ এমন এক পরিস্থিতিতে পড়েন যা আগে কল্পনাও করেননি। সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া একাকী মানুষের কাহিনি নিয়ে তৈরি ছবির গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যে অভিনেতা রবার্ট রেডফোর্ডকে চরিত্রের মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করাতে গিয়ে তিনি টের পান, আসলে রেডফোর্ডকে তিনি একেবারেই প্রস্তুত করেননি।
মেক্সিকোর বাজা স্টুডিওর বিশাল পানির ট্যাংকে লাইফ র‌্যাফটে বসে তিনি উপলব্ধি করেন—রেডফোর্ড বুঝতেই পারেননি যে এটি জীবনের শেষ সত্যের মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্য।

পরিচালক ও অভিনেতার আলাপ

বিরতির পর সাহস সঞ্চয় করে চ্যান্ডর রেডফোর্ডের ট্রেলারে যান। মুখোমুখি বসে ধীরে বলেন, “বব, আমাদের মৃত্যুর বিষয়ে কথা বলতে হবে।”
রেডফোর্ড অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন, “মৃত্যু?”
তারপর দু’জনের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা চলে—ঈশ্বরের অস্তিত্ব, জীবনের অর্থ, আক্ষেপ এবং শেষ নিঃশ্বাসের পর কী থাকে—এসব প্রশ্ন নিয়ে। যদিও দু’জনই কঠোর সহিষ্ণু পরিবেশে বড় হয়েছেন, তারা বুঝেছিলেন গল্পের গভীরে এই প্রশ্নগুলোই লুকিয়ে আছে।

রেডফোর্ডের জীবনদর্শন

রেডফোর্ড মৃত্যুকে ভয় পাননি। তাঁর কাছে জীবন ছিল এক মহৎ উপহার। প্রতিটি দিন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাঁচা ও লড়াই করা উচিত বলে তিনি বিশ্বাস করতেন।
পরিবার, কাজ, দাতব্য সংস্থা, বন্ধুবান্ধব, প্রাণী ও প্রকৃতি—এসবের জন্য তিনি সর্বস্ব দিয়েছেন। তাঁর কাছে মূল শিক্ষা ছিল—যদি ভালোবাসার জায়গাগুলোয় সবটুকু দেওয়া যায়, তবে মৃত্যুর ওপারে যাই থাকুক না কেন, তার মুখোমুখি হওয়া সহজ হয়ে যায়।

গল্পকারের উত্তরাধিকার

সেলিব্রিটি জীবনের চাপ রেডফোর্ড পছন্দ করতেন না, তবে জানতেন—মহৎ গল্প বলার ক্ষমতাই মানবতার জন্য সর্বজনীন সমতা আনতে পারে। তাই তিনি সারাজীবন গল্প বলায় নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন।
‘সানড্যান্স’ উৎসব ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তিনি হাজারো নতুন গল্পকারকে সুযোগ দিয়েছিলেন। তিনি চাননি কোনো উদ্যোগ ব্যর্থ হোক এবং তাঁর দৃঢ়তা এগুলোকে টিকিয়ে রেখেছিল। এটাই হয়ে উঠেছে তাঁর দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার।

রবার্ট রেডফোর্ড মৃত্যুকে যেমন দেখেছিলেন

১২:৩০:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শুটিং সেটে মৃত্যুচিন্তার মুখোমুখি

২০১৩ সালে নির্মিত ‘অল ইজ লস্ট’ ছবির শুটিং চলাকালে পরিচালক জে.সি. চ্যান্ডর হঠাৎ এমন এক পরিস্থিতিতে পড়েন যা আগে কল্পনাও করেননি। সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া একাকী মানুষের কাহিনি নিয়ে তৈরি ছবির গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যে অভিনেতা রবার্ট রেডফোর্ডকে চরিত্রের মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করাতে গিয়ে তিনি টের পান, আসলে রেডফোর্ডকে তিনি একেবারেই প্রস্তুত করেননি।
মেক্সিকোর বাজা স্টুডিওর বিশাল পানির ট্যাংকে লাইফ র‌্যাফটে বসে তিনি উপলব্ধি করেন—রেডফোর্ড বুঝতেই পারেননি যে এটি জীবনের শেষ সত্যের মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্য।

পরিচালক ও অভিনেতার আলাপ

বিরতির পর সাহস সঞ্চয় করে চ্যান্ডর রেডফোর্ডের ট্রেলারে যান। মুখোমুখি বসে ধীরে বলেন, “বব, আমাদের মৃত্যুর বিষয়ে কথা বলতে হবে।”
রেডফোর্ড অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন, “মৃত্যু?”
তারপর দু’জনের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা চলে—ঈশ্বরের অস্তিত্ব, জীবনের অর্থ, আক্ষেপ এবং শেষ নিঃশ্বাসের পর কী থাকে—এসব প্রশ্ন নিয়ে। যদিও দু’জনই কঠোর সহিষ্ণু পরিবেশে বড় হয়েছেন, তারা বুঝেছিলেন গল্পের গভীরে এই প্রশ্নগুলোই লুকিয়ে আছে।

রেডফোর্ডের জীবনদর্শন

রেডফোর্ড মৃত্যুকে ভয় পাননি। তাঁর কাছে জীবন ছিল এক মহৎ উপহার। প্রতিটি দিন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাঁচা ও লড়াই করা উচিত বলে তিনি বিশ্বাস করতেন।
পরিবার, কাজ, দাতব্য সংস্থা, বন্ধুবান্ধব, প্রাণী ও প্রকৃতি—এসবের জন্য তিনি সর্বস্ব দিয়েছেন। তাঁর কাছে মূল শিক্ষা ছিল—যদি ভালোবাসার জায়গাগুলোয় সবটুকু দেওয়া যায়, তবে মৃত্যুর ওপারে যাই থাকুক না কেন, তার মুখোমুখি হওয়া সহজ হয়ে যায়।

গল্পকারের উত্তরাধিকার

সেলিব্রিটি জীবনের চাপ রেডফোর্ড পছন্দ করতেন না, তবে জানতেন—মহৎ গল্প বলার ক্ষমতাই মানবতার জন্য সর্বজনীন সমতা আনতে পারে। তাই তিনি সারাজীবন গল্প বলায় নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন।
‘সানড্যান্স’ উৎসব ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তিনি হাজারো নতুন গল্পকারকে সুযোগ দিয়েছিলেন। তিনি চাননি কোনো উদ্যোগ ব্যর্থ হোক এবং তাঁর দৃঢ়তা এগুলোকে টিকিয়ে রেখেছিল। এটাই হয়ে উঠেছে তাঁর দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার।