০৪:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
ঝিনাইদহে ঘন কুয়াশায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস দুর্ঘটনা নিহত এক, আহত তিন রাজধানীর ১০ স্থানে একযোগে মিছিল, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ৮ আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি ছয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার ট্রাম্পের জন্য বলরুম বানাতে ভাঙা হচ্ছে হোয়াইট হাউজের ইস্ট উইং শরীর হঠাৎ অবশ হয়ে যাওয়া রোগ জিবিএস, লক্ষণ আর চিকিৎসা কী শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুন লাগার পর ২৭ ঘণ্টায় যা যা ঘটেছিল সন্তান লালনপালনে আসল বিষয় হারিয়ে ফেলছে ‘প্যারেন্টিং’ ট্রেন্ড এক পরিবারের তিন প্রজন্ম ও এক টয়োটা করোলার জীবনযাত্রা উৎপাদন থেকে কৃষি—কানাডার শিল্পখাতে ডিজিটাল রূপান্তরের ঢেউ টয়লেটে স্মার্টফোন ব্যবহার বাড়াচ্ছে হেমোরয়েডের ঝুঁকি

পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা: স্বীকৃতি যথেষ্ট নয়, দখলদারিত্ব শেষ না হলে জীবনে পরিবর্তন আসবে না

স্বীকৃতির প্রভাব নিয়ে সংশয়

রামাল্লাহর রাস্তায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ যখন জাতিসংঘ অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন, তখন শহরের স্ক্রিনগুলোতে এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছিল না। স্থানীয় যুবক জাইন আবদেল ওয়াহাবের মতে, এ স্বীকৃতি শুভ হলেও বাস্তবতায় কোনো পরিবর্তন আনবে না। তিনি বলেন, “যদি পুরো বিশ্বই স্বীকৃতি দেয়, তবুও আমাদের অবস্থা বদলাবে না। গাজার যুদ্ধ দুই বছর ধরে চলছে। এই স্বীকৃতি কি যুদ্ধ থামাবে? না, যুদ্ধ চলতেই থাকবে।”

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

রামাল্লাহর বাজারে কাজ করা ৩৭ বছর বয়সী রাশা বলেন, পশ্চিমাদের এ পদক্ষেপ নিয়ে তিনি কোনো গুরুত্ব দেন না। তার মতে, “এটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোনো পরিবর্তন আনছে না।” তিনি আরও বলেন, এখন জেনিনে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ সেখানে বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বেড়েছে এবং অনেকগুলো নতুন চেকপয়েন্ট তৈরি হয়েছে।

নেতানিয়াহুর ঘোষণা

ব্রিটেন, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া যখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিল, তখনই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু পশ্চিম তীরে আরও বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা দেন এবং বলেন, কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কখনও থাকবে না। এদিকে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। দুই বছরের যুদ্ধে এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত এবং দুর্ভিক্ষে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ।

তরুণদের প্রত্যাশা

১৮ বছর বয়সী ইব্রাহিম সালাম আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা এ স্বীকৃতিতে খুশি, তবে চাই যে যারা স্বীকৃতি দিয়েছে তারা যেন বাস্তবে পদক্ষেপ নেয়। পশ্চিম তীরে পরিস্থিতির উন্নতি, গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং শিশুদের দুর্ভিক্ষ দূর করা জরুরি।”

মিশ্র প্রতিক্রিয়া

রামাল্লাহর এক ক্যাফেতে কিছু মানুষ ম্যাক্রঁর বক্তব্য শুনে হাততালি দিয়েছেন। ৬৩ বছরের আবু এলিয়াস বলেন, তিনি আশাবাদী হলেও দ্রুত পরিবর্তনের আশা করছেন না। তার ভাষায়, “চাঁদে এক দিনে যাওয়া যায় না। ৮০ বছর ধরে কিছু হয়নি, এখন মনে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের জন্য কিছু ভালো হতে পারে।”

বিভ্রান্ত তরুণ প্রজন্ম

২৫ বছরের স্থাপত্য শিক্ষার্থী বিসান বলেন, তিনি বুঝতে পারছেন না এই স্বীকৃতির মানে কী। “আমি জানি না ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কী হবে। ইউরোপীয় দেশগুলো স্বীকৃতি দিয়ে কী বোঝাতে চাইছে তাও পরিষ্কার নয়। তবে আমার বাবা-মায়ের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে তারা মনে করেন কেউ অন্তত আমাদের ব্যাপারে ভাবছে।”

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া নিঃসন্দেহে একটি কূটনৈতিক অর্জন। তবে পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিরা মনে করেন, যুদ্ধ, চেকপয়েন্ট, বসতি সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক সংকট বন্ধ না হলে তাদের জীবনে এই স্বীকৃতি বাস্তব কোনো পরিবর্তন আনবে না

জনপ্রিয় সংবাদ

ঝিনাইদহে ঘন কুয়াশায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস দুর্ঘটনা নিহত এক, আহত তিন

পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা: স্বীকৃতি যথেষ্ট নয়, দখলদারিত্ব শেষ না হলে জীবনে পরিবর্তন আসবে না

০২:০৭:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্বীকৃতির প্রভাব নিয়ে সংশয়

রামাল্লাহর রাস্তায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ যখন জাতিসংঘ অধিবেশনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন, তখন শহরের স্ক্রিনগুলোতে এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছিল না। স্থানীয় যুবক জাইন আবদেল ওয়াহাবের মতে, এ স্বীকৃতি শুভ হলেও বাস্তবতায় কোনো পরিবর্তন আনবে না। তিনি বলেন, “যদি পুরো বিশ্বই স্বীকৃতি দেয়, তবুও আমাদের অবস্থা বদলাবে না। গাজার যুদ্ধ দুই বছর ধরে চলছে। এই স্বীকৃতি কি যুদ্ধ থামাবে? না, যুদ্ধ চলতেই থাকবে।”

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

রামাল্লাহর বাজারে কাজ করা ৩৭ বছর বয়সী রাশা বলেন, পশ্চিমাদের এ পদক্ষেপ নিয়ে তিনি কোনো গুরুত্ব দেন না। তার মতে, “এটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোনো পরিবর্তন আনছে না।” তিনি আরও বলেন, এখন জেনিনে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ সেখানে বসতি স্থাপনকারীদের হামলা বেড়েছে এবং অনেকগুলো নতুন চেকপয়েন্ট তৈরি হয়েছে।

নেতানিয়াহুর ঘোষণা

ব্রিটেন, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া যখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিল, তখনই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু পশ্চিম তীরে আরও বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা দেন এবং বলেন, কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কখনও থাকবে না। এদিকে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। দুই বছরের যুদ্ধে এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত এবং দুর্ভিক্ষে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ।

তরুণদের প্রত্যাশা

১৮ বছর বয়সী ইব্রাহিম সালাম আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা এ স্বীকৃতিতে খুশি, তবে চাই যে যারা স্বীকৃতি দিয়েছে তারা যেন বাস্তবে পদক্ষেপ নেয়। পশ্চিম তীরে পরিস্থিতির উন্নতি, গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং শিশুদের দুর্ভিক্ষ দূর করা জরুরি।”

মিশ্র প্রতিক্রিয়া

রামাল্লাহর এক ক্যাফেতে কিছু মানুষ ম্যাক্রঁর বক্তব্য শুনে হাততালি দিয়েছেন। ৬৩ বছরের আবু এলিয়াস বলেন, তিনি আশাবাদী হলেও দ্রুত পরিবর্তনের আশা করছেন না। তার ভাষায়, “চাঁদে এক দিনে যাওয়া যায় না। ৮০ বছর ধরে কিছু হয়নি, এখন মনে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের জন্য কিছু ভালো হতে পারে।”

বিভ্রান্ত তরুণ প্রজন্ম

২৫ বছরের স্থাপত্য শিক্ষার্থী বিসান বলেন, তিনি বুঝতে পারছেন না এই স্বীকৃতির মানে কী। “আমি জানি না ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কী হবে। ইউরোপীয় দেশগুলো স্বীকৃতি দিয়ে কী বোঝাতে চাইছে তাও পরিষ্কার নয়। তবে আমার বাবা-মায়ের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে তারা মনে করেন কেউ অন্তত আমাদের ব্যাপারে ভাবছে।”

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া নিঃসন্দেহে একটি কূটনৈতিক অর্জন। তবে পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিরা মনে করেন, যুদ্ধ, চেকপয়েন্ট, বসতি সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক সংকট বন্ধ না হলে তাদের জীবনে এই স্বীকৃতি বাস্তব কোনো পরিবর্তন আনবে না