পরিবারের বাড়তে থাকা সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের বাবা মাইক বেজোস এবার সিইও নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ামি-ভিত্তিক পারিবারিক অফিস ‘অরোরা বোরিয়ালিস’ এখন আরও বড় আকার নিচ্ছে এবং এর জটিলতা সামলাতে একজন পেশাদার নির্বাহী প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
অরোরা বোরিয়ালিস: পারিবারিক অফিস থেকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয়
অরোরা বোরিয়ালিস বেজোস পরিবারের বিনিয়োগ, দাতব্য কার্যক্রম ও সম্পত্তি পরিকল্পনা পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি মূলত পারিবারিক অফিস হিসেবেই কাজ করছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কর্মী ও কার্যক্রম বৃদ্ধির কারণে এটিকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য সিইও নিয়োগের পরিকল্পনা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বেজোস পরিবার এখন তাদের সম্পদ পরিচালনা করাকে অন্যান্য বিলিয়নেয়ার পরিবারগুলোর মতো পেশাদার বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের মডেলে নিয়ে যেতে চাইছে।
বর্তমানে বেজোস পরিবারের সম্পদের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়। এত বিশাল সম্পদ দক্ষভাবে পরিচালনার জন্য একটি সুসংগঠিত কাঠামো প্রয়োজন, এবং মাইক বেজোস সেই দিকেই এগোচ্ছেন।
মাইক বেজোসের ভূমিকা ও উত্তরাধিকার
৭৯ বছর বয়সী মাইক বেজোস আসলে জেফ বেজোসের দত্তক বাবা। তিনি সাধারণত আলোচনার বাইরে থাকেন, তবে পরিবারকে দাতব্য কার্যক্রমের দিকে এগিয়ে নিতে তাঁর ভূমিকা রয়েছে। মাইক তাঁর স্ত্রী জ্যাকি বেজোসের সঙ্গে মিলে দীর্ঘদিন ধরে ‘বেজোস ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন’-এ সক্রিয়ভাবে যুক্ত।
জেফ বেজোসের বেতন ও সিদ্ধান্ত
একই সঙ্গে জানা যায়, জেফ বেজোস সিইও থাকা অবস্থায় কখনও অতিরিক্ত বোনাস বা শেয়ার গ্রান্ট নেননি। তিনি শুধু বছরে প্রায় ৮০ হাজার ডলারের একটি মূল বেতন নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলেন। ২০২৪ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের ডিলবুক সামিটে তিনি বলেন, “আমার ইতিমধ্যেই কোম্পানির বড় অংশীদারিত্ব ছিল, তাই অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করিনি। আমি ভেবেছিলাম, আমার আর বেশি প্রণোদনার দরকার কীভাবে হতে পারে?”
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বেজোস দেখিয়েছিলেন, কোম্পানির বিশাল মূল্যবৃদ্ধির পরও তিনি ব্যক্তিগত আর্থিক লাভের চেয়ে নিজের অংশীদারিত্বের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপে স্পষ্ট যে বেজোস পরিবার এখন তাদের সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে আরও সুসংগঠিত ও পেশাদার রূপ দেওয়ার পথে এগোচ্ছে।