ঘটনার সারসংক্ষেপ
হরিয়ানার সোনিপতের অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ বছর বয়সী এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়াম থেকে মহেঞ্জোদারোর বিখ্যাত ‘নাচের মেয়ে’র প্রতিলিপি চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং মূর্তিটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া
অশোকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, “শনিবার ন্যাশনাল মিউজিয়ামে যে ঘটনা ঘটেছে তা আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করব।”
ঘটনার বিবরণ
ন্যাশনাল মিউজিয়ামের কেরানি নিখিল কুমার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে শনিবার বিকেল চারটার দিকে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) এক সাব-ইনস্পেক্টর তাকে ফোন করে জানান, অভিজ্ঞতা গ্যালারি থেকে ‘নাচের মেয়ে’র প্রতিলিপিটি হারিয়ে গেছে।
অভিযোগের পরই মিউজিয়ামে তল্লাশি চালানো হয় এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। সেখানে দেখা যায়, এক ব্যক্তি প্রতিলিপিটি হাতে নিয়েছেন। পরে সিআইএসএফ কর্মকর্তারা ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন এবং তিনি অধ্যাপক বলে নিশ্চিত হন। মিউজিয়াম প্রাঙ্গণেই তাকে আটক করা হয় এবং স্থানীয় পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত অধ্যাপক শিক্ষার্থীদের একটি দল নিয়ে মিউজিয়ামে এসেছিলেন এবং এটি ছিল তার দ্বিতীয়বারের সফর। তার ব্যাগে মিউজিয়াম থেকে কেনা কিছু পাথরের তৈরি প্রতিলিপি পাওয়া যায়। তবে ধাতব ‘নাচের মেয়ে’ প্রতিলিপিটি বিক্রয়ের জন্য ছিল না।
আইনি ব্যবস্থা
কার্তব্য পথ থানায় অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৫(ই) ধারায় (বাসস্থানে, পরিবহন মাধ্যম বা উপাসনাস্থলে চুরি) এবং ৩১৭(২) ধারায় (চুরি করা সম্পদ গ্রহণ) অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব
৪,৫০০ বছর আগের ব্রোঞ্জের মূর্তি ‘নাচের মেয়ে’ ১৯২৬ সালে মহেঞ্জোদারো থেকে উদ্ধার করা হয়। মাত্র ১০.৫ সেন্টিমিটার উচ্চতার এই প্রত্নবস্তুটি গাঢ় রঙের, সম্পূর্ণ নগ্ন, শুধু গলায় একটি হার এবং হাতে অসংখ্য চুড়ি ছাড়া।
এই ঐতিহাসিক নিদর্শনের প্রতিলিপি চুরির ঘটনা মিউজিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।