ভারতীয় আকাশসেনার যুদ্ধক্ষমতার ইতিহাস বলতে গেলে মিগ-২১কে এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব। ১৯৬০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আসা এই সুপারসনিক ফাইটার জেট ছিল শুধু একটি যুদ্ধবিমান নয়; এটি হয়ে উঠেছিল এক যুগের কৌশলগত ভাবনা, শিল্পনীতি, প্রশিক্ষণ দর্শন ও প্রযুক্তিগত বাস্তবতার প্রতীক। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধসহ বিভিন্ন সংঘাতে তার সাহসী উপস্থিতি যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের জটিলতা, ঘনঘন দুর্ঘটনা ও ‘উড়ন্ত কফিন’ উপাধি মিগ-২১কে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতেও পরিণত করেছে। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ভারতের প্রতিরক্ষা আলোচনা এই প্ল্যাটফর্মকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনে মিগ-২১-এর কৌশলগত গুরুত্ব, অপারেশনাল বাস্তবতা, মানবিক দিক এবং বিদায়ের প্রেক্ষাপটে ভারতের আকাশশক্তির নতুন দিগন্ত বিশ্লেষণ করা হলো।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: কেন মিগ-২১
স্বাধীনতার পর ভারতীয় আকাশসেনা পশ্চিমা উৎসের সাবসনিক প্ল্যাটফর্মে ভর করেই এগোচ্ছিল। কিন্তু ১৯৬০-এর দশকে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা, পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তা সুপারসনিক যুদ্ধবিমানের চাহিদা তৈরি করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রস্তাব ছিল তুলনামূলক কম খরচে, দ্রুত সরবরাহের প্রতিশ্রুতিসহ লাইসেন্সিং ও দেশীয় উৎপাদনের সুযোগ উন্মুক্ত করা। ১৯৬৩ সালে মিগ-২১ আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় আকাশসেনায় যুক্ত হয়। পরবর্তী সময়ে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (HAL) লাইসেন্সের আওতায় দেশীয় উৎপাদন শুরু করলে ভারত প্রযুক্তি আত্মীকরণের নতুন এক পথে যাত্রা শুরু করে। ফলে শুধু বিমান কেনা নয়—রক্ষণাবেক্ষণ অবকাঠামো, যন্ত্রাংশ সরবরাহ ও মানবসম্পদ গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘ইকোসিস্টেম’ গড়ে ওঠে।
প্রযুক্তিগত সত্তা: সরল নকশা, কঠোর শৃঙ্খলার দাবি
মিগ-২১-এর নকশা দর্শন ছিল ‘সরল কিন্তু শৃঙ্খলানির্ভর’। ডেল্টা উইং, একক ইঞ্জিন, ছোট আকার ও উচ্চ গতির এয়ারফ্রেম তাকে নিকটবর্তী ডগফাইটে কার্যকর করে তোলে। তবে এর ককপিট ছিল সীমিত জায়গার, দৃশ্যমানতা কম, অটোমেশন অল্প; অ্যাভিওনিক্সে সময়ের সঙ্গে কিছু উন্নতি এলেও তা পশ্চিমা প্ল্যাটফর্মের তুলনায় সীমিত ছিল। উচ্চ গতির অবতরণ প্রোফাইল এবং ছোট রানওয়েতে অপারেশন পাইলটদের কাছ থেকে নিখুঁত পদ্ধতি মেনে চলার দাবি রাখত। ভারতীয় গ্রীষ্মে ককপিটের অতিরিক্ত তাপ, নিম্নস্তরে উড্ডয়নে শারীরিক চাপ ও মানসিক ক্লান্তি—সব মিলিয়ে এটি ছিল ‘পাইলটের শৃঙ্খলার পরীক্ষা’।
যুদ্ধে প্রমাণ: প্রতিরোধক থেকে বহুমুখী প্ল্যাটফর্ম
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে মিগ-২১ মূলত ইন্টারসেপ্টর হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে—শত্রুবিমানের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে এই প্ল্যাটফর্মের বহুমুখিতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রাতের অন্ধকারে নিম্ন উচ্চতায় অনুপ্রবেশ, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানা, ‘হিট-অ্যান্ড-এক্সিট’ কৌশল—এসব অপারেশনে মিগ-২১ কৌশলগত সাফল্য প্রদর্শন করে। ঢাকার গভর্নর হাউসে রকেট আক্রমণ প্রতীকি হলেও পাকিস্তানি সামরিক প্রশাসনের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছিল। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সীমান্ত টহল, স্ক্র্যাম্বল রেসপন্স এবং প্রশিক্ষণ মহড়ায় মিগ-২১ দীর্ঘদিন ভারতের ‘ফার্স্ট লাইন’ ফাইটার হিসেবে সক্রিয় ছিল।
দুর্ঘটনা, বিতর্ক ও মানবিক মাত্রা
সরকারি তথ্য অনুযায়ী ১৯৭১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে মিগ-২১ দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য; এতে বহু পাইলট, সেনাসদস্য ও সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান। কারণ বিশ্লেষণে বারবার উঠে আসে তিনটি বিষয়—মানবিক ভুল, প্রযুক্তিগত ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণ-সংস্থান ব্যবস্থার ঘাটতি। উচ্চ গতির অবতরণ, ছোট রানওয়েতে টাচডাউন, ইঞ্জিন নির্ভরযোগ্যতার সমস্যা, ইজেকশন সিট বা সিস্টেম ব্যর্থতার বিরল কিন্তু মারাত্মক উদাহরণ—সবকিছু মিলিয়ে এটি একধরনের ‘ঝুঁকির স্তূপ’-এ পরিণত হয়েছিল।
মানবিক দিকও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। যারা এই প্ল্যাটফর্মে কেরিয়ার শুরু করেছেন, তাঁদের কাছে মিগ-২১ ছিল এক ধরনের ‘পেশাগত দীক্ষা’। শারীরিক চাপ, অনিশ্চয়তা, সহকর্মীর মৃত্যু প্রত্যক্ষ করার মানসিক আঘাত—সব মিলিয়ে এটি ভারতীয় সামরিক সংস্কৃতিতে স্থায়ী ছাপ রেখে গেছে। তবু তাঁদের কাছে মিগ-২১ ছিল আকাশে এক পরীক্ষিত সঙ্গী—কারিগরি সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও যা ‘অদৃশ্য বন্ধুত্ব’ তৈরি করেছে।
রক্ষণাবেক্ষণ অর্থনীতি: পুরোনো প্ল্যাটফর্মের দীর্ঘায়ু
যুদ্ধবিমান কেনার খরচের চেয়ে বেশি চাপ পড়ে তার জীবনচক্রে—স্পেয়ার, ওভারহল, আপগ্রেড, প্রশিক্ষণ, গ্রাউন্ড সাপোর্ট, রানওয়ে অবকাঠামো ও সেফটি আপডেটে। ভারত বহু বছর ধরে মিগ-২১-এর সেবা জীবন বাড়িয়েছে। কারণ একই সময়ে নতুন প্ল্যাটফর্মের অন্তর্ভুক্তি পিছিয়েছে, দেশীয় লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট (LCA) প্রকল্প বিলম্বিত হয়েছে, আর ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাজেট ও প্রাধান্য বদলেছে। ফলে পুরোনো প্ল্যাটফর্মকে ‘ফার্স্ট রেসপন্ডার’ হিসেবে ধরে রাখতে হয়েছে বারবার। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘মার্জিন অব এরর’ কমে আসে—নতুন সিস্টেমের সংযোজন, পুরোনো কাঠামোয় আধুনিক অ্যাভিওনিক্স বসানো, স্পেয়ার চেইনের অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে ঝুঁকি ও ব্যয় বাড়িয়েছে।
প্রশিক্ষণ দর্শন: ককপিট শৃঙ্খলা থেকে সিস্টেম চিন্তায়
মিগ-২১ পাইলটদের প্রশিক্ষণে ‘প্রসিডিউরাল রিগার’ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—চেকলিস্টের নিখুঁত অনুসরণ, গতি ও গ্লাইড-স্লোপ নিয়ন্ত্রণ, জরুরি অবস্থায় ল্যান্ডিংয়ের প্রস্তুতি। এই কঠিন স্কুলিং ভারতীয় পাইলটদের দক্ষতা বাড়িয়েছে, যা পরবর্তীতে সু-৩০এমকেআই, রাফাল বা এলসিএ তেজসে রূপান্তরে সহায়ক হয়েছে। তবে আধুনিক প্ল্যাটফর্মে অটোমেশন, সেন্সর ফিউশন ও পরিস্থিতি-সচেতনতা অনেক বেশি হওয়ায় প্রশিক্ষণ দর্শনও ‘সিস্টেম থিংকিং’-কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। মিগ-২১-এ শেখা হাতে-কলমে নিয়ন্ত্রণ দক্ষতার সঙ্গে এটি এক নতুন ভারসাম্য তৈরি করেছে।
কৌশলগত পটভূমি: সংখ্যা বনাম গুণগত শক্তি
ভারতের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল স্কোয়াড্রনের সংখ্যা ধরে রাখা। মিগ-২১-এর বিদায়ের ফলে সংখ্যার ঘাটতি তৈরি হলেও মধ্যমেয়াদে এলসিএ তেজস, রাফাল, সু-৩০এমকেআই আপগ্রেড এবং নতুন প্রজন্মের এমআরএফএ প্রকিউরমেন্ট সেই ঘাটতি পূরণের রোডম্যাপ দিচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে—বেশি সংখ্যক পুরোনো প্ল্যাটফর্ম নাকি কম সংখ্যক আধুনিক ও নেটওয়ার্কড প্ল্যাটফর্ম ভারতের প্রয়োজনের সঙ্গে বেশি মানানসই? বর্তমান যুগে ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স, দীর্ঘ-পাল্লার নিখুঁত আঘাত, ড্রোন ঝাঁক, এডব্লিউএসিস ও স্যাটেলাইট নজরদারির যুগে ম্যানড প্ল্যাটফর্মকে সেন্সর-শুটার নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবেই ভাবতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে মিগ-২১-এর বিদায় এক প্রজন্মগত রূপান্তরের প্রতীক।
HAL ও দেশীয় সক্ষমতা: ‘লাইসেন্স টু বিল্ড’ থেকে ‘লাইসেন্স টু ডিজাইন’
মিগ-২১কে ঘিরে HAL যেভাবে উৎপাদন, ওভারহল ও টেস্টিং অবকাঠামো গড়ে তুলেছিল, তা পরবর্তীতে তেজস, হেলিকপ্টার প্ল্যাটফর্ম ও এভিওনিক্স সাবসিস্টেমে কাজে লেগেছে। অতীতে লাইসেন্স উৎপাদনের যে কাঠামো দাঁড়িয়েছিল, সেটিই আজ দেশীয় ডিজাইন-অ্যান্ড-বিল্ড দর্শনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। এক কথায়, মিগ-২১ ভারতের প্রতিরক্ষা শিল্পে একটি বড় উত্তরাধিকার রেখে গেছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট: একই প্ল্যাটফর্ম, ভিন্ন অভিজ্ঞতা
মিগ-২১ বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে ব্যবহৃত হয়েছে। কোথাও এটি স্বল্প খরচে আকাশপ্রতিরক্ষা শক্তি জোরদার করার উপায়, আবার কোথাও ‘প্রশিক্ষণ স্কুল’ হিসেবে কাজ করেছে। কারও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সফল হয়েছে, কারও হয়নি। ভারতের অভিজ্ঞতার বিশেষত্ব হলো—বিরাট ভৌগোলিক বিস্তৃতি, বৈচিত্র্যময় আবহাওয়া ও বিভিন্ন উচ্চতায় একই প্ল্যাটফর্মকে দীর্ঘদিন ধরে ‘ফার্স্ট লাইন’ হিসেবে ধরে রাখা। এর ফলে যে পরিমাণ তথ্য, নীতি ও শিক্ষা সঞ্চিত হয়েছে, তা ভবিষ্যৎ প্ল্যাটফর্মের ঝুঁকি বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স হয়ে থাকবে।
দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষালাভ: ‘সেফটি বাই ডিজাইন’
মিগ-২১-এর দুর্ঘটনা ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় স্থায়ী কিছু শিক্ষা দিয়েছে—
১. জীবনকাল বাড়ানো সবসময় সাশ্রয়ী সমাধান নয়; পুরো সিস্টেমের খরচ বিবেচনায় নিতে হবে।
২. স্পেয়ার সরবরাহ ও আপগ্রেডে দেরি সেফটি মার্জিন ক্ষয় করে।
৩. পাইলট ফিটনেস, ককপিট তাপ, অবতরণ প্রোফাইলের মতো মানবিক বিষয়কে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমান গুরুত্ব দিতে হবে।
৪. এয়ারফিল্ড অবকাঠামো (রানওয়ে লেংথ, অবতরণ সহায়ক ব্যবস্থা, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ) আধুনিক না হলে বিমান আধুনিক করেও ফল সীমিত থাকবে।
৫. দুর্ঘটনা তদন্তের ডেটা ভাগাভাগি, ‘নিয়ার-মিস’ রিপোর্টিং ও ‘জাস্ট কালচার’ ছাড়া শেখার গতি মন্থর হয়।
বিদায়ের মানবিক মুহূর্ত: এক যুগের সমাপ্তি
মিগ-২১-এর শেষ স্কোয়াড্রন অবসরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বহু পাইলট ও গ্রাউন্ড ক্রুর মনে নস্টালজিয়া ফিরে এসেছে। কারিগরি ত্রুটি ও দুর্ঘটনার স্মৃতি থাকলেও—এই প্ল্যাটফর্মে কেরিয়ার শুরু, প্রথম সুপারসনিক স্পর্শ, প্রথম রাতের উড্ডয়ন, প্রথম স্ক্র্যাম্বল—এসব অভিজ্ঞতা তাঁদের পেশাগত জীবনকে গড়ে দিয়েছে। তাঁদের ভাষায়, মিগ-২১ ছিল ‘কঠিন শিক্ষক’—যে ছাত্রকে কঠোরভাবে শাসন করেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দক্ষ করে তুলেছে।
ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
স্বল্পমেয়াদে স্কোয়াড্রনের সংখ্যা কমে যাওয়ার চাপ সামলাতে হলেও মধ্যমেয়াদে তেজস এমকে-১এ/এমকে-২, সু-৩০এমকেআই আপগ্রেড, রাফালের দ্বিতীয় ধাপে অন্তর্ভুক্তি এবং সম্ভাব্য এমআরএফএ প্রকিউরমেন্ট ভারতের ফ্রন্টলাইনকে আধুনিক নেটওয়ার্কড ‘কিল-চেইন’-এ রূপান্তর করবে। এর সঙ্গে এডব্লিউএসিস, মিড-এয়ার রিফুয়েলিং, গ্রাউন্ড-বেসড এয়ার ডিফেন্স, ড্রোন স্বর্ম ও দীর্ঘ-পাল্লার প্রিসিশন স্ট্রাইকের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা কাঠামো তৈরি হবে। তবে এ লক্ষ্য সফল করতে হলে সময়মতো ক্রয়, দেশীয় শিল্পকে নির্ভরযোগ্য সাপ্লাই চেইনে পরিণত করা, নতুন সিমুলেশনভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং সেফটি কালচারের ধারাবাহিক উন্নয়ন অপরিহার্য।
মিগ-২১ ভারতের সামরিক ইতিহাসে একই সঙ্গে ‘গৌরব’ ও ‘শিক্ষা’র প্রতীক। একদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও বহুমুখীতা, অন্যদিকে দীর্ঘ সেবা জীবন ও দুর্ঘটনার ইতিহাস—এই দ্বিমুখী উত্তরাধিকার ভারতের নীতিনির্ধারকদের শিখিয়েছে যে প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তা পরিকল্পনা হলো ধারাবাহিক বিনিয়োগ, সময়জ্ঞান ও সিস্টেমিক ব্যবস্থাপনার ফল। বিদায়ী মিগ-২১ তাই কেবল একটি বিমানের গল্প নয়; এটি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে উত্তরণের সেতুবন্ধ—যেখানে ‘কঠিন শিক্ষক’ তার দায়িত্ব শেষ করে বিদায় নেয়, আর ছাত্ররা নতুন প্রযুক্তির আকাশে উড়তে প্রস্তুত হয়।