বিশ্বের সবচেয়ে ছোট মাছ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন প্রজাতি এই উপাধির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ছোট মাছ হিসেবে বেশিরভাগ গবেষক পেডোসাইপ্রিস প্রোজেনেটিকা (Paedocypris progenetica) নামের একটি প্রজাতিকে স্বীকৃতি দেন।
পেডোসাইপ্রিস প্রোজেনেটিকা
এই ক্ষুদ্র মাছটি ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও বিন্তানের জলে পাওয়া যায়। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী মাছের দৈর্ঘ্য মাত্র ৭.৯ মিলিমিটার, যা প্রায় ০.৩১ ইঞ্চি। সবচেয়ে বড় নমুনার দৈর্ঘ্যও মাত্র ১০.৩ মিলিমিটার। এ কারণে এটি কেবল মাছ নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম।
অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রজাতি
যদিও পেডোসাইপ্রিস প্রোজেনেটিকা সবচেয়ে বেশি আলোচিত, তবে আরও কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে যাদেরও বিশ্বের সবচেয়ে ছোট মাছ বলা হয়।
- ফোটোকোরাইনাস স্পিনিসেপস (Photocorynus spiniceps): গভীর সমুদ্রের এই প্রজাতির পুরুষ মাছ মাত্র ৬.২ মিলিমিটার পর্যন্ত ছোট হতে পারে। পুরুষ মাছ স্ত্রী মাছের শরীরে পরজীবী হিসেবে বসবাস করে।
- স্টাউট ইনফ্যান্টফিশ (Schindleria brevipinguis): এই মাছের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬.৫ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে হালকা ওজনের মাছ হিসেবেও পরিচিত।
- করফু ডোয়ার্ফ গবি (Knipowitschia goerneri): গ্রিসের আশপাশে পাওয়া যায়, যার গড় দৈর্ঘ্য ২২ মিলিমিটার হলেও ছোট মাছের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
গবেষকদের বিতর্ক
সবচেয়ে ছোট মাছের উপাধি নির্ভর করে কোনো সংজ্ঞা ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপর। যদি দৈর্ঘ্য ধরা হয়, তাহলে পেডোসাইপ্রিস প্রোজেনেটিকা এগিয়ে। আর যদি ওজন বা বিশেষ প্রজনন বৈশিষ্ট্য ধরা হয়, তাহলে ফোটোকোরাইনাস স্পিনিসেপস বা স্টাউট ইনফ্যান্টফিশকে ছোট বলা যেতে পারে।
প্রকৃতির এই ক্ষুদ্র প্রাণীগুলো দেখায়, প্রাণীর আকার যত ছোটই হোক না কেন, তাদের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যে ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে ছোট মাছ নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকলেও পেডোসাইপ্রিস প্রোজেনেটিকা এখন পর্যন্ত এই উপাধির প্রধান দাবিদার হিসেবে স্বীকৃত।