১১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫

চিত্রকর্ম যা চোখ থামাতে বাধ্য করে

আমেরিকান শিল্পী কেরি জেমস মার্শাল লন্ডনের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব আর্টসে তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় একক প্রদর্শনীতে কৃষ্ণাঙ্গ ইতিহাস, আত্মপরিচয় ও শিল্পের জটিল সংলাপকে একসূত্রে বেঁধেছেন। তাঁর তুলি শুধু ইতিহাসের গল্প বলে না—দর্শককেও ভাবতে বাধ্য করে, কোথায় দাঁড়িয়ে আমরা সেই ইতিহাসকে দেখি।


ইতিহাস, শিল্প ও আত্মপরিচয়ের মেলবন্ধন

আমেরিকান শিল্পী কেরি জেমস মার্শালের কাজ মানেই এক ভিন্ন রকম ইতিহাসপাঠ—যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ইতিহাস ও শিল্পের ইতিহাস একসূত্রে বাঁধা। লন্ডনের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব আর্টসে গত মাসে শুরু হওয়া তাঁর প্রদর্শনী ‘দ্য হিস্টরিজ’ ইউরোপে এ পর্যন্ত আয়োজিত তাঁর সবচেয়ে বড় একক প্রদর্শনী।

এই প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে ৭০টি চিত্রকর্ম, যেখানে দাস প্রথার মধ্যযাত্রা, মার্কিন দক্ষিণে দাস বিদ্রোহ, সিভিল রাইটস আন্দোলন ও ব্ল্যাক পাওয়ারের ইতিহাস উঠে এসেছে। তবে কেবল ঐতিহাসিক ঘটনাই নয়—মার্শালের তুলিতে ফুটে উঠেছে নিত্যজীবনের দৃশ্যও, নরসুন্দর দোকান, ক্লাব, গৃহস্থালি ঘর কিংবা সরকারি আবাসিক প্রকল্প—যেমনটিতে তিনি নিজেও শৈশবে পরিবারসহ বসবাস করেছিলেন।

The Epic Style of Kerry James Marshall | The New Yorker

বিতর্ক নয়, বাস্তব ইতিহাসের চিত্র

বিতর্ক প্রসঙ্গে শিল্পী দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “ইতিহাস যেমন, তেমনই আছে—এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।” তাঁর নতুন সিরিজ ‘আফ্রিকা রিভিজিটেড’-এ উঠে এসেছে সেই আফ্রিকান বণিক ও শাসকদের চিত্র, যারা ইউরোপীয় দাস ব্যবসায়ীদের হাতে নিজেদের জনগণকে বিক্রি করেছিল।


ছবির ভাষা ও রঙের শক্তি

মার্শালের ছবিগুলো শুধু বিষয়বস্তুর জন্য নয়, গঠন, রঙ, টেক্সচার ও সূক্ষ্মতার জন্যও মনোযোগ দাবি করে। অনেক সময় তিনি ফাইবারগ্লাস, পিভিসি প্যানেল বা কাঠে আঁকেন; ক্যানভাসও সরাসরি দেয়ালে গেঁথে দেন ধাতব রিং দিয়ে। তাঁর ছবিতে এক ধরনের ‘গ্রাফিক ঘনত্ব’ দেখা যায়—যেখানে দৃষ্টি ক্রমাগত ঘুরতে থাকে, প্রতিটি মুহূর্তে নতুন কিছু আবিষ্কারের সুযোগ মেলে।

কিছু চিত্রে দেখা যায় সুরের লিরিক বা নোটেশন ভেসে বেড়াচ্ছে—যেন ছবির মধ্যেই সুর বাজছে। কোথাও বা ঝিকমিক করছে সোনালি ও রুপালি গ্লিটার, আর বইয়ের মলাট, ক্যালেন্ডার পৃষ্ঠা কিংবা কোলাজ—যেন বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল জগত পরস্পর ধাক্কা খেয়ে মিশে গেছে।

Kerry James Marshall on Making 'the Paintings Nobody Else Is Making' - The New York Times

দর্শকও অংশগ্রহণকারী

“আমি এমন ছবি আঁকতে চাই না যা কেবল সহানুভূতি আদায় করে; আমি এমন ছবি তৈরি করতে চাই যা দর্শককে ভাবতে বাধ্য করে,” বলেন মার্শাল। তাঁর মতে, “জাদুঘরে আমরা যাই অসাধারণ কিছু দেখার ও ভাবার জন্য; আমি চাই সেই অসাধারণ জিনিসগুলোর কেন্দ্রেও যেন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ থাকে।”

প্রদর্শনীর প্রাথমিক কক্ষে দেখা যায় রালফ এলিসনের বিখ্যাত উপন্যাস ইনভিজিবল ম্যান থেকে অনুপ্রাণিত একগুচ্ছ চিত্র। সেখানে অদৃশ্যতার ধারণা ফুটে উঠেছে দুটি ছবিতে—একটি সম্পূর্ণ সাদা, অন্যটি সম্পূর্ণ কালো; চোখ ও হাসি ছাড়া কিছুই দৃশ্যমান নয়। নিবিড়ভাবে তাকালে দেখা যায় সাদা অংশেও আসলে একটি অবয়ব লুকানো, যা সমাজে কারও সহজে মিশে যাওয়ার প্রতীকও হতে পারে।


আত্মপরিচয়ের ছায়া

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এ পোর্ট্রেট অব দ্য আর্টিস্ট অ্যাজ আ শ্যাডো অব হিজ ফর্মার সেলফ (১৯৮০) যেখানে এক কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষকে কালো রঙে সমতলভাবে এঁকেছেন শিল্পী। মুখে অতিরঞ্জিত হাসি, চোখে তীব্র দৃষ্টি—কিন্তু এই ‘ছায়ামূর্তি’ যেন হারিয়ে যেতে রাজি নয়। সে একদিকে নিজের পরিচয়ের খোঁজে, অন্যদিকে শিল্প ইতিহাসে নিজের স্থান খুঁজে নিচ্ছে।

6 Unforgettable Works in Kerry James Marshall's Royal Academy Show | Artsy

শিল্প ইতিহাসে সংলাপ

মার্শালের চিত্রকর্ম কেবল কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে উপস্থাপন করে না; এটি মূলধারার শিল্প ইতিহাসের সঙ্গে এক গভীর সংলাপও তৈরি করে। তাঁর কাজগুলোতে পুরনো শিল্পীদের রেফারেন্স বা ব্যঙ্গ প্রায়শই দেখা যায়। যেমন পাস্ট টাইমস (১৯৯৭) ছবিটি জর্জ সুরার বিখ্যাত আ সানডে অন লা গ্রান্ড জাট-এর আধুনিক প্রতিধ্বনি। এখানে দেখা যায় শিকাগোর এক পার্কে পরিবারসহ পিকনিক করছে চারজন কৃষ্ণাঙ্গ, পেছনে মোটরবোট ও জলস্কি—যেন তাদের আনন্দের আধুনিক রূপ তুলে ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে স্কুল অব বিউটি, স্কুল অব কালচার (২০১২)-তে এক নারীদের বিউটি স্যালন—দেয়ালে চুল ও ত্বকের বিজ্ঞাপন, লরিন হিলের অ্যালবাম, শিল্পী ক্রিস ওফিলির পোস্টার। ছবির এক কোণে ঘুরে বেড়ায় ডিজনির স্লিপিং বিউটির বিকৃত মুখ—যেন আমেরিকান স্বপ্নের ভঙ্গুর প্রতীক।

Kerry James Marshall on Making 'the Paintings Nobody Else Is Making' - The New York Times

শিল্প ও দর্শকের মেলবন্ধন

মার্শালের প্রতিটি কাজ দর্শককে ‘দেখা’র অংশীদার করে তোলে। তাঁর তুলির প্রতিটি স্ট্রোকে যেন প্রশ্ন—“তুমি কী দেখছ?” নাকি “তুমি নিজেই ছবির ভেতর এক চরিত্র?” প্রদর্শনীর দুটি নামহীন ছবিতে শিল্পীর চোখে দেখা যায় একজন পুরুষ ও একজন নারী শিল্পী, যারা নিজেদের প্যালেট হাতে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে—আমাদের আঁকার প্রস্তুতিতে। যেন শিল্প আর দর্শকের মাঝে কোনও দূরত্বই নেই, সবাই মিলে একসঙ্গে ‘দেখা’র শিল্পচর্চায় অংশ নিচ্ছে।

#কেরি_জেমস_মার্শাল #লন্ডন_আর্ট_প্রদর্শনী #শিল্প_ইতিহাস #কৃষ্ণাঙ্গ_শিল্প #রয়্যাল_অ্যাকাডেমি #দ্য_হিস্টরিজ #চিত্রকর্ম #সারাক্ষণ_রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

চিত্রকর্ম যা চোখ থামাতে বাধ্য করে

০৩:৩০:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

আমেরিকান শিল্পী কেরি জেমস মার্শাল লন্ডনের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব আর্টসে তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় একক প্রদর্শনীতে কৃষ্ণাঙ্গ ইতিহাস, আত্মপরিচয় ও শিল্পের জটিল সংলাপকে একসূত্রে বেঁধেছেন। তাঁর তুলি শুধু ইতিহাসের গল্প বলে না—দর্শককেও ভাবতে বাধ্য করে, কোথায় দাঁড়িয়ে আমরা সেই ইতিহাসকে দেখি।


ইতিহাস, শিল্প ও আত্মপরিচয়ের মেলবন্ধন

আমেরিকান শিল্পী কেরি জেমস মার্শালের কাজ মানেই এক ভিন্ন রকম ইতিহাসপাঠ—যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ইতিহাস ও শিল্পের ইতিহাস একসূত্রে বাঁধা। লন্ডনের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব আর্টসে গত মাসে শুরু হওয়া তাঁর প্রদর্শনী ‘দ্য হিস্টরিজ’ ইউরোপে এ পর্যন্ত আয়োজিত তাঁর সবচেয়ে বড় একক প্রদর্শনী।

এই প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে ৭০টি চিত্রকর্ম, যেখানে দাস প্রথার মধ্যযাত্রা, মার্কিন দক্ষিণে দাস বিদ্রোহ, সিভিল রাইটস আন্দোলন ও ব্ল্যাক পাওয়ারের ইতিহাস উঠে এসেছে। তবে কেবল ঐতিহাসিক ঘটনাই নয়—মার্শালের তুলিতে ফুটে উঠেছে নিত্যজীবনের দৃশ্যও, নরসুন্দর দোকান, ক্লাব, গৃহস্থালি ঘর কিংবা সরকারি আবাসিক প্রকল্প—যেমনটিতে তিনি নিজেও শৈশবে পরিবারসহ বসবাস করেছিলেন।

The Epic Style of Kerry James Marshall | The New Yorker

বিতর্ক নয়, বাস্তব ইতিহাসের চিত্র

বিতর্ক প্রসঙ্গে শিল্পী দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “ইতিহাস যেমন, তেমনই আছে—এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।” তাঁর নতুন সিরিজ ‘আফ্রিকা রিভিজিটেড’-এ উঠে এসেছে সেই আফ্রিকান বণিক ও শাসকদের চিত্র, যারা ইউরোপীয় দাস ব্যবসায়ীদের হাতে নিজেদের জনগণকে বিক্রি করেছিল।


ছবির ভাষা ও রঙের শক্তি

মার্শালের ছবিগুলো শুধু বিষয়বস্তুর জন্য নয়, গঠন, রঙ, টেক্সচার ও সূক্ষ্মতার জন্যও মনোযোগ দাবি করে। অনেক সময় তিনি ফাইবারগ্লাস, পিভিসি প্যানেল বা কাঠে আঁকেন; ক্যানভাসও সরাসরি দেয়ালে গেঁথে দেন ধাতব রিং দিয়ে। তাঁর ছবিতে এক ধরনের ‘গ্রাফিক ঘনত্ব’ দেখা যায়—যেখানে দৃষ্টি ক্রমাগত ঘুরতে থাকে, প্রতিটি মুহূর্তে নতুন কিছু আবিষ্কারের সুযোগ মেলে।

কিছু চিত্রে দেখা যায় সুরের লিরিক বা নোটেশন ভেসে বেড়াচ্ছে—যেন ছবির মধ্যেই সুর বাজছে। কোথাও বা ঝিকমিক করছে সোনালি ও রুপালি গ্লিটার, আর বইয়ের মলাট, ক্যালেন্ডার পৃষ্ঠা কিংবা কোলাজ—যেন বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল জগত পরস্পর ধাক্কা খেয়ে মিশে গেছে।

Kerry James Marshall on Making 'the Paintings Nobody Else Is Making' - The New York Times

দর্শকও অংশগ্রহণকারী

“আমি এমন ছবি আঁকতে চাই না যা কেবল সহানুভূতি আদায় করে; আমি এমন ছবি তৈরি করতে চাই যা দর্শককে ভাবতে বাধ্য করে,” বলেন মার্শাল। তাঁর মতে, “জাদুঘরে আমরা যাই অসাধারণ কিছু দেখার ও ভাবার জন্য; আমি চাই সেই অসাধারণ জিনিসগুলোর কেন্দ্রেও যেন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ থাকে।”

প্রদর্শনীর প্রাথমিক কক্ষে দেখা যায় রালফ এলিসনের বিখ্যাত উপন্যাস ইনভিজিবল ম্যান থেকে অনুপ্রাণিত একগুচ্ছ চিত্র। সেখানে অদৃশ্যতার ধারণা ফুটে উঠেছে দুটি ছবিতে—একটি সম্পূর্ণ সাদা, অন্যটি সম্পূর্ণ কালো; চোখ ও হাসি ছাড়া কিছুই দৃশ্যমান নয়। নিবিড়ভাবে তাকালে দেখা যায় সাদা অংশেও আসলে একটি অবয়ব লুকানো, যা সমাজে কারও সহজে মিশে যাওয়ার প্রতীকও হতে পারে।


আত্মপরিচয়ের ছায়া

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এ পোর্ট্রেট অব দ্য আর্টিস্ট অ্যাজ আ শ্যাডো অব হিজ ফর্মার সেলফ (১৯৮০) যেখানে এক কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষকে কালো রঙে সমতলভাবে এঁকেছেন শিল্পী। মুখে অতিরঞ্জিত হাসি, চোখে তীব্র দৃষ্টি—কিন্তু এই ‘ছায়ামূর্তি’ যেন হারিয়ে যেতে রাজি নয়। সে একদিকে নিজের পরিচয়ের খোঁজে, অন্যদিকে শিল্প ইতিহাসে নিজের স্থান খুঁজে নিচ্ছে।

6 Unforgettable Works in Kerry James Marshall's Royal Academy Show | Artsy

শিল্প ইতিহাসে সংলাপ

মার্শালের চিত্রকর্ম কেবল কৃষ্ণাঙ্গ মানুষকে উপস্থাপন করে না; এটি মূলধারার শিল্প ইতিহাসের সঙ্গে এক গভীর সংলাপও তৈরি করে। তাঁর কাজগুলোতে পুরনো শিল্পীদের রেফারেন্স বা ব্যঙ্গ প্রায়শই দেখা যায়। যেমন পাস্ট টাইমস (১৯৯৭) ছবিটি জর্জ সুরার বিখ্যাত আ সানডে অন লা গ্রান্ড জাট-এর আধুনিক প্রতিধ্বনি। এখানে দেখা যায় শিকাগোর এক পার্কে পরিবারসহ পিকনিক করছে চারজন কৃষ্ণাঙ্গ, পেছনে মোটরবোট ও জলস্কি—যেন তাদের আনন্দের আধুনিক রূপ তুলে ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে স্কুল অব বিউটি, স্কুল অব কালচার (২০১২)-তে এক নারীদের বিউটি স্যালন—দেয়ালে চুল ও ত্বকের বিজ্ঞাপন, লরিন হিলের অ্যালবাম, শিল্পী ক্রিস ওফিলির পোস্টার। ছবির এক কোণে ঘুরে বেড়ায় ডিজনির স্লিপিং বিউটির বিকৃত মুখ—যেন আমেরিকান স্বপ্নের ভঙ্গুর প্রতীক।

Kerry James Marshall on Making 'the Paintings Nobody Else Is Making' - The New York Times

শিল্প ও দর্শকের মেলবন্ধন

মার্শালের প্রতিটি কাজ দর্শককে ‘দেখা’র অংশীদার করে তোলে। তাঁর তুলির প্রতিটি স্ট্রোকে যেন প্রশ্ন—“তুমি কী দেখছ?” নাকি “তুমি নিজেই ছবির ভেতর এক চরিত্র?” প্রদর্শনীর দুটি নামহীন ছবিতে শিল্পীর চোখে দেখা যায় একজন পুরুষ ও একজন নারী শিল্পী, যারা নিজেদের প্যালেট হাতে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে—আমাদের আঁকার প্রস্তুতিতে। যেন শিল্প আর দর্শকের মাঝে কোনও দূরত্বই নেই, সবাই মিলে একসঙ্গে ‘দেখা’র শিল্পচর্চায় অংশ নিচ্ছে।

#কেরি_জেমস_মার্শাল #লন্ডন_আর্ট_প্রদর্শনী #শিল্প_ইতিহাস #কৃষ্ণাঙ্গ_শিল্প #রয়্যাল_অ্যাকাডেমি #দ্য_হিস্টরিজ #চিত্রকর্ম #সারাক্ষণ_রিপোর্ট