গণভোটের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শনিবার প্রশ্ন তুলেছেন—বাংলাদেশে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাজনৈতিক দলগুলোর কে দিয়েছে?
তিনি বলেন, “আমরা কেন প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন নিয়ে গণভোট করব? কে আমাদের এই দায়িত্ব দিয়েছে? জনগণ তো দেয়নি।”
কসমস ফাউন্ডেশনের আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য
‘ইলেকশন ২০২৬: এ ক্রিটিক্যাল লুক অ্যাট প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর মগবাজারে কসমস সেন্টারে কসমস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউএনবি’র সম্পাদক-ইন-চিফ এনায়েতুল্লাহ খান।
‘গণতান্ত্রিক শাসন ফিরিয়ে আনাই এখন অগ্রাধিকার’
আমীর খসরু বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান অনুযায়ী গঠিত এবং পরিচালিত হচ্ছে। তাই প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন করা এবং সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
তার ভাষায়, “গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পরই সংসদে ও বাইরে সংস্কার নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু যখন গণতান্ত্রিক সরকারই নেই, তখন বাস্তব কোনো গণআলোচনা সম্ভব নয়।”
‘রাজনৈতিক দল নয়, জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে’
বিএনপি নেতা বলেন, প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন চালুর মতো বিষয়ে জনগণের ভোটই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।
তিনি বলেন, “৩০টি রাজনৈতিক দল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার পায়নি। জনগণই নির্বাচনের মাধ্যমে তা নির্ধারণ করবে।”
‘প্রত্যেক বিষয়ে গণভোট সম্ভব নয়’
খসরু উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বহু বিষয়ে মতৈক্য নেই। “প্রত্যেক বিষয়ে যদি গণভোট করতে যাই, তবে আগামী দুই বছর শুধু গণভোট করেই কাটবে,” বলেন তিনি।
‘একদলীয় চিন্তাভাবনা নয়, ভিন্নমতই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য’
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র মানে একদলীয় শাসন নয়। “আমরা তো বাকশাল করতে যাচ্ছি না। ভিন্নমত ও নীতির পার্থক্যই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। প্রতিটি দলকে নিজেদের ভিশন নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে।”
‘পেশিশক্তি নয়, আইনের প্রয়োগ দরকার’
কেউ কেউ যুক্তি দিচ্ছেন যে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন ব্যবস্থা পেশিশক্তির প্রভাব কমাবে—এ প্রসঙ্গে খসরু বলেন, “জনপ্রিয় প্রার্থীদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। পেশিশক্তি দমন ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্র ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার, নির্বাচনী ব্যবস্থা পাল্টানোর নয়।”
‘কার্যকর সংসদই সমস্যার সমাধান’
শেষে তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী ও কার্যকর সংসদই দেশের অনেক সমস্যা সমাধান করতে পারে।
“সংসদীয় কমিটিগুলোকে সক্রিয় করতে হবে এবং শুনানির প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে হবে—তাহলেই জনগণের প্রতিনিধিরা জনস্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন,” যোগ করেন তিনি।