সারাদেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি অব্যাহত
বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (রবিবার সকাল পর্যন্ত), সারাদেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে ৯৫৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী সপ্তাহগুলোতে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে।
ঢাকায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু
নতুন ৫ জন মৃতের মধ্যে ২ জন ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার বাসিন্দা। বাকি ৩ জনের মধ্যে একজন উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), একজন বরিশাল ও একজন রাজশাহী বিভাগের (সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে) বাসিন্দা ছিলেন।
আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছাড়াল
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত ৯৫৩ জনকে নিয়ে সারাদেশে চলতি বছরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৫৫৯ জনে। বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮৮৯ জন, আর সারাদেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৪৬ জন।
আক্রান্ত ও মৃতদের মধ্যে পুরুষের হার বেশি
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৬১.১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮.৯ শতাংশ নারী। একইভাবে মৃতদের মধ্যে ৫৩.৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬.৫ শতাংশ নারী।
জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চাপ
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ও শহরভিত্তিক মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা এই ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, জলবায়ুজনিত অভিবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা মিলেই ডেঙ্গুর মতো রোগ মোকাবিলায় বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
গত বছরের তুলনায় কম হলেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
গত বছর (২০২৪ সালে) ডেঙ্গুতে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়। এ সময় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন ১ লাখ ৪০ জন। যদিও চলতি বছরের মৃতের সংখ্যা তুলনামূলক কম, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—এ বছরের সংক্রমণ ঋতুর শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
ডেঙ্গু এখন আর মৌসুমি রোগ নয়, বরং এটি জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদি হুমকি হয়ে উঠছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে প্রয়োজন সমন্বিত পদক্ষেপ—মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর অভিযান, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ এবং দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রসার।
#ডেঙ্গু #বাংলাদেশ #স্বাস্থ্য #জলবায়ুপরিবর্তন #সারাক্ষণরিপোর্ট