মঙ্গলবার সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দর দাঁড়িয়েছে গ্রামপ্রতি ৪৯৩.২৫ দিরহাম—অর্থাৎ ৫০০ দিরহামের মনস্তাত্ত্বিক সীমা থেকে মাত্র ৭ দিরহাম দূরে। ২২ ক্যারেটের দাম উঠেছে ৪৫৬.৭৫ দিরহাম। সেপ্টেম্বর থেকে প্রায় নিরবচ্ছিন্ন উত্থানে চলতি দুই মাসে গ্রামপ্রতি বেড়েছে ৮০ দিরহামের বেশি।
আজকের বাজারদর
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ গ্রামপ্রতি ৪৯৩.২৫ দিরহামে লেনদেন হয়েছে। একই সময়ে ২২ ক্যারেটের দর গ্রামপ্রতি ৪৫৬.৭৫ দিরহাম।
দুই মাসে কতটা বেড়েছে
অক্টোবরের শুরুতে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল গ্রামপ্রতি ৪৬৬.৭৫ দিরহাম এবং ২২ ক্যারেটের ছিল ৪৩২ দিরহাম। সেই তুলনায় এখন গ্রামপ্রতি ৮০ দিরহামের বেশি বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে—যা ক্রেতাদের জন্য চাপ, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের কাছে শক্তিশালী “নিরাপদ আশ্রয়” সংকেত।
বৈশ্বিক বাজার—নতুন রেকর্ড ও অনুঘটক
বিশ্ববাজারে স্বর্ণ আউন্সপ্রতি ৪,১৫০ ডলার ছুঁয়ে আবারও রেকর্ড করেছে। যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য টানাপোড়েন এবং বছরের শেষে সুদের হার কমার সম্ভাবনা—এই দুই কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণে ঝুঁকছেন।
সুদের হার কমলে কেন স্বর্ণ বাড়ে
সুদের হার নামলে নগদ অর্থ বা বন্ডের প্রত্যাবর্তন কমে যায়—ফলে সুদবিহীন হলেও স্বর্ণ অর্থ ও বন্ডের তুলনায় আকর্ষণীয় হয়। মুদ্রাবাজারের ইঙ্গিতে ধারণা দিচ্ছে, চলতি মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ২৫ বেসিস পয়েন্ট হারে কমানোর সম্ভাবনা প্রায় ৯৭ শতাংশ—এই প্রত্যাশাই বৈশ্বিক দামে ঊর্ধ্বচাপ তৈরি করছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা স্বর্ণকে সহায়তা দিচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে শুল্কের ভাষ্য—১০০ শতাংশ শুল্কের হুমকি থেকে পরে সুর নরম করা—বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কার্যক্রম বন্ধ দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ানোয় গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে। রাজনীতি, বাজার ও আস্থার এই সংঘাতে ঐতিহ্যগতভাবেই স্বর্ণ লাভবান হয়।
ইউএই–র বাসিন্দা ও ক্রেতাদের জন্য অর্থ কী
দাম যে গতিতে উপরে উঠছে, তাতে কখন কিনবেন সে সিদ্ধান্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। গহনা ক্রেতারা তাত্ক্ষণিক বাড়তি খরচের চাপ অনুভব করছেন, আর দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের ধারাবাহিক শক্তি ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত দেখছেন। বর্তমান গতি অব্যাহত থাকলে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের গ্রামপ্রতি ৫০০ দিরহামের মাইলফলক শিগগিরই ছোঁয়া সম্ভব—যা বহু বছর পর একটি মনস্তাত্ত্বিক স্তর হিসেবে ধরা হয়।
পূর্বাভাস কী বলছে
বড় আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো তাদের পূর্বাভাস উঁচু করছে। ব্যাংক অব আমেরিকা ২০২৬ সালে স্বর্ণের গড় দাম আউন্সপ্রতি প্রায় ৪,৪০০ ডলার ধরে দেখছে। সোসিয়েতে জেনেরাল মনে করছে, আগামী বছর শেষ নাগাদ দাম ৫,০০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
চোখ রাখুন দরে, খবরেও
বৈশ্বিক অস্থিরতা ও সুদের হার কমার প্রত্যাশা স্বর্ণকে জোরদার ত্বরণ দিচ্ছে, যার প্রতিফলন পুরোপুরি পড়ছে ইউএই বাজারে। গহনা কিনুন বা বিনিয়োগ ভাবুন—স্থানীয় মূল্যতালিকার পাশাপাশি বিশ্বখবরের দিকে নজর রাখাই এখন সবচেয়ে কৌশলী পদক্ষেপ। ৫০০ দিরহাম সীমা স্পর্শ—বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে—আর খুব বেশি দূরে নাও থাকতে পারে।
#ট্যাগ: #স্বর্ণ #দাম #সংযুক্তআরবআমিরাত #ইউএই_বাজার #বিনিয়োগ #মুদ্রানীতি #বিশ্ববাজার #গহনা #সুদেরহার #শুল্ক