পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ২০২১ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত সংঘর্ষে উদ্বেগ জানিয়েছে চীন। বেইজিং বলেছে, তারা ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ এই শত্রুতাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে এবং উভয় দেশকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। চীন মনে করে, পারস্পরিক সংলাপ ও সংযমই বর্তমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।
সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উদ্বেগে চীন
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সংঘটিত সর্বশেষ রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘর্ষের পর চীন সোমবার সংযম ও শান্তির আহ্বান জানায়। বেইজিং জানায়, তারা ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ এই শত্রুতাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে এবং উভয় পক্ষকে দ্রুত উত্তেজনা কমাতে অনুরোধ করেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘চীন আন্তরিকভাবে আশা করে যে দুই দেশ বৃহত্তর স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে, শান্ত ও সংযত থাকবে এবং পারস্পরিক উদ্বেগসমূহ সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে সমাধান করবে যাতে সংঘাত আরও না বাড়ে।’
আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় ঝুঁকি
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সংঘাত এখনো নিয়ন্ত্রণযোগ্য পর্যায়ে রয়েছে, তবে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হতে পারে। তারা সতর্ক করেছেন, সীমান্তে অব্যাহত সামরিক পাল্টাপাল্টি আঞ্চলিক বাণিজ্য, কৌশলগত সহযোগিতা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংযোগের ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে আছে। তাই এই অঞ্চলে স্থায়ী অস্থিরতা বাণিজ্য রুট ও আন্তর্জাতিক প্রকল্পের অগ্রগতিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
চীনের ভূমিকা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ
লিন জিয়ান আরও বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।’ একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয় সরকারকে চীনা নাগরিক, প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
চীনের বেল্ট–অ্যান্ড–রোড উদ্যোগের আওতায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বহু অবকাঠামো প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পে কর্মরত চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে সীমান্ত অস্থিতিশীলতার কারণে।
সংঘর্ষের পটভূমি
গত সপ্তাহে পাকিস্তান ও আফগান সীমান্তে একাধিক স্থানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, যা ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর অন্যতম তীব্র সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
তালেবান সরকার দাবি করেছে, গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিমান হামলার ‘প্রতিশোধ হিসেবে’ তারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে। তাদের দাবি, এতে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে, আর তালেবান বাহিনীর নয়জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছে।
এই সহিংস ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতায় নতুন এক অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
# চীন, #পাকিস্তান, #আফগানিস্তান, #সীমান্ত_সংঘর্ষ, #আঞ্চলিক_স্থিতিশীলতা, #কূটনীতি, #বেইজিং, #তালেবান, #সারাক্ষণ_রিপোর্ট