বাড়তি ফি ও রুট টানাপোড়েন
চীন–মার্কিন বাণিজ্য উত্তেজনায় বেইজিংয়ের বর্তমান বার্তা স্পষ্ট: দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে টিকে থাকার মতো সুরক্ষা ও কৌশল তাদের রয়েছে। সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন শুল্কের ধাক্কা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে গেলে তা বাজার কাঁপাতে পারে—এ ধারণা থেকে চীন মনে করে, যুক্তরাষ্ট্র আগে পিছিয়ে আসবে। রাষ্ট্রীয় ঋণ ও শিল্পনীতি দিয়ে চীন নির্দিষ্ট খাতকে বাফার দিচ্ছে; অভ্যন্তরীণ চাহিদা উদ্দীপনা প্যাকেজে ধরে রাখা হয়েছে; আর আমদানি খরচ বাড়লে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির চাপ রাজনৈতিকভাবে ট্রেড-ডি-এস্কেলেশনের দিকে ঠেলবে—এটাই তাদের হিসাব। ইস্যুটি কেবল শুল্ক নয়; সরবরাহশৃঙ্খল, শিপিং ও প্রযুক্তি প্রবাহে বাড়তি নিয়ন্ত্রণও এতে জড়িত। দুই দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো সতর্ক করছে, “অস্ত্রায়িত লজিস্টিকস”—উচ্চতর পোর্ট ফি, কাস্টমসে কড়াকড়ি—ইতিমধ্যেই খুচরা, অটো ও জ্বালানি খাতে বাড়তি খরচ চাপাচ্ছে।
পরিবহন ও বাণিজ্যের বাস্তবতায় এই অবস্থান ধরা পড়ছে। রাশিয়ার আকাশপথ দিয়ে সংক্ষিপ্ত রুট ব্যবহার বন্ধের মার্কিন প্রস্তাবে চীনা এয়ারলাইনগুলোর আপত্তি জোরালো। রুট বদলানোয় জ্বালানি ব্যয় ও ক্রু-টাইম বাড়ছে; আমদানিকারকেরা সম্ভাব্য সারচার্জের আগে অর্ডার টেনে আনছে। আর্থিক বাজারে দোলাচল—ওয়াল স্ট্রিটে রেট-কাট প্রত্যাশা ও শুল্ক-অনিশ্চয়তা ডলারের ওঠানামা বাড়িয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানিরা এখন বেসলাইন দৃশ্যে ধরে নিচ্ছে দীর্ঘ কাস্টমস সময়, পর্যায়ক্রমিক ফি-স্পাইক, এমনকি ভোক্তা বয়কট। অর্থনীতিবিদদের মতে, ছুটির মৌসুম পর্যন্ত এই টানাপোড়েন চললে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কয়েক দশমিক কমে যেতে পারে। আপাতত দুই পক্ষই বলছে, টিকিয়ে রাখার মতো লিভারেজ তাদের আছে। যতদিন পোর্ট ও এয়ার-কার্গোতে “স্টিকি” বাড়তি খরচ স্থায়ী হয়, ততই সরবরাহশৃঙ্খল সমান্তরাল ব্লকে কঠিন হয়ে যাবে—আর আপস কঠিনতর হবে।