সংকট সামাল দিতে নগদ ও আস্থার লড়াই
পাকিস্তান আইএমএফের সঙ্গে স্টাফ-লেভেল চুক্তিতে পৌঁছেছে, যার মাধ্যমে প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ের পথ খুলবে। ইসলামাবাদে কয়েকদিনের আলোচনার পর এই অগ্রগতি এলো—লক্ষ্য মুদ্রাস্ফীতি কমানো, রিজার্ভ জমানো এবং বিদ্যুৎ ঘাটতি সামাল দেওয়া। আইএমএফ জানায়, পর্যালোচনায় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা, জ্বালানি খাতের সংস্কার এবং কর প্রশাসনের অগ্রগতি যাচাই হয়েছে। চূড়ান্ত ছাড় পেতে বোর্ডের অনুমোদন লাগবে, তবে স্টাফ-চুক্তি দেখায় শর্তপূরণে পাকিস্তান গ্রহণযোগ্য অগ্রগতি করেছে। সময়টি গুরুত্বপূর্ণ: সামনের প্রান্তিকে বৈদেশিক পরিশোধের চাপ বেশি, আর বৈশ্বিক ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতা সীমিত। সরকার বলছে, জ্বালানি ট্যারিফ সমন্বয়, প্রাইমারি সারপ্লাস লক্ষ্য, চোরাচালান দমন—এসব পদক্ষেপে রুপি স্থিতি ও আমদানি প্রবাহে উন্নতি দেখা যাচ্ছে।
বাজার এখন সূক্ষ্ম বিষয়গুলো দেখবে। আইএমএফ সাধারণত বিশ্বাসযোগ্য ট্যাক্স সংগ্রহ ও খরচ-সমর্থ জ্বালানি মূল্যায়ন চায়, যাতে বকেয়া না ফুলে ওঠে। এতে নির্বাচনের আগে ভর্তুকি দেওয়ার পরিসর সীমিত—ভোক্তা ও শিল্পের চাপ থাকলেও। ইসলামাবাদ করভিত্তি বিস্তৃত করা এবং ডিজিটাল অডিটে ফাঁকফোকর কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জ্বালানি সংস্কারে লাইন-লস কমানো, বিল-আদায় বাড়ানো, আর সর্বজনীন ভর্তুকি থেকে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তায় সরে আসা অন্তর্ভুক্ত। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শাসনব্যবস্থা ও বেসরকারীকরণের গতি—এসবও নজরে, যেখানেই আগের কর্মসূচিতে পিছিয়ে পড়া হয়েছিল। বহিঃখাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নমনীয় বিনিময় হার বজায় রাখা, সুযোগ পেলে রিজার্ভ কেনা, এবং সুদের হার বা আমদানি নিয়ন্ত্রণ অতিরিক্ত ব্যবহার না করার পথে থাকবে বলে আশা। সফলতার শর্ত রাজনৈতিক শৃঙ্খলা। সংস্কার টিকলে, এই ছাড় দ্বিপক্ষীয় তহবিল টানতে ও ডিফল্ট আশঙ্কা কমাতে ‘ক্যাটালিস্ট’ হবে। না হলে পুরোনো দুর্বলতা—সার্কুলার ডেট, রাজস্ব ঘাটতি, মুদ্রাচাপ—আবার মাথাচাড়া দেবে। আপাতত এই চুক্তি পাকিস্তানকে দিচ্ছে সময় ও আস্থা—সংকট মোচনে সবচেয়ে দরকারি দুই সম্পদ।