ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তোমাহক মিসাইলের প্রভাব
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ইউক্রেনে তোমাহক মিসাইল পাঠিয়ে যুদ্ধের কোনো সমাধান হবে না, বরং এটি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই পদক্ষেপ পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
গত মাসে, আমেরিকান কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, তারা ইউক্রেনকে তোমাহক মিসাইল দিতে প্রস্তুত হতে পারে, তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, এখনও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার হয়নি।
তোমাহক মিসাইল প্রতি প্রায় ১.৩ মিলিয়ন ডলারে পাওয়া যায়, এবং এর পরিসীমা প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার। এর মানে হল যে, ইউক্রেন তত্ত্বতাত্ত্বিকভাবে রাশিয়ার গভীরে, যেমন মস্কোসহ অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
মিন্স্কে মঙ্গলবার এক ভাষণে লুকাশেঙ্কো বলেছেন, এসব মিসাইল ইউক্রেনকে সরবরাহ করা যুদ্ধের সমাধান করবে না, বরং এটি ‘পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে’।
তিনি আরও যোগ করেন, ট্রাম্প ‘এটি সবার চেয়ে ভালো বুঝেন’ এবং এটি মনে হয় যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাড়াহুড়ো করছেন না এই ধরনের অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠাতে বা রাশিয়ার গভীরে আক্রমণ করার অনুমতি দিতে, যা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি চাচ্ছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সতর্ক করেছেন যে, যদি তোমাহক মিসাইল পাঠানো হয়, তবে রাশিয়াকে তার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে এবং এটি ইউএস-রাশিয়া সম্পর্কের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। তিনি আরও বলেন, মিসাইলগুলো যুদ্ধের মঞ্চে শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তন করবে না।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, কিয়েভকে এসব অস্ত্র বিশ্বাসযোগ্যভাবে ব্যবহারের জন্য নির্ভরযোগ্য মনে করা যায় না। ক্রেমলিন কর্মকর্তারা বারবার অভিযোগ করেছেন যে, ইউক্রেন পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে অসামরিক জনগণের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন যে, যদিও ইউক্রেন ‘তোমাহক মিসাইল চায়’, এসব মিসাইল পাঠানো হবে ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন আক্রমণ’। তিনি আরও বলেন, তিনি পুতিনকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার কথা ভাবছেন এবং তাকে জানাতে পারেন, ‘যদি এই যুদ্ধের সমাধান না হয়, তাহলে আমি [ইউক্রেনকে] তোমাহক মিসাইল পাঠাবো।’
কিছু সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, এটা সম্ভব নয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলেই তোমাহক মিসাইল পাঠাবে, কারণ তাদের বর্তমান মজুদ ইতোমধ্যে নৌবাহিনী এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহার হচ্ছে। একজন বিশ্লেষক ফাইন্যানশিয়াল টাইমসে বলেছেন, আমেরিকা সম্ভবত মাত্র ২০ থেকে ৫০টি মিসাইল দিতে সক্ষম হবে, যা যুদ্ধের ক্ষেত্রে কোনো বড় পরিবর্তন আনবে না।