দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। তবে চুক্তির কাঠামো ও আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে সিউলে উদ্বেগ বাড়ছে। বড় অঙ্কের বিনিয়োগের ফলে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ও স্থানীয় মুদ্রা উনের ওপর চাপ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কোরীয় কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে উচ্চপর্যায়ের কোরীয় প্রতিনিধি দল
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের নীতি প্রধান কিম ইয়ং-বম এবং শিল্পমন্ত্রী কিম জং-কওয়ান বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তারা অর্থমন্ত্রী কু ইউন-চেওল এবং বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ো হান-কুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবেন। এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য হলো ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির বিস্তারিত চূড়ান্ত করা, যা গত জুলাইয়ে দুই দেশ স্বাক্ষর করেছিল।

বিনিয়োগ কাঠামো ও মুনাফা ভাগাভাগি নিয়ে জটিল আলোচনা
দুই দেশের মধ্যে আলোচনার অগ্রগতি সত্ত্বেও, বিনিয়োগ কাঠামো, মুনাফা বণ্টন এবং চুক্তির আর্থিক শর্তাবলী নিয়ে এখনো মতপার্থক্য রয়ে গেছে। এসব বিষয় নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় চুক্তি কার্যকরের সময়সূচি কিছুটা পিছিয়েছে।
সিউলের আর্থিক ঝুঁকি ও ডলার-সোয়াপ দাবি
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার উদ্বেগ জানিয়েছে যে এত বড় পরিমাণ সরাসরি বিনিয়োগ দেশটির আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ কারণেই সিউল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি ডলার-সোয়াপ ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েছে, যা স্থানীয় মুদ্রা উনের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করবে। তবে ওয়াশিংটন প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। কোরীয় কর্মকর্তারা বলছেন, এই ব্যবস্থা ছাড়া ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে বিপদে ফেলতে পারে।
স্থানীয় মুদ্রায় বিনিয়োগের নতুন সমাধান
সোগাং বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি অধ্যাপক হুর জুং জানান, সাম্প্রতিক আলোচনায় দুই দেশ এমন একটি সমাধান খুঁজে পেয়েছে যাতে দক্ষিণ কোরিয়া নিজের মুদ্রা ব্যবহার করেই যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করতে পারে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটা দূর হবে এবং কোরিয়ার আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।

ভারসাম্য রক্ষাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি যদি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি দুই দেশের জন্যই অর্থনৈতিক মাইলফলক হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে তাড়াহুড়ো করে চুক্তি সম্পন্ন করলে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই বিনিয়োগের কাঠামো, মুদ্রা বিনিময় এবং নীতিগত ভারসাম্য বজায় রাখাই এখন সিউলের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
দক্ষিণ_কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, বাণিজ্য_চুক্তি, বিনিয়োগ, ডলার_সোয়াপ, আন্তর্জাতিক_অর্থনীতি, সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















