০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
নগরজীবনে মানিয়ে নিচ্ছে বন্যপ্রাণী গ্লোবাল কনটেন্টে ঝুঁকছে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম তীব্র তাপে বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ গ্রিডে চাপ বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে বোমা নিক্ষেপ, নিহত এক পথচারী অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটিতে টানা তিন দিন বন্ধ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে বড়দিন, উৎসব ঘিরে শুভেচ্ছা ও বাড়তি নিরাপত্তা উপেক্ষিত রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়ন, বাংলাদেশে অনুমোদন ১৫০ কোটি ডলার

চীনের সোশ্যাল মিডিয়া তারকারা এখন খ্যাতির উল্টো দিকের বাস্তবতা দেখছেন

চীনে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন অনেক সাধারণ মানুষ, কিন্তু সেই খ্যাতি এখন তাদের জন্য হয়ে উঠছে মানসিক চাপ ও ক্লান্তির কারণ। এক সময় সাধারণ দোকানদার লি জুনইয়ং বা ‘চিকেন স্টেক গাই’-এর ঘটনাই যেন এর বাস্তব উদাহরণ—যিনি এক মাসেই হয়ে ওঠেন লাখো অনুসারীর প্রিয়মুখ, কিন্তু পরে খ্যাতির ভারে দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পড়েন।


অবসন্ন ‘চিকেন স্টেক গাই’

সপ্তাহের পর সপ্তাহ ফুটন্ত তেলের সামনে দাঁড়িয়ে কাজ করার পর অবশেষে আর পারলেন না ‘চিকেন স্টেক গাই’। গত সপ্তাহে নিজের দৌইন (চীনের টিকটক সংস্করণ) অ্যাকাউন্টে এক ভিডিও বার্তায় তিনি ঘোষণা দেন—তিনি একদিনের ছুটি নিচ্ছেন।

তিনি শুধু লাগাতার মুরগি ভাজায় ক্লান্ত হয়ে পড়েননি, তার ভক্তদের অবিরাম মনোযোগও তাকে ভীষণ অবসন্ন করে তুলেছিল। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ছুটির সপ্তাহে যখন অসংখ্য মানুষ ছবি তোলার জন্য তাকে ঘিরে ধরেছিল, তখন তিনি হতাশ হয়ে চিৎকার করে বলেন—“বাতাস নেই, আমি দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছি।”


এক মাসেই লি জুনইয়ং থেকে ‘তারকা’

এই ‘চিকেন স্টেক গাই’ আসলে মাত্র এক মাস আগেও ছিলেন লি জুনইয়ং, জিয়াংসি প্রদেশের জিংদেজেন শহরের এক সাধারণ রাস্তার দোকানদার। ছোট্ট একটি দোকানে তিনি জীবিকার তাগিদে ভাজা চিকেন স্টেক বিক্রি করতেন। ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি দৌইন অ্যাপে নিজের অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং এরপর থেকেই শুরু হয় জনপ্রিয়তার ঝড়।

তার নাটকীয় হাতের অঙ্গভঙ্গি, নিখুঁত রান্নার দক্ষতা এবং রসিক ভঙ্গির সংলাপ—সব মিলিয়ে মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায়। তিনি ক্রেতাদের বলতেন, “তুমি আমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারো, কিন্তু আমার খাবারকে নয়,” কিংবা “ছাত্ররা এক ইউয়ান ছাড় পাবে, তবে রাত বারোটার পর এলে পুরো দাম দিতে হবে।” মাত্র ২৩টি ভিডিও আপলোড করেই তিনি ১০ লক্ষাধিক অনুসারী এবং ৫০ লক্ষাধিক লাইক অর্জন করেন।


সরকারের নজরে ও প্রচারণায় অন্তর্ভুক্তি

এই জনপ্রিয়তা স্থানীয় সরকারকেও নাড়া দেয়। জিয়াংসি প্রদেশের জিংদেজেন শহরের পর্যটন দপ্তর ২৮ সেপ্টেম্বর লি জুনইয়ংকে এক সেমিনারে আমন্ত্রণ জানায় এবং তাকে শহরের “প্রচার কর্মকর্তা” হওয়ার প্রস্তাব দেয়।


খ্যাতির ভারে ক্লান্তি

তবে কয়েক দিনের মধ্যেই এই খ্যাতি তার জন্য ভারী হয়ে ওঠে। খবর আসে, “গোল্ডেন উইক (জাতীয় ছুটি)” চলাকালে তার দোকানে খাওয়ার জন্য মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিচ্ছে—এমনকি লাইনে জায়গা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ ইউয়ান (প্রায় ২১ মার্কিন ডলার) দামে। ব্লগাররা ছবি বা ভিডিও তোলার জন্য কাজের মাঝে তাকে বারবার বাধা দিচ্ছিল। কেউ কেউ তার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা শুরু করেছিল, আবার কেউ মিথ্যা গুজব ছড়াতে থাকে।


খ্যাতির উল্টো দিকের বাস্তবতা

এই ঘটনাগুলো এখন চীনের এক বৃহত্তর বাস্তবতার প্রতিফলন—যেখানে সাধারণ মানুষ রাতারাতি তারকা বনে যাচ্ছে, কিন্তু খ্যাতির সঙ্গে আসা মানসিক চাপ, গোপনীয়তা হারানো ও সামাজিক চাপের সঙ্গে লড়াই করতে পারছে না।


#চীন #সোশ্যালমিডিয়া #দৌইন #খ্যাতিরউল্টোদিক #জিংদেজেন #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

নগরজীবনে মানিয়ে নিচ্ছে বন্যপ্রাণী

চীনের সোশ্যাল মিডিয়া তারকারা এখন খ্যাতির উল্টো দিকের বাস্তবতা দেখছেন

০২:৪৫:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

চীনে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন অনেক সাধারণ মানুষ, কিন্তু সেই খ্যাতি এখন তাদের জন্য হয়ে উঠছে মানসিক চাপ ও ক্লান্তির কারণ। এক সময় সাধারণ দোকানদার লি জুনইয়ং বা ‘চিকেন স্টেক গাই’-এর ঘটনাই যেন এর বাস্তব উদাহরণ—যিনি এক মাসেই হয়ে ওঠেন লাখো অনুসারীর প্রিয়মুখ, কিন্তু পরে খ্যাতির ভারে দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পড়েন।


অবসন্ন ‘চিকেন স্টেক গাই’

সপ্তাহের পর সপ্তাহ ফুটন্ত তেলের সামনে দাঁড়িয়ে কাজ করার পর অবশেষে আর পারলেন না ‘চিকেন স্টেক গাই’। গত সপ্তাহে নিজের দৌইন (চীনের টিকটক সংস্করণ) অ্যাকাউন্টে এক ভিডিও বার্তায় তিনি ঘোষণা দেন—তিনি একদিনের ছুটি নিচ্ছেন।

তিনি শুধু লাগাতার মুরগি ভাজায় ক্লান্ত হয়ে পড়েননি, তার ভক্তদের অবিরাম মনোযোগও তাকে ভীষণ অবসন্ন করে তুলেছিল। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ছুটির সপ্তাহে যখন অসংখ্য মানুষ ছবি তোলার জন্য তাকে ঘিরে ধরেছিল, তখন তিনি হতাশ হয়ে চিৎকার করে বলেন—“বাতাস নেই, আমি দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছি।”


এক মাসেই লি জুনইয়ং থেকে ‘তারকা’

এই ‘চিকেন স্টেক গাই’ আসলে মাত্র এক মাস আগেও ছিলেন লি জুনইয়ং, জিয়াংসি প্রদেশের জিংদেজেন শহরের এক সাধারণ রাস্তার দোকানদার। ছোট্ট একটি দোকানে তিনি জীবিকার তাগিদে ভাজা চিকেন স্টেক বিক্রি করতেন। ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি দৌইন অ্যাপে নিজের অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং এরপর থেকেই শুরু হয় জনপ্রিয়তার ঝড়।

তার নাটকীয় হাতের অঙ্গভঙ্গি, নিখুঁত রান্নার দক্ষতা এবং রসিক ভঙ্গির সংলাপ—সব মিলিয়ে মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায়। তিনি ক্রেতাদের বলতেন, “তুমি আমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারো, কিন্তু আমার খাবারকে নয়,” কিংবা “ছাত্ররা এক ইউয়ান ছাড় পাবে, তবে রাত বারোটার পর এলে পুরো দাম দিতে হবে।” মাত্র ২৩টি ভিডিও আপলোড করেই তিনি ১০ লক্ষাধিক অনুসারী এবং ৫০ লক্ষাধিক লাইক অর্জন করেন।


সরকারের নজরে ও প্রচারণায় অন্তর্ভুক্তি

এই জনপ্রিয়তা স্থানীয় সরকারকেও নাড়া দেয়। জিয়াংসি প্রদেশের জিংদেজেন শহরের পর্যটন দপ্তর ২৮ সেপ্টেম্বর লি জুনইয়ংকে এক সেমিনারে আমন্ত্রণ জানায় এবং তাকে শহরের “প্রচার কর্মকর্তা” হওয়ার প্রস্তাব দেয়।


খ্যাতির ভারে ক্লান্তি

তবে কয়েক দিনের মধ্যেই এই খ্যাতি তার জন্য ভারী হয়ে ওঠে। খবর আসে, “গোল্ডেন উইক (জাতীয় ছুটি)” চলাকালে তার দোকানে খাওয়ার জন্য মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিচ্ছে—এমনকি লাইনে জায়গা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ ইউয়ান (প্রায় ২১ মার্কিন ডলার) দামে। ব্লগাররা ছবি বা ভিডিও তোলার জন্য কাজের মাঝে তাকে বারবার বাধা দিচ্ছিল। কেউ কেউ তার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা শুরু করেছিল, আবার কেউ মিথ্যা গুজব ছড়াতে থাকে।


খ্যাতির উল্টো দিকের বাস্তবতা

এই ঘটনাগুলো এখন চীনের এক বৃহত্তর বাস্তবতার প্রতিফলন—যেখানে সাধারণ মানুষ রাতারাতি তারকা বনে যাচ্ছে, কিন্তু খ্যাতির সঙ্গে আসা মানসিক চাপ, গোপনীয়তা হারানো ও সামাজিক চাপের সঙ্গে লড়াই করতে পারছে না।


#চীন #সোশ্যালমিডিয়া #দৌইন #খ্যাতিরউল্টোদিক #জিংদেজেন #সারাক্ষণরিপোর্ট