সাময়িক অস্ত্রবিরতির চুক্তি
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান বুধবার ৪৮ ঘণ্টার জন্য সাময়িক অস্ত্রবিরতির চুক্তি করেছে, যা সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং সাম্প্রতিক আকাশ হামলা ও মাটির লড়াইয়ের পর স্বাক্ষরিত হয়। এই সংঘর্ষে ১২ জনেরও বেশি আফগান নাগরিক নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছেন।
এটি আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের মধ্যে সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা। ২০২১ সালে তালিবান কাবুলে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই এই ধরনের সংঘর্ষ চলছিল।
পাকিস্তানের অভিযোগ
পাকিস্তান আফগান তালিবান সরকারের প্রতি অভিযোগ তুলেছে যে তারা পাকিস্তানে হামলা চালানো, উগ্রপন্থী গ্রুপগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, যাদের আফগানিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়স্থল রয়েছে। তবে তালিবান এই অভিযোগ অস্বীকার করে, পাকিস্তানকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তোলে এবং তাদের বিরুদ্ধে সীমান্ত উত্তেজনা সৃষ্টি করার জন্য দায়ী করে।

অস্ত্রবিরতির শর্তাবলী
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, কাবুলের অনুরোধে ১৩:০০ GMT থেকে ৪৮ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতি শুরু হবে। আফগান তালিবান প্রশাসনের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, পাকিস্তানের অনুরোধেই এই অস্ত্রবিরতি হয়েছে এবং আফগান বাহিনী একে সম্মান করবে, যদি পাকিস্তান কোনো আক্রমণ না করে।
সীমান্তে নতুন আক্রমণ
এর আগে, বুধবার পাকিস্তান কন্দাহারের স্পিন বোলডাক শহরে বিমান হামলা চালায়, যার ফলে একাধিক আফগান তালিবান সৈন্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। তবে আফগানিস্তান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ওই হামলায় শহরের আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাকিস্তান আরেকটি বিমান হামলা চালিয়েছে কাবুলে, তবে হামলার লক্ষ্য কি ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আহতদের চিকিৎসা
কাবুলের EMERGENCY হাসপাতালে ৪০ জন আহত রোগী ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ডেজান পানিক, জানান, তারা অনেক আহত রোগী পেয়েছেন, যাদের শরীরে গুলি, বিস্ফোরণের ক্ষত ও দেহে আঘাত রয়েছে।

অভিযানের দায়
প্রতিটি পক্ষ একে অপরকে মাটির হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছে। আফগানিস্তান তালিবান দাবি করেছে যে, পাকিস্তানি বাহিনী স্পিন বোলডাকে হামলা চালিয়েছে, যার ফলে ১২ জন আফগান নাগরিক নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছে। পাকিস্তান অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে, “তালিবান বাহিনীর” আক্রমণে তাদের সীমান্তের চমন শহরে আক্রমণ চালিয়েছে, যার ফলে ৪ জন পাকিস্তানি নাগরিক আহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
গত সপ্তাহের সংঘর্ষে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ প্রকাশ পায়। চীন তার নাগরিকদের এবং বিনিয়োগকে সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, রাশিয়া সীমান্তে শান্তির আহ্বান জানিয়েছে, এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে সাহায্য করতে চান বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া, আফগান তালিবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুঠাক্কি পাকিস্তানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত সফর করেন, যেখানে ভারত তাদের কাবুল দূতাবাস পুনরায় খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয়, এবং তালিবান তাদের কূটনীতিকদের ভারত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
#ট্রান্সবর্ডার_সংঘর্ষ #আফগানিস্তান_পাকিস্তান #অস্ত্রবিরতি #পাকিস্তান #তালিবান #আন্তর্জাতিক_উদ্বেগ
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















