গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগের মামলা বাতিল
যুক্তরাজ্যের দুই নাগরিকের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর নানা প্রশ্ন উঠেছে কেন ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস (সিপিএস) তাদের বিরুদ্ধে মামলা চালায়নি, যদিও যুক্তরাজ্যের উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন যে, বেইজিংয়ের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি “যুক্তরাজ্যের স্বার্থ এবং নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
বৃহস্পতিবার রাতে কির স্টারমারের দ্বারা প্রকাশিত তিনটি সাক্ষ্য বিবৃতির মাধ্যমে এই বিতর্কের সমাপ্তি আনার চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি সাক্ষ্য বিবৃতিতে লেখা ছিল: “তুমি এখন গুপ্তচরবৃত্তির অঞ্চলে আছো।” এই মামলা বাতিল হওয়ার পেছনে যুক্তি ছিল, প্রসিকিউটররা শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা থেকে যথেষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেননি, যা নিশ্চিত করতো যে বেইজিং যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি “হুমকি।”
বিশেষ সাক্ষ্য বিবৃতির গুরুত্ব
তিনটি সাক্ষ্য বিবৃতির মধ্যে একটি আগস্টে লেখা হয়েছিল, যা স্টিফেন পার্কিনসনের ভাষ্যমতে, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে প্রয়োজনীয় ভাষার কাছাকাছি ছিল। এতে চীনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে “উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যারা যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে বড় আকারে গুপ্তচরবৃত্তি পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে চীনের রাষ্ট্রের স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত করার কথাও বলা হয়েছে।
সরকার ও বিরোধী দলগুলোর প্রতিক্রিয়া
গত মাসে এই মামলা বাতিল হয়ে যাওয়ার পর কনজারভেটিভ দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছিল যে, লেবার পার্টি, কির স্টারমার এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাথন পওয়েল চীনের সাথে একটি ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে চেয়েছিলেন, যার কারণে ম্যাথিউ কলিন্সের দেয়া সাক্ষ্য প্রকাশ হতে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগের উত্তরে স্টারমার বলেন, “এটি পুরোপুরি মিথ্যা,” এবং দাবি করেন যে কনজারভেটিভ সরকারের ভুলের কারণে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সিপিএসের সিদ্ধান্ত এবং বিচারক সিদ্ধান্ত
মামলা বাতিল করার সিদ্ধান্তের আগেই জানা গিয়েছিল যে, বিচারের সময় শেষ হয়ে আসছে এবং সিপিএস এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। প্রধানমন্ত্রী তার মুখপাত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন, “এটি বিচারপতি বা সিপিএসের বিষয়, সরকার এর মধ্যে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।”
আসামিদের পরিচিতি
ক্রিস্টোফার ক্যাশ এবং ক্রিস্টোফার বেরি, যারা প্রথমে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যদের গবেষক হিসেবে কাজ করছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে তারা বারবার তাদের নির্দোষতা দাবি করেছে। ক্যাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ব্রিটিশ রাজনীতি, চীনের নীতি এবং সংসদ সম্পর্কিত তথ্য চীনের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাচার করেছেন।
চীনের প্রতিক্রিয়া
চীনের যুক্তরাজ্য দূতাবাসের একজন মুখপাত্র জানান, এই অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং তাদের সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নাটক সৃষ্টি করতে কিছু বিশেষ ব্যক্তি ব্রিটেনে এটি চালাচ্ছে।