০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
তীব্র তাপে বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ গ্রিডে চাপ বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে বোমা নিক্ষেপ, নিহত এক পথচারী অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটিতে টানা তিন দিন বন্ধ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে বড়দিন, উৎসব ঘিরে শুভেচ্ছা ও বাড়তি নিরাপত্তা উপেক্ষিত রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়ন, বাংলাদেশে অনুমোদন ১৫০ কোটি ডলার তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে সরকারের স্বাগত, পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস গাজীপুরে জাসাস নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

জেলেনস্কির হোয়াইট হাউস সফরের আগেই ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের ঘোষণা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য বুদাপেস্টে আরেকটি শীর্ষ বৈঠকে বসার বিষয়ে একমত হয়েছেন। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা টেলিফোন আলোচনার পর ট্রাম্প বলেন, “এই আলোচনা ছিল ‘ফলপ্রসূ’।” ঘটনাটি ঘটেছে এমন সময়, যখন কিয়েভের জন্য নতুন মার্কিন সামরিক সহায়তা নিয়ে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

দুই নেতার মধ্যে নতুন বৈঠকের পরিকল্পনা

ট্রাম্প জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে তার সাক্ষাৎ হতে পারে। ক্রেমলিনও বৈঠকের পরিকল্পনা নিশ্চিত করেছে, যদিও তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সারা জীবন চুক্তি করেছি। আশা করি, এবারও একটা সমঝোতায় পৌঁছানো যাবে।”

এই বৈঠকের ঘোষণা এসেছে এমন সময়ে, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার হোয়াইট হাউসে পৌঁছানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন—তার লক্ষ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নতুন সামরিক সহায়তা, বিশেষ করে দীর্ঘপাল্লার ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্রের অনুমোদন পাওয়া।

নতুন সহায়তা অনিশ্চিত

Trump prepares to meet Zelensky at White House as US President hails 'great  progress' after Putin call

গত কয়েক দিনে হোয়াইট হাউসের অবস্থান জেলেনস্কির অনুরোধের প্রতি সহানুভূতিপূর্ণ বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নমনীয় মনোভাব সেই পরিকল্পনায় সন্দেহ তৈরি করেছে এবং ইউরোপে মার্কিন অবস্থান নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এ বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিলেও পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর বহুবার তা স্থগিত করেছেন। আগস্টে আলাস্কায় অনুষ্ঠিত আগের বৈঠকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও কোনো ফল হয়নি।

তিনপক্ষীয় বৈঠক—ট্রাম্প, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে—যা ওয়াশিংটনের লক্ষ্য ছিল, তাও বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমানে এমন কোনো বৈঠকের পরিকল্পনাও নেই।

নিজেকে শান্তিদূত হিসেবে তুলে ধরছেন ট্রাম্প

ট্রাম্প নিজেকে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় সফল কূটনীতিক হিসেবে উপস্থাপন করছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিকে নিজের সাফল্য হিসেবে দেখাচ্ছেন। তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়ার ২০২২ সালের ইউক্রেন আক্রমণ থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ অনেক আগেই থামানো সম্ভব ছিল।

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র কর্মকর্তা ড্যান ফ্রিড বলেন, “পুতিন মূলত রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর উদ্যোগকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। এখন দেখা যাক, কাল কী হয়—কিন্তু যুদ্ধবিরতির পথে অগ্রগতি আপাতত থেমে গেছে।”

Russia says Kursk attack means no peace talks with Ukraine for now, but  keeps proposals on table | Reuters

ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে পুতিনের সতর্কবার্তা

ক্রেমলিনের মুখপাত্র ইউরি উশাকভ জানান, ফোনালাপে পুতিন ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনকে দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা শান্তি প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করবে এবং মার্কিন-রুশ সম্পর্কের ক্ষতি করবে।

ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের রসিকভাবে বলেন, “আপনারা কী ভাবেন, সে কি বলেছে ‘দয়া করে টমাহক বিক্রি করো’? না, সে চায় না এগুলো ইউক্রেনকে দেওয়া হোক—এগুলো ভয়ঙ্কর অস্ত্র।”

এদিকে জেলেনস্কি মন্তব্য করেছেন, “মস্কো বুঝতেই পারছে ‘টমাহক’ নাম শুনলেই তাকে আলোচনায় ফিরতে হবে।”

বৈঠকের স্থান নিয়ে বিতর্ক

বুদাপেস্টে বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্তটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। কিছু দেশ পুতিনকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে, ফলে তার ভ্রমণ সীমিত। অন্যদিকে ইউক্রেন ও হাঙ্গেরির সম্পর্কও এখন টানাপোড়েনপূর্ণ। সম্প্রতি জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, হাঙ্গেরীয় ড্রোন ইউক্রেনের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে।

Hungarian prime minister arrives in Moscow with mediator mission on Ukraine

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান জবাবে বলেন, “ইউক্রেন কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র নয়।” তিনি বরাবরই রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন এবং ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক নেতার বিপরীতে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

অরবান সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “দুই প্রেসিডেন্টের পরিকল্পিত বৈঠক শান্তিপ্রিয় বিশ্ববাসীর জন্য সুখবর।” পরে তিনি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া শান্তি সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে।

কূটনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি

আগামী সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের নেতৃত্বে দুদেশের কূটনৈতিক দলগুলোর প্রাথমিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এরপরেই ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের সময় নির্ধারিত হবে।

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ জানিয়েছেন, শুক্রবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে তিনি রাশিয়া আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন।

How does Ukraine war end? Experts say 2023 could prove decisive, dangerous  — Harvard Gazette

ইউক্রেনের পাল্টা কৌশল ও আক্রমণ

ইউক্রেন যুদ্ধ এখন চার বছরের প্রান্তে। কিয়েভ ও মস্কো উভয় পক্ষই পরস্পরের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। ন্যাটো এখনো রাশিয়ার ধারাবাহিক বিমান হামলার যথাযথ জবাব দিতে পারছে না।

জেলেনস্কি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রাশিয়া ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ৩৭টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনায়। পাল্টা হামলায় ইউক্রেন সারাতোভ অঞ্চলের একটি তেল শোধনাগারে আঘাত হেনেছে।

কিয়েভ এখন এমন দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র চাচ্ছে, যা থেকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোসহ বড় শহরগুলোতে হামলা চালানো সম্ভব।

ভারতের ভূমিকাও আলোচনায়

সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে ট্রাম্প দাবি করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন, এবং তার প্রশাসন চীনের ওপরও একই চাপ সৃষ্টি করবে। তবে ভারত এখনো এ বিষয়ে কোনো নিশ্চিত মন্তব্য করেনি। রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার হলো ভারত ও চীন—ফলে এই পদক্ষেপের কূটনৈতিক প্রভাবও গভীর হতে পারে।

 

# ট্রাম্প, পুতিন, ইউক্রেন যুদ্ধ, জেলেনস্কি, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, বুদাপেস্ট বৈঠক, শান্তি আলোচনা, হোয়াইট হাউস, অরবান, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, সারাক্ষণ রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

তীব্র তাপে বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ গ্রিডে চাপ

জেলেনস্কির হোয়াইট হাউস সফরের আগেই ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের ঘোষণা

০৪:৩৩:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য বুদাপেস্টে আরেকটি শীর্ষ বৈঠকে বসার বিষয়ে একমত হয়েছেন। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা টেলিফোন আলোচনার পর ট্রাম্প বলেন, “এই আলোচনা ছিল ‘ফলপ্রসূ’।” ঘটনাটি ঘটেছে এমন সময়, যখন কিয়েভের জন্য নতুন মার্কিন সামরিক সহায়তা নিয়ে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

দুই নেতার মধ্যে নতুন বৈঠকের পরিকল্পনা

ট্রাম্প জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে তার সাক্ষাৎ হতে পারে। ক্রেমলিনও বৈঠকের পরিকল্পনা নিশ্চিত করেছে, যদিও তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সারা জীবন চুক্তি করেছি। আশা করি, এবারও একটা সমঝোতায় পৌঁছানো যাবে।”

এই বৈঠকের ঘোষণা এসেছে এমন সময়ে, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার হোয়াইট হাউসে পৌঁছানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন—তার লক্ষ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নতুন সামরিক সহায়তা, বিশেষ করে দীর্ঘপাল্লার ‘টমাহক’ ক্ষেপণাস্ত্রের অনুমোদন পাওয়া।

নতুন সহায়তা অনিশ্চিত

Trump prepares to meet Zelensky at White House as US President hails 'great  progress' after Putin call

গত কয়েক দিনে হোয়াইট হাউসের অবস্থান জেলেনস্কির অনুরোধের প্রতি সহানুভূতিপূর্ণ বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নমনীয় মনোভাব সেই পরিকল্পনায় সন্দেহ তৈরি করেছে এবং ইউরোপে মার্কিন অবস্থান নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এ বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিলেও পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর বহুবার তা স্থগিত করেছেন। আগস্টে আলাস্কায় অনুষ্ঠিত আগের বৈঠকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও কোনো ফল হয়নি।

তিনপক্ষীয় বৈঠক—ট্রাম্প, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে—যা ওয়াশিংটনের লক্ষ্য ছিল, তাও বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমানে এমন কোনো বৈঠকের পরিকল্পনাও নেই।

নিজেকে শান্তিদূত হিসেবে তুলে ধরছেন ট্রাম্প

ট্রাম্প নিজেকে আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় সফল কূটনীতিক হিসেবে উপস্থাপন করছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিকে নিজের সাফল্য হিসেবে দেখাচ্ছেন। তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়ার ২০২২ সালের ইউক্রেন আক্রমণ থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ অনেক আগেই থামানো সম্ভব ছিল।

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র কর্মকর্তা ড্যান ফ্রিড বলেন, “পুতিন মূলত রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর উদ্যোগকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। এখন দেখা যাক, কাল কী হয়—কিন্তু যুদ্ধবিরতির পথে অগ্রগতি আপাতত থেমে গেছে।”

Russia says Kursk attack means no peace talks with Ukraine for now, but  keeps proposals on table | Reuters

ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে পুতিনের সতর্কবার্তা

ক্রেমলিনের মুখপাত্র ইউরি উশাকভ জানান, ফোনালাপে পুতিন ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনকে দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা শান্তি প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করবে এবং মার্কিন-রুশ সম্পর্কের ক্ষতি করবে।

ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের রসিকভাবে বলেন, “আপনারা কী ভাবেন, সে কি বলেছে ‘দয়া করে টমাহক বিক্রি করো’? না, সে চায় না এগুলো ইউক্রেনকে দেওয়া হোক—এগুলো ভয়ঙ্কর অস্ত্র।”

এদিকে জেলেনস্কি মন্তব্য করেছেন, “মস্কো বুঝতেই পারছে ‘টমাহক’ নাম শুনলেই তাকে আলোচনায় ফিরতে হবে।”

বৈঠকের স্থান নিয়ে বিতর্ক

বুদাপেস্টে বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্তটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। কিছু দেশ পুতিনকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে, ফলে তার ভ্রমণ সীমিত। অন্যদিকে ইউক্রেন ও হাঙ্গেরির সম্পর্কও এখন টানাপোড়েনপূর্ণ। সম্প্রতি জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, হাঙ্গেরীয় ড্রোন ইউক্রেনের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে।

Hungarian prime minister arrives in Moscow with mediator mission on Ukraine

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান জবাবে বলেন, “ইউক্রেন কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র নয়।” তিনি বরাবরই রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন এবং ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক নেতার বিপরীতে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

অরবান সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “দুই প্রেসিডেন্টের পরিকল্পিত বৈঠক শান্তিপ্রিয় বিশ্ববাসীর জন্য সুখবর।” পরে তিনি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া শান্তি সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে।

কূটনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি

আগামী সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের নেতৃত্বে দুদেশের কূটনৈতিক দলগুলোর প্রাথমিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এরপরেই ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের সময় নির্ধারিত হবে।

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ জানিয়েছেন, শুক্রবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে তিনি রাশিয়া আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন।

How does Ukraine war end? Experts say 2023 could prove decisive, dangerous  — Harvard Gazette

ইউক্রেনের পাল্টা কৌশল ও আক্রমণ

ইউক্রেন যুদ্ধ এখন চার বছরের প্রান্তে। কিয়েভ ও মস্কো উভয় পক্ষই পরস্পরের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। ন্যাটো এখনো রাশিয়ার ধারাবাহিক বিমান হামলার যথাযথ জবাব দিতে পারছে না।

জেলেনস্কি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রাশিয়া ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ৩৭টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনায়। পাল্টা হামলায় ইউক্রেন সারাতোভ অঞ্চলের একটি তেল শোধনাগারে আঘাত হেনেছে।

কিয়েভ এখন এমন দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র চাচ্ছে, যা থেকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোসহ বড় শহরগুলোতে হামলা চালানো সম্ভব।

ভারতের ভূমিকাও আলোচনায়

সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে ট্রাম্প দাবি করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন, এবং তার প্রশাসন চীনের ওপরও একই চাপ সৃষ্টি করবে। তবে ভারত এখনো এ বিষয়ে কোনো নিশ্চিত মন্তব্য করেনি। রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার হলো ভারত ও চীন—ফলে এই পদক্ষেপের কূটনৈতিক প্রভাবও গভীর হতে পারে।

 

# ট্রাম্প, পুতিন, ইউক্রেন যুদ্ধ, জেলেনস্কি, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, বুদাপেস্ট বৈঠক, শান্তি আলোচনা, হোয়াইট হাউস, অরবান, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, সারাক্ষণ রিপোর্ট