রক মিথ, গিটার টোন—এক উত্তরাধিকার
কিস্-এর মূল গিটারিস্ট এস ফ্রেলি ৭৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহে স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি কয়েকটি শো বাতিল করেছিলেন; মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সহকর্মী ও ভক্তদের শ্রদ্ধাবার্তা সোশালে ভেসে আসে। সত্তরের দশকের অ্যারেনা রকের যে দাপুটে সোনিক সিগনেচার, তার বড় অংশটিই ফ্রেলির হাতে তৈরি—কঠিন হলেও গাওয়া যায় এমন লাইন, মেলোডিক হুক, আর এমন ভায়ব্রাটো যা একবার শুনলেই মনে থাকে। ‘স্পেসম্যান’ চরিত্র শুধু মেকআপ ছিল না; সেটি ছিল একটি ব্র্যান্ড, যা স্টেডিয়াম থেকে মার্চেনডাইজ—সবখানে ছড়িয়ে পড়েছিল। ‘নিউ ইয়র্ক গ্রুভ’-এর মতো সলো কাজ গ্ল্যাম-পপের দিকে সুর টেনে নিয়েও ধার কমায়নি।
কিস্-এর বিশাল স্টেজস্পেক্ট্যাকল প্রায়ই ব্যান্ডের বাজনাকে ঢেকে দিয়েছে—এ অভিযোগ পুরোনো। তবু গিটারবাদীরা জানে কেন ফ্রেলির বাজনা টিকে আছে: সংযত ফিল, নিখুঁত বেন্ড, এবং গাওয়া যায় এমন রিফ। তার মৃত্যু সেই তর্কও ফিরিয়ে এনেছে—বিদায়ী ট্যুর, বদলে যাওয়া লাইনআপ, আইপি-চালিত ফ্র্যাঞ্চাইজিং—যেখানে একটি ব্যান্ড ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক কেস স্টাডিতে পরিণত হয়েছে। ভক্তদের কাছে তবে মূল প্রশ্ন একটাই—ফ্রেলির টোনই কিস্-এর আতশবাজিকে গান বানিয়ে দিয়েছিল।
পুনরাবিষ্কার, আর্কাইভ আর প্রজন্ম-সেতু
শেষ দিকের শোগুলোর ফুটেজে দেখা যায়, ফ্রেলি অনেক পরিচিত গান বাজিয়েছেন সংযত দক্ষতায়—দশকের অভিজ্ঞতা থেকে জন্ম নেওয়া এক ধরনের মিতব্যয়। এই মিতব্যয়ই ক্লাসিক রককে প্লেলিস্ট-প্রজন্মে পৌঁছে দেয়, যাদের বড় হওয়া রেকর্ড দোকানে নয়, অ্যালগরিদমে। অনুমান করা যায় ভিনাইল বিক্রি ও স্ট্রিমিংয়ে তার ক্যাটালগের উল্লম্ফন হবে, লাইভ রেকর্ডিং নতুন করে আলোচনায় আসবে। গিটার কমিউনিটিতে শোকবার্তা যেমন থাকবে, তেমনি থাকবে ‘লেস পল সেটআপ’ থেকে অ্যাম্প চয়েস—সবকিছুর বিশ্লেষণ, যেখানে ঝলক নয়—ফিলকেই বড় করে দেখা হবে।
শেষ পর্যন্ত রয়ে যাবে এই বাস্তবতা—তিনি এক প্রজন্মকে শেখালেন, বড় হয়ে ওঠা মানে বড় হয়ে বাজানোও। ব্র্যান্ডের আবরণ, কস্টিউমের চাকচিক্য পেরিয়েও যে ক’টি অমর রিফ থাকে, তার বেশ ক’টির স্রষ্টাই এস ফ্রেলি। বিদায় স্পেসবাজ, তোমার সুর বাজতেই থাকবে।