০২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের বৃদ্ধি: কারণ ও প্রভাব বিমানবন্দর অগ্নিকাণ্ডে রপ্তানিকারকদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ তৎপরতা যশোর এখন বাংলাদেশের শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র ওমানের দুর্ঘটনায় নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে আট মাস পর ভারতে আটক ১২ বাংলাদেশি নাবিকের দেশে ফেরা নারী অধিকার ও শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্নে ইলা মিত্রের শতবর্ষে নওগাঁয় র‌্যালি যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে ভেনিজুয়েলা: সামরিক প্রস্তুতি ও দুর্বলতা ভিক্টোরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুধ খামার বিক্রয়: লাভজনক সুযোগ এবং সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য গঠনমূলক পদক্ষপে ভারতের রুশ তেল কেনার বিষয়ে ট্রাম্পের দাবির প্রতিক্রিয়া ইরানে পুরানো ক্ষত পুনরুজ্জীবিত: মার্কিন ও ইসরাইলি আক্রমণে উদ্বেগের নতুন ঢেউ

আশ্রয়হীন আফগান পরিবারগুলো: বহিষ্কার নীতি ও আইনি শূন্যতার ফাঁদে বন্দি জীবন

রাজধানীর মাঝেই শরণার্থীদের খোলা আকাশের নিচে জীবন

ইসলামাবাদের অভিজাত প্রশাসনিক অঞ্চল ‘রেড জোন’-এর কয়েক মাইল দূরেই আর্জেন্টিনা পার্কে এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে প্রায় ৩০০ আফগান শরণার্থী পরিবার। প্লাস্টিকের ছাউনি টানিয়ে তারা ঘুমায় বৃষ্টিভেজা মাটিতে, যেখানে নেই শৌচাগার, চিকিৎসা বা আইনি সুরক্ষা। পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান বহিষ্কার অভিযানের মধ্যে তারা আটকে আছে—যে তালেবান শাসন থেকে পালিয়ে এসেছিল, সেই দেশেই এখন ফেরত পাঠানো হচ্ছে তাদের।


শরণার্থীদের জীবনের প্রতিচ্ছবি

১৯ বছর বয়সী উস্‌ওয়া কোহিস্তানি বৃষ্টির পর ভিজে ঘাসের উপরে বসে দারি ভাষায় কবিতা লিখছিল নিজের বাস্তবতা নিয়ে। চারপাশে ঝুলছে ভেজা কাপড়, মশারির নিচে রাখা পাসপোর্ট ও সনদপত্র।
“আমরা কাজ করতে পারি না, বাজারে গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়,” বলে কোহিস্তানি। “তারপর জোর করে সীমান্তে পাঠিয়ে দেয় আফগানিস্তানে।”


সরকারি নীতি: বহিষ্কারের পরিকল্পনা

বর্তমান এই শিবির মূলত পাকিস্তান সরকারের ‘ইলিগ্যাল ফরেনার্স রিপ্যাট্রিয়েশন প্ল্যান’-এর ফল। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চালু হওয়া এই নীতিতে অবৈধ আফগানদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় অক্টোবরের মধ্যে; না মানলে জোরপূর্বক বহিষ্কার।
সে সময় পাকিস্তানে প্রায় ৪০ লাখ আফগান বসবাস করছিল—যারা গত চার দশকে বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নিয়েছিল, বিশেষত ২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর।

নীতিটি আফগানদের তিন ভাগে ভাগ করে—
১) অবৈধ শরণার্থী
২) আফগান সিটিজেন কার্ড (ACC) ধারী
৩) প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন (PoR) কার্ড ধারী

প্রথম ধাপে ২০২৩ সালের অক্টোবরে অবৈধদের ফেরত পাঠানো শুরু হয়। কয়েক মাসেই পাঁচ লাখের বেশি আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়। ২০২৫ সালের এপ্রিলে শুরু হয় ACC ধারীদের ওপর অভিযান, আর জুনে তৃতীয় ধাপে PoR কার্ডধারীদের মেয়াদ শেষ করে নবায়ন বন্ধ করা হয়।


জাতিসংঘের তথ্য: লাখো মানুষের প্রত্যাবর্তন

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১৫ লাখেরও বেশি আফগান পাকিস্তান থেকে ফিরে গেছে। শুধু ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহেই ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ তোরখাম ও চামান সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছে।
এর মধ্যে ৫৬ শতাংশের কাছেই ছিল PoR কার্ড—অর্থাৎ আইনত নিবন্ধিত শরণার্থীরাও বাধ্য হয়ে দেশে ফিরেছে। ফলে এখন ১৪ লাখের বেশি নিবন্ধিত আফগান শরণার্থী কাগজপত্রহীন অবস্থায় রয়েছে পাকিস্তানে।


পার্কের জীবন: এক রাতের বৃষ্টি, এক অনন্ত দুর্ভোগ

কাবুলের নূরা খানধারি দুই মাস ধরে পার্কে বাস করছেন। “গতরাতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছিল,” তিনি বলেন। “শিশুরা ভয় পেয়ে সারারাত কেঁদেছে।”
বাসিন্দাদের হিসেবে, এখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ১৮০ জনের বেশি। বিধবা লিনা মেহরাবজাদে বলেন, “প্রায় প্রতিদিন আমরা মিলে একবেলা খাবার জোটাতে পারি। প্রায় প্রতিটি শিশুই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় হাসপাতাল চিকিৎসা দেয় না।”
নারীরা দিনে একবার পার্শ্ববর্তী মসজিদ বা হাসপাতালে গিয়ে টয়লেট ব্যবহার করেন। ঘুমানো, গোসল বা পোশাক পাল্টানোর কোনো গোপনীয়তাও নেই।


‘তালেবান শাসনে ফেরার প্রশ্নই ওঠে না’

“তালেবান শাসনে ফেরার কোনো প্রশ্নই ওঠে না,” বলেন মেহরাবজাদে। “আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সেখানে নেই।”


পুনর্বাসনের জট: সহায়তা পেতে বছর গড়িয়ে যায়

মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক হাসিনা রাফি ২০২২ সালে হুমকির মুখে পাকিস্তানে পালিয়ে আসেন। “জাতিসংঘ আমাদের নিবন্ধন করেছিল, কিন্তু এখন তাদের কোনো সহায়তা নেই,” তিনি বলেন।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ায় সদ্য পুনর্বাসিত মানবাধিকার কর্মী সানাম কবিরি বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল এক ‘আমলাতান্ত্রিক গোলকধাঁধা’। “প্রতি দুই মাসে আমাদের সিম বন্ধ করে দেওয়া হতো,” তিনি বলেন। “ভিসার আবেদন করেও বারবার প্রত্যাখ্যান পেতাম।”
জাতিসংঘের তথ্যমতে, তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সাধারণত এক থেকে তিন বছর সময় নেয়। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি তাদের পুনর্বাসন কর্মসূচি সীমিত বা স্থগিত করায় আফগানদের বিকল্প আরও কমে গেছে।


আইনি শূন্যতা: কোনো সুরক্ষা নেই, নেই ন্যায়বিচার

পাকিস্তান ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেনি। ফলে তারা ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’-এর আওতায় বিদেশিদের আটক ও বহিষ্কারের ক্ষমতা রাখে— এমনকি শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থীদেরও, যদি তাদের বৈধ কাগজপত্র না থাকে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR)-এর মুখপাত্র কায়সার খান আফ্রিদি বলেন, “আর্জেন্টিনা পার্কে থাকা শরণার্থীদের সহায়তায় একটি আইনি দল কাজ করছে। অধিকাংশ আফগানই এখন সুরক্ষাহীন, তাই আমরা সরকারের কাছে নিবন্ধন ও নথিপত্র ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছি।”
‘নন-রিফাউলমেন্ট’ নীতির আওতায় বিপদের মুখে কাউকে ফেরত পাঠানো উচিত নয়, কিন্তু পাকিস্তান কনভেনশনে স্বাক্ষর না করায় এই নীতির বাধ্যবাধকতা তাদের ওপর নেই।


ফিরে যাওয়ার পথ নেই, সামনেও অনিশ্চয়তা

আর্জেন্টিনা পার্কে সন্ধ্যা নেমে এলে উস্‌ওয়া কোহিস্তানি তার কবিতার খাতা বন্ধ করে। সে পাকিস্তানে এসেছিল নিরাপত্তার আশায়, কিন্তু এখন বাইরে পা রাখলেই হয়রানির ভয়।
“আমরা অপরাধী নই, আমরা শিক্ষিত পরিবার,” বলে সে। “সবচেয়ে বড় কথা, আমরা মানুষ—রাষ্ট্র যেন আমাদের সে ভাবেই দেখে।”


# আফগান_শরণার্থী, পাকিস্তান, মানবাধিকার, ইসলামাবাদ, জাতিসংঘ, তালেবান, অভিবাসন_নীতি, মানবিক_সংকট

জনপ্রিয় সংবাদ

তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের বৃদ্ধি: কারণ ও প্রভাব

আশ্রয়হীন আফগান পরিবারগুলো: বহিষ্কার নীতি ও আইনি শূন্যতার ফাঁদে বন্দি জীবন

১১:৩৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর মাঝেই শরণার্থীদের খোলা আকাশের নিচে জীবন

ইসলামাবাদের অভিজাত প্রশাসনিক অঞ্চল ‘রেড জোন’-এর কয়েক মাইল দূরেই আর্জেন্টিনা পার্কে এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে প্রায় ৩০০ আফগান শরণার্থী পরিবার। প্লাস্টিকের ছাউনি টানিয়ে তারা ঘুমায় বৃষ্টিভেজা মাটিতে, যেখানে নেই শৌচাগার, চিকিৎসা বা আইনি সুরক্ষা। পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান বহিষ্কার অভিযানের মধ্যে তারা আটকে আছে—যে তালেবান শাসন থেকে পালিয়ে এসেছিল, সেই দেশেই এখন ফেরত পাঠানো হচ্ছে তাদের।


শরণার্থীদের জীবনের প্রতিচ্ছবি

১৯ বছর বয়সী উস্‌ওয়া কোহিস্তানি বৃষ্টির পর ভিজে ঘাসের উপরে বসে দারি ভাষায় কবিতা লিখছিল নিজের বাস্তবতা নিয়ে। চারপাশে ঝুলছে ভেজা কাপড়, মশারির নিচে রাখা পাসপোর্ট ও সনদপত্র।
“আমরা কাজ করতে পারি না, বাজারে গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়,” বলে কোহিস্তানি। “তারপর জোর করে সীমান্তে পাঠিয়ে দেয় আফগানিস্তানে।”


সরকারি নীতি: বহিষ্কারের পরিকল্পনা

বর্তমান এই শিবির মূলত পাকিস্তান সরকারের ‘ইলিগ্যাল ফরেনার্স রিপ্যাট্রিয়েশন প্ল্যান’-এর ফল। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চালু হওয়া এই নীতিতে অবৈধ আফগানদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় অক্টোবরের মধ্যে; না মানলে জোরপূর্বক বহিষ্কার।
সে সময় পাকিস্তানে প্রায় ৪০ লাখ আফগান বসবাস করছিল—যারা গত চার দশকে বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নিয়েছিল, বিশেষত ২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর।

নীতিটি আফগানদের তিন ভাগে ভাগ করে—
১) অবৈধ শরণার্থী
২) আফগান সিটিজেন কার্ড (ACC) ধারী
৩) প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন (PoR) কার্ড ধারী

প্রথম ধাপে ২০২৩ সালের অক্টোবরে অবৈধদের ফেরত পাঠানো শুরু হয়। কয়েক মাসেই পাঁচ লাখের বেশি আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়। ২০২৫ সালের এপ্রিলে শুরু হয় ACC ধারীদের ওপর অভিযান, আর জুনে তৃতীয় ধাপে PoR কার্ডধারীদের মেয়াদ শেষ করে নবায়ন বন্ধ করা হয়।


জাতিসংঘের তথ্য: লাখো মানুষের প্রত্যাবর্তন

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১৫ লাখেরও বেশি আফগান পাকিস্তান থেকে ফিরে গেছে। শুধু ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহেই ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ তোরখাম ও চামান সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছে।
এর মধ্যে ৫৬ শতাংশের কাছেই ছিল PoR কার্ড—অর্থাৎ আইনত নিবন্ধিত শরণার্থীরাও বাধ্য হয়ে দেশে ফিরেছে। ফলে এখন ১৪ লাখের বেশি নিবন্ধিত আফগান শরণার্থী কাগজপত্রহীন অবস্থায় রয়েছে পাকিস্তানে।


পার্কের জীবন: এক রাতের বৃষ্টি, এক অনন্ত দুর্ভোগ

কাবুলের নূরা খানধারি দুই মাস ধরে পার্কে বাস করছেন। “গতরাতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছিল,” তিনি বলেন। “শিশুরা ভয় পেয়ে সারারাত কেঁদেছে।”
বাসিন্দাদের হিসেবে, এখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ১৮০ জনের বেশি। বিধবা লিনা মেহরাবজাদে বলেন, “প্রায় প্রতিদিন আমরা মিলে একবেলা খাবার জোটাতে পারি। প্রায় প্রতিটি শিশুই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় হাসপাতাল চিকিৎসা দেয় না।”
নারীরা দিনে একবার পার্শ্ববর্তী মসজিদ বা হাসপাতালে গিয়ে টয়লেট ব্যবহার করেন। ঘুমানো, গোসল বা পোশাক পাল্টানোর কোনো গোপনীয়তাও নেই।


‘তালেবান শাসনে ফেরার প্রশ্নই ওঠে না’

“তালেবান শাসনে ফেরার কোনো প্রশ্নই ওঠে না,” বলেন মেহরাবজাদে। “আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সেখানে নেই।”


পুনর্বাসনের জট: সহায়তা পেতে বছর গড়িয়ে যায়

মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক হাসিনা রাফি ২০২২ সালে হুমকির মুখে পাকিস্তানে পালিয়ে আসেন। “জাতিসংঘ আমাদের নিবন্ধন করেছিল, কিন্তু এখন তাদের কোনো সহায়তা নেই,” তিনি বলেন।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ায় সদ্য পুনর্বাসিত মানবাধিকার কর্মী সানাম কবিরি বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল এক ‘আমলাতান্ত্রিক গোলকধাঁধা’। “প্রতি দুই মাসে আমাদের সিম বন্ধ করে দেওয়া হতো,” তিনি বলেন। “ভিসার আবেদন করেও বারবার প্রত্যাখ্যান পেতাম।”
জাতিসংঘের তথ্যমতে, তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সাধারণত এক থেকে তিন বছর সময় নেয়। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি তাদের পুনর্বাসন কর্মসূচি সীমিত বা স্থগিত করায় আফগানদের বিকল্প আরও কমে গেছে।


আইনি শূন্যতা: কোনো সুরক্ষা নেই, নেই ন্যায়বিচার

পাকিস্তান ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেনি। ফলে তারা ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’-এর আওতায় বিদেশিদের আটক ও বহিষ্কারের ক্ষমতা রাখে— এমনকি শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থীদেরও, যদি তাদের বৈধ কাগজপত্র না থাকে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR)-এর মুখপাত্র কায়সার খান আফ্রিদি বলেন, “আর্জেন্টিনা পার্কে থাকা শরণার্থীদের সহায়তায় একটি আইনি দল কাজ করছে। অধিকাংশ আফগানই এখন সুরক্ষাহীন, তাই আমরা সরকারের কাছে নিবন্ধন ও নথিপত্র ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছি।”
‘নন-রিফাউলমেন্ট’ নীতির আওতায় বিপদের মুখে কাউকে ফেরত পাঠানো উচিত নয়, কিন্তু পাকিস্তান কনভেনশনে স্বাক্ষর না করায় এই নীতির বাধ্যবাধকতা তাদের ওপর নেই।


ফিরে যাওয়ার পথ নেই, সামনেও অনিশ্চয়তা

আর্জেন্টিনা পার্কে সন্ধ্যা নেমে এলে উস্‌ওয়া কোহিস্তানি তার কবিতার খাতা বন্ধ করে। সে পাকিস্তানে এসেছিল নিরাপত্তার আশায়, কিন্তু এখন বাইরে পা রাখলেই হয়রানির ভয়।
“আমরা অপরাধী নই, আমরা শিক্ষিত পরিবার,” বলে সে। “সবচেয়ে বড় কথা, আমরা মানুষ—রাষ্ট্র যেন আমাদের সে ভাবেই দেখে।”


# আফগান_শরণার্থী, পাকিস্তান, মানবাধিকার, ইসলামাবাদ, জাতিসংঘ, তালেবান, অভিবাসন_নীতি, মানবিক_সংকট