আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব
সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট থারমান শানমুগরতন ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) সদর দফতরে দেওয়া একটি বক্তৃতায় বলেন, পৃথিবীকে এককভাবে কোনো শক্তির অধীনে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “কোনো দেশই এককভাবে এগিয়ে যেতে পারে না। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া, বড় বা ছোট কোনো দেশই তার স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে না এবং জনগণের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না।”
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা: একটি সুযোগ
থারমানের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে একটি হুমকি দেখার পরিবর্তে একটি সুযোগ হিসেবে পরিচালনা করতে হবে। যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়, তবে এই দুই পরাশক্তির মধ্যে সম্পর্ক উভয় দেশের জন্য সমৃদ্ধি এনে দিতে পারে এবং বিশ্বের প্রচলিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে। “যদি আমরা এটি সঠিকভাবে পরিচালনা করি, তবে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক উভয় দেশের জন্য সমৃদ্ধির উৎস হতে পারে এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্ভাবনের ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করতে পারে,” বলেন তিনি।
শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিস্তৃতি
থারমান আরও বলেন, “যদি আমরা ব্যর্থ হই এবং দুই অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে আলাদা করে ফেলি, তবে আমরা একটি বিপদজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হব, যেখানে কোনো বিজয়ী থাকবে না।” তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বাজারভিত্তিক এবং চীন রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত অর্থনীতি হয়ে থাকে।
নতুন কোয়ালিশন ও বহু-দেশীয় সহযোগিতা
থারমান তার বক্তৃতায় সিঙ্গাপুরে নতুন কোয়ালিশন ও বহু-দেশীয় সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন, যেখানে পৃথিবী আর একক হেগেমনিক শক্তির অধীনে পরিচালিত হবে না। তিনি বলেন, “বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন বদলে যাচ্ছে, এবং যুক্তরাষ্ট্র তার ভূমিকা থেকে ধীরে ধীরে পিছু হটছে।”
চাকরি সৃষ্টি এবং সামাজিক নীতি
তরুণদের মধ্যে চাকরি সঙ্কট একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে, যা সামাজিক নীতি এবং শিল্প-ভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। “চাকরি সৃষ্টি আর কেবল বাজারের উপর নির্ভর করে থাকতে পারে না। এর জন্য শক্তিশালী সামাজিক নীতি প্রয়োজন,” বলেন থারমান।
থারমানের বক্তৃতাটি বিশ্বকে একটি মৈত্রী ও সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানায়, যেখানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সম্মিলিত পদক্ষেপে দেশগুলো নিজেদের স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে।