০১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
ব্রডওয়েতে ‘রাগটাইম’ মঞ্চায়ন: শক্তিশালী সুর ও আবেগের পরিপূরক স্মৃতি দ্রুত মলিন হয়ে যায় কিন্তু ফটোগ্রাফি মুহূর্তটিকে থামিয়ে দিতে পারে এসএনএলে সাব্রিনা কারপেন্টার: ইমেজ, রসিকতা আর ভাইরাল কৌশল যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা: বিশ্বে উন্নতির সুযোগ, সতর্কতার সাথে পরিচালনা জরুরি – প্রেসিডেন্ট থারমান বালি পাচার নিয়ে তল্লাশি ইডি-র, ভোটের আগে সক্রিয়তার অভিযোগ যেখানে ভয়ই নিয়ম—করাচি চিড়িয়াখানার অদৃশ্য কর্মীদের গল্প -পঞ্চম পর্ব ঢাকার আরমানিটোলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতার মরদেহ উদ্ধার এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে সোমবার থেকে আমরণ অনশন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৪২) শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন নিয়ন্ত্রণে ২৭ ঘণ্টা পর

বালি পাচার নিয়ে তল্লাশি ইডি-র, ভোটের আগে সক্রিয়তার অভিযোগ

পশ্চিমবঙ্গে বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আবার তল্লাশি শুরু করেছে ইডি।

বালি পাচার তদন্তে ফের অভিযান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তারা তল্লাশি করেছে।

নদীর বুক থেকে বালি তুলে পাচার করে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। এতে যেমন পরিবেশের ক্ষতি, তেমনই রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় রাজ্য সরকার। এই সংক্রান্ত অভিযোগে তদন্ত চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ইডি।

বালি পাচারে তল্লাশি 

অনেক দিনের বিরতির পরে মাসখানেক আগে ৯ সেপ্টেম্বর বালি পাচারের তদন্তে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল ইডি। সেদিন পাওয়া সূত্র ধরে বৃহস্পতিবারের আর এক দফার অভিযান। ভোর থেকে একযোগে সাত-আটটি জায়গায় তল্লাশি শুরু করেন আধিকারিকরা।

গত মাসের অভিযানে বিপুল অংকের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের বালি ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের বাড়িতে হানা দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, সেখান থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। একই দিনে গোপীবল্লভপুরের এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ২৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছিল।

আগের দিনের সূত্রের উপর ভিত্তি করে এদিন সকাল থেকে ফের তল্লাশি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমানে। কলকাতার বেন্টিংক স্ট্রিটেও অভিযান চালায় ইডি। আধিকারিকদের একাধিক দল বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপস্থিতিতে।

লালগড়ের সিজুয়ায় সৌরভের খাদান রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এদিন সকালে ইডি আধিকারিকদের দল যখন সেখানে পৌঁছান, খাদানে তখন বালি তোলা হচ্ছিল। লরির সারি দাঁড়িয়েছিল সেই এলাকায়। বালি তোলার কাজ চললেও যার পরিচালনায় এ কাজ হচ্ছে, এমন কাউকে সেখানে তৎক্ষণাৎ পাওয়া যায়নি। খাদান লাগোয়া অফিস তালাবন্ধ ছিল। পরে সেখানে কর্মীদের ডেকে পাঠানো হয়।

সূত্রের খবর, গোপীল্লভপুরের সুমিত্রাপুরে একটি দোতলা বাড়িতে সৌরভের অফিস রয়েছে। সেই অফিসে যখন আধিকারিকরা পৌঁছান, তখন সেটিও তালাবন্ধ ছিল। আধিকারিকরা সৌরভের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সেটি ছিল সুইচড অফ।

আসানসোলে ইডি-র নজরে বালি ব্যবসায়ী মণীশ বাগারিয়া। মুর্গাশোলে তার বাড়িতে হানা দেয় সংস্থা। ভোর ছটা নাগাদ ইডি আধিকারিকদের দল সেখানে পৌঁছয়। তিনতলা প্রাসাদোপম বাড়িতে সেই সময় মণীশ উপস্থিত ছিলেন না বলে সূত্রের খবর।

একই সঙ্গে কলকাতার ডালহৌসি চত্বরে বেন্টিংক স্ট্রিটে একটি অফিসে পৌঁছন তদন্তকারীরা। সেখানেও ভোরে হানা দেন তারা। যে অফিসে আধিকারিকরা প্রবেশের চেষ্টা করেন, সেটাও ছিল বন্ধ।

এর আগের দফায় গোপীবল্লভপুর জহিরুল শেখের বাড়িতে অভিযান হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, তিনি ভিলেজ পুলিশ হিসেবে কাজ করতেন, পরে বালির ব্যবসায় যুক্ত হন। তার একাধিক খাদান রয়েছে। এছাড়া আগের দিন বেহালা ও সল্টলেকের দুটি অফিসে তল্লাশি চালান আধিকারিকরা। নদীয়ার কল্যাণীতে অভিযান চালানো হয়।

বালি পাচারে দুর্নীতি

বালি উত্তোলনের ক্ষেত্রে যে নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে, তার বাইরে থেকেও বালি তোলা হয়। অর্থাৎ যে জায়গার অনুমতি নেই, সেখান থেকে বালি তুলে পাচার করে দেয়া হচ্ছে। এই ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা রয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার নিশানায়।

এই সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ইসিআইআর দায়ের করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই তদন্তে ফের গতি আসায় আবার উঠে গিয়েছে পুরোনো প্রশ্ন।

আর কয়েক মাসের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কি ফের সক্রিয় হচ্ছে ইডি? এই প্রশ্ন তুলেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কয়েকদিন আগে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর অফিসে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই তল্লাশি।

ইডি-সিবিআইকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ নতুন নয়। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য বলেন, “ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্তকে ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করলে দেখা যাবে, এর আগে এর আগে তদন্তকারী সংস্থা তৃণমূলের দুজন সিনিয়র নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল। তাপস রায় ও সুজিত বসু। এক বছর পরে আবার সুজিত বসুর বাড়িতে অভিযান চালানো হল। কিন্তু তাপস রায় যেহেতু দল বদলে ফেলেছেন, তাই তার বাড়িতে অভিযান হলো না। তাহলে কি তাপস রায়ের বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ থাকলো না? এটা দেখে মনে হয়, ইডি, সিবিআই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা দক্ষিণপন্থি রাজনীতির চেনা ছক।”

সুমনের বক্তব্য, “এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্য রাজ্যেও দেখা যায়। রাজস্থানে ভোটের সময় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে ইডি অভিযান চালিয়েছিল। ভোটে বিজেপি জিতে গেল, তারপর আর গেহলটের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত হচ্ছে বলে কি দেখা যাচ্ছে? দুর্নীতিতে তদন্তের বিষয়টাকে বিজেপি হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।”

বিজেপি নেতা ও পর্যবেক্ষক বিমলশঙ্কর নন্দ বলেন, “দুর্নীতির তদন্ত কখনো সময়সীমা বেঁধে হয় না। পর্যাপ্ত তথ্য হাতে এলে তদন্তকারী সংস্থা ফের কাজ শুরু করতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল শুধু অন্যায় করে না, অন্যায় ধামাচাপা দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। তদন্তকারী সংস্থার কাজে বাধা তৈরি করা হয়। এখানে তথ্য জোগাড় করা কঠিন।”

অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা, নারদ স্টিং অপারেশন, বালি পাচার, কয়লা পাচার থেকে হালের নিয়োগ দুর্নীতি, এমন অনেক মামলা রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। কিন্তু তদন্তের দীর্ঘসূত্রতায় বিরক্ত খোদ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এনিয়ে সদ্য নিজের অসন্তোষ জানিয়েছেন।

বিমলশঙ্কর বলেন, “কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির আরো সক্রিয় হওয়া উচিত। মাঝে মাঝে তদন্তে দেরি হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই বার্তা যাচ্ছে যে, তদন্তকারীরা ঠিকভাবে কাজ করছেন না। এই বদনাম ঘোচাতে তাদের দ্রুত তদন্ত চালানো উচিত, যাতে দোষীদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক সাজার ব্যবস্থা করা যায়।”

ডিডাব্লিউ ডটকম

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রডওয়েতে ‘রাগটাইম’ মঞ্চায়ন: শক্তিশালী সুর ও আবেগের পরিপূরক

বালি পাচার নিয়ে তল্লাশি ইডি-র, ভোটের আগে সক্রিয়তার অভিযোগ

১০:০০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

বালি পাচার তদন্তে ফের অভিযান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তারা তল্লাশি করেছে।

নদীর বুক থেকে বালি তুলে পাচার করে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। এতে যেমন পরিবেশের ক্ষতি, তেমনই রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় রাজ্য সরকার। এই সংক্রান্ত অভিযোগে তদন্ত চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ইডি।

বালি পাচারে তল্লাশি 

অনেক দিনের বিরতির পরে মাসখানেক আগে ৯ সেপ্টেম্বর বালি পাচারের তদন্তে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল ইডি। সেদিন পাওয়া সূত্র ধরে বৃহস্পতিবারের আর এক দফার অভিযান। ভোর থেকে একযোগে সাত-আটটি জায়গায় তল্লাশি শুরু করেন আধিকারিকরা।

গত মাসের অভিযানে বিপুল অংকের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের বালি ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের বাড়িতে হানা দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, সেখান থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। একই দিনে গোপীবল্লভপুরের এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ২৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছিল।

আগের দিনের সূত্রের উপর ভিত্তি করে এদিন সকাল থেকে ফের তল্লাশি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমানে। কলকাতার বেন্টিংক স্ট্রিটেও অভিযান চালায় ইডি। আধিকারিকদের একাধিক দল বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপস্থিতিতে।

লালগড়ের সিজুয়ায় সৌরভের খাদান রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এদিন সকালে ইডি আধিকারিকদের দল যখন সেখানে পৌঁছান, খাদানে তখন বালি তোলা হচ্ছিল। লরির সারি দাঁড়িয়েছিল সেই এলাকায়। বালি তোলার কাজ চললেও যার পরিচালনায় এ কাজ হচ্ছে, এমন কাউকে সেখানে তৎক্ষণাৎ পাওয়া যায়নি। খাদান লাগোয়া অফিস তালাবন্ধ ছিল। পরে সেখানে কর্মীদের ডেকে পাঠানো হয়।

সূত্রের খবর, গোপীল্লভপুরের সুমিত্রাপুরে একটি দোতলা বাড়িতে সৌরভের অফিস রয়েছে। সেই অফিসে যখন আধিকারিকরা পৌঁছান, তখন সেটিও তালাবন্ধ ছিল। আধিকারিকরা সৌরভের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সেটি ছিল সুইচড অফ।

আসানসোলে ইডি-র নজরে বালি ব্যবসায়ী মণীশ বাগারিয়া। মুর্গাশোলে তার বাড়িতে হানা দেয় সংস্থা। ভোর ছটা নাগাদ ইডি আধিকারিকদের দল সেখানে পৌঁছয়। তিনতলা প্রাসাদোপম বাড়িতে সেই সময় মণীশ উপস্থিত ছিলেন না বলে সূত্রের খবর।

একই সঙ্গে কলকাতার ডালহৌসি চত্বরে বেন্টিংক স্ট্রিটে একটি অফিসে পৌঁছন তদন্তকারীরা। সেখানেও ভোরে হানা দেন তারা। যে অফিসে আধিকারিকরা প্রবেশের চেষ্টা করেন, সেটাও ছিল বন্ধ।

এর আগের দফায় গোপীবল্লভপুর জহিরুল শেখের বাড়িতে অভিযান হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, তিনি ভিলেজ পুলিশ হিসেবে কাজ করতেন, পরে বালির ব্যবসায় যুক্ত হন। তার একাধিক খাদান রয়েছে। এছাড়া আগের দিন বেহালা ও সল্টলেকের দুটি অফিসে তল্লাশি চালান আধিকারিকরা। নদীয়ার কল্যাণীতে অভিযান চালানো হয়।

বালি পাচারে দুর্নীতি

বালি উত্তোলনের ক্ষেত্রে যে নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে, তার বাইরে থেকেও বালি তোলা হয়। অর্থাৎ যে জায়গার অনুমতি নেই, সেখান থেকে বালি তুলে পাচার করে দেয়া হচ্ছে। এই ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা রয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার নিশানায়।

এই সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ইসিআইআর দায়ের করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই তদন্তে ফের গতি আসায় আবার উঠে গিয়েছে পুরোনো প্রশ্ন।

আর কয়েক মাসের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কি ফের সক্রিয় হচ্ছে ইডি? এই প্রশ্ন তুলেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কয়েকদিন আগে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর অফিসে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই তল্লাশি।

ইডি-সিবিআইকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ নতুন নয়। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য বলেন, “ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্তকে ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করলে দেখা যাবে, এর আগে এর আগে তদন্তকারী সংস্থা তৃণমূলের দুজন সিনিয়র নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল। তাপস রায় ও সুজিত বসু। এক বছর পরে আবার সুজিত বসুর বাড়িতে অভিযান চালানো হল। কিন্তু তাপস রায় যেহেতু দল বদলে ফেলেছেন, তাই তার বাড়িতে অভিযান হলো না। তাহলে কি তাপস রায়ের বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ থাকলো না? এটা দেখে মনে হয়, ইডি, সিবিআই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা দক্ষিণপন্থি রাজনীতির চেনা ছক।”

সুমনের বক্তব্য, “এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্য রাজ্যেও দেখা যায়। রাজস্থানে ভোটের সময় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে ইডি অভিযান চালিয়েছিল। ভোটে বিজেপি জিতে গেল, তারপর আর গেহলটের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত হচ্ছে বলে কি দেখা যাচ্ছে? দুর্নীতিতে তদন্তের বিষয়টাকে বিজেপি হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।”

বিজেপি নেতা ও পর্যবেক্ষক বিমলশঙ্কর নন্দ বলেন, “দুর্নীতির তদন্ত কখনো সময়সীমা বেঁধে হয় না। পর্যাপ্ত তথ্য হাতে এলে তদন্তকারী সংস্থা ফের কাজ শুরু করতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল শুধু অন্যায় করে না, অন্যায় ধামাচাপা দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। তদন্তকারী সংস্থার কাজে বাধা তৈরি করা হয়। এখানে তথ্য জোগাড় করা কঠিন।”

অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা, নারদ স্টিং অপারেশন, বালি পাচার, কয়লা পাচার থেকে হালের নিয়োগ দুর্নীতি, এমন অনেক মামলা রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। কিন্তু তদন্তের দীর্ঘসূত্রতায় বিরক্ত খোদ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এনিয়ে সদ্য নিজের অসন্তোষ জানিয়েছেন।

বিমলশঙ্কর বলেন, “কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির আরো সক্রিয় হওয়া উচিত। মাঝে মাঝে তদন্তে দেরি হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই বার্তা যাচ্ছে যে, তদন্তকারীরা ঠিকভাবে কাজ করছেন না। এই বদনাম ঘোচাতে তাদের দ্রুত তদন্ত চালানো উচিত, যাতে দোষীদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক সাজার ব্যবস্থা করা যায়।”

ডিডাব্লিউ ডটকম