হেমন্তের আগমন: উত্তরাঞ্চলে শীতের আগাম বার্তা
বাংলা কার্তিক মাসের শুরুতেই দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের আগমন টের পাওয়া যাচ্ছে। সকালবেলা কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারপাশ, যেন প্রকৃতি ধীরে ধীরে শীতের পোশাকে সেজে উঠছে।
গত কয়েকদিন ধরে লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলার গ্রামীণ অঞ্চল ঘন কুয়াশায় মোড়ানো অবস্থায় ভোরবেলা ঘুম ভাঙছে মানুষের। ঠান্ডা হাওয়া আর মৃদু শিরশিরে অনুভূতি যেন জানিয়ে দিচ্ছে—শীত এসে পড়েছে দরজায়।
ভোরবেলা কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রাম
সোমবার সকালে জেলার প্রায় পুরো এলাকাজুড়ে ঘন কুয়াশা ছড়িয়ে পড়ে। সড়ক ও ধানক্ষেত কুয়াশার পর্দায় আড়াল হয়ে যায়, সূর্যের আলোও দেরিতে পৌঁছায় মাটিতে।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ। এ তথ্য স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয়—ঋতুর পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে।
গ্রামজীবনে হেমন্তের উচ্ছ্বাস
কালীগঞ্জ উপজেলার চালবালা গ্রামের কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, “হেমন্ত এলেই বুঝি নবন্নের মৌসুম চলে এসেছে। নতুন ধান আর পিঠাপায়েসের সময় এটা। গ্রামের জীবন যেন আবার জেগে ওঠে।”
এ সময়েই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যশোরকে ঘিরে গড়ে উঠছে শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদনের কেন্দ্র।
কুয়াশা, কম্বল আর চায়ের ধোঁয়ায় শীতের সকাল
গ্রামের মানুষজন ইতিমধ্যে শীতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাতলা কম্বল, লেপ আর চাদর বের করা শুরু হয়েছে। দিন গরম থাকলেও রাতের বেলায় ঠান্ডা বেড়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে মধ্যরাতের পর।
দুহুলি এলাকার বাসিন্দা নূর হাবিব বলেন, “ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি চারপাশ কুয়াশায় ঢাকা। কেউ ফজরের নামাজে যাচ্ছেন, কেউ চায়ের দোকানে বসে ধোঁয়া ওঠা চায়ে গল্প করছেন—এ যেন এক অন্যরকম আনন্দ।”
আবহাওয়াবিদের সতর্ক বার্তা
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, “আমরা আবহাওয়ায় পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। ভোরের কুয়াশা আর হালকা ঠান্ডা হেমন্তের আগমনবার্তা দিচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে।”
ফসলের মৌসুম ও উৎসবের পূর্বাভাস
ধান পাকার সুবাস, ফুলের প্রস্ফুটন আর কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল—সব মিলিয়ে লালমনিরহাট এখন হেমন্তের মায়ায় মোড়া। এটি শুধু শীতের আগমনী বার্তা নয়, বরং ফসলের উৎসব আর গ্রামীণ আনন্দের সময়েরও সূচনা।
শীতের_আগমন, হেমন্ত, লালমনিরহাট, আবহাওয়া, কুয়াশা, কৃষি, সারাক্ষণ_রিপোর্ট