গত সপ্তাহের অস্থিরতার পর দুবাইয়ে সোনার দামে হঠাৎ ১১ দিরহাম বৃদ্ধি পেয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। বৈশ্বিক বাজারে তীব্র বিক্রির ধাক্কা কাটতেই আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারা ফিরেছে; তবে বিশ্লেষকদের মতে, সামনে স্বল্পমেয়াদি সংশোধনের ঝুঁকিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
দুবাইয়ের সর্বশেষ দর
- • ২৪ ক্যারেট সোনা: প্রতি গ্রাম ৫২১.৭৫ দিরহাম
- • ২২ ক্যারেট সোনা: প্রতি গ্রাম ৪৮৩ দিরহাম
- • আগের দিনের তুলনায়: ২৪ ক্যারেট ৫১০ দিরহাম ও ২২ ক্যারেট ৪৭২ দিরহাম থেকে বৃদ্ধি
- • বৈশ্বিক স্পট মূল্য: প্রতি আউন্স ৪,৩৪৬.৮ ডলার (প্রায় ২%-এর বেশি বৃদ্ধি)
ভারতে উল্টো প্রবণতা
- • ২৪ ক্যারেট: প্রতি গ্রাম ১৩,০৬৯ রুপি (১৬ রুপি হ্রাস)
- • ২২ ক্যারেট: প্রতি গ্রাম ১১,৯৮০ রুপি
বৈশ্বিক অস্থিরতার মাঝেও ভারতীয় বাজারে সামান্য চাপ অব্যাহত রয়েছে।
গত সপ্তাহের ধাক্কা ও রূপালি ধাতু
গত সপ্তাহের শেষ দিকে সোনার একদিনে ১.৭% পতন—মে মাসের পর সবচেয়ে বড় দৈনিক হ্রাস—দেখা যায়। লাভ তুলে নেওয়া ও মূল্যবান ধাতুগুলোর সার্বিক মন্দার প্রভাবেই এ পতন ঘটে।
রূপাও শুক্রবারে ৪%-এর বেশি নেমে গিয়ে সোমবার সকালে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়।
সংশোধন শুরু, নাকি দম নিয়ে এগোনো?
বাজার এখন দ্বিধায়—সাম্প্রতিক পতন কি সাময়িক স্থিতি, নাকি গভীর সংশোধনের ইঙ্গিত?
- • যুক্তরাষ্ট্র-চীন আলোচনার সুর নির্ধারণী হতে পারে। গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প সমঝোতার ইঙ্গিত দেওয়ায় উত্তেজনা কমলে সোনা-রূপার মতো নিরাপদ সম্পদের চাহিদা কমতে পারে।
- • বিপরীতে, নতুন করে ভূরাজনৈতিক বা আর্থিক ঝুঁকি দেখা দিলে ক্রেতারা দ্রুত সোনায় ফিরতে পারেন।
ব্যাংকিং অনিশ্চয়তা: সোনায় সহায়ক প্রভাব
কিছু মার্কিন আঞ্চলিক ব্যাংকের ঋণসংক্রান্ত চাপ—বিশেষ করে Zions Bancorp ও Western Alliance Bancorp-এ জটিলতার খবর—ক্রেডিট ঝুঁকির শঙ্কা বাড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেছে।
এই সতর্কতাই সোনার জন্য আংশিক সাপোর্ট দিচ্ছে।
কেন এতটা র্যালি?
এই বছর জানুয়ারি থেকে সোনা ৬০%-এর বেশি বেড়েছে। প্রধান চালকগুলো হলো—
- • কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর উল্লেখযোগ্য ক্রয়
- • এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডে প্রবাহ
- • ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন, সরকারি ঋণের বৃদ্ধি ও ফেডের নীতিপথ নিয়ে অনিশ্চয়তায় নিরাপদ বিনিয়োগের ঝোঁক
টেকনিক্যাল সংকেত: ‘ওভারহিট’ সতর্কতা
আগস্ট থেকে শুরু হওয়া র্যালির পর টেকনিক্যাল সূচকগুলো উচ্চস্তরে রয়েছে।
আপেক্ষিক শক্তি সূচক ইঙ্গিত দিচ্ছে—নতুন প্রণোদনা না এলে তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বগতির সুযোগ সীমিত হতে পারে।
সামনে কী দেখবে বিনিয়োগকারীরা
- • নীতিসংকেত: ওয়াশিংটন ও বেইজিং থেকে ইতিবাচক বার্তা এলে বুলিয়নে আরও মুনাফা-তোলা হতে পারে।
- • ঝুঁকির মাত্রা: রাজনীতি বা ব্যাংকিং খাতে চাপ বাড়লে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনায় পুনরায় ক্রয়চাপ বাড়তে পারে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাম উচ্চে থাকলেও, দিকনির্দেশ আসবে কূটনীতি, নীতিনির্ধারণ ও আর্থিক স্থিতিশীলতার নতুন খবর থেকে।
#দুবাই #সোনা #বৈশ্বিকবাজার #স্বর্ণমূল্য #অর্থনীতি #সারাক্ষণরিপোর্ট