জাপানের ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এজেন্সি (FSA) ব্যাংকিং গ্রুপ-সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পদ ট্রেডিং সেবা চালু করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে। বর্তমানে এই খাতটি মূলত সিকিউরিটিজ কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর দখলে রয়েছে। একই সঙ্গে, ব্যাংকগুলোর জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয় ও বিনিয়োগের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
নিয়ম পরিবর্তনের প্রস্তাব
জাপানে যেসব প্রতিষ্ঠান ক্রিপ্টো সম্পদ-সম্পর্কিত সেবা দিতে চায়, তাদের FSA-র নিবন্ধন নিতে হয়। কিন্তু ব্যাংকিং গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী নিবন্ধনের সুযোগ পায় না। ফলে বর্তমানে ক্রিপ্টো ট্রেডিং সেবা মূলত সিকিউরিটিজ গ্রুপের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন SBI VC Trade (SBI Holdings-এর অংশ) ও Rakuten Wallet (Rakuten Securities Holdings-এর সহযোগী) পরিচালনা করছে।
নতুন প্রস্তাবে, FSA ব্যাংকিং গ্রুপের সিকিউরিটিজ ইউনিটগুলোকে ক্রিপ্টো সম্পদ সেবা প্রদানের অনুমতি দিতে চায়। এর ফলে ব্যাংক-সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও সমান প্রতিযোগিতার সুযোগ পাবে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য ট্রেডিংয়ের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
বিনিয়োগ ঝুঁকি ও তদারকি ব্যবস্থা
ক্রিপ্টোকারেন্সির উচ্চমাত্রার অস্থিরতা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা উদ্বিগ্ন। এই কারণে FSA ব্যাংক-সম্পৃক্ত সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগ ঝুঁকি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দেবে।
এছাড়া ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ক্রিপ্টো সম্পদ ক্রয় ও ধারণের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় আছে। সংশোধিত তদারকি নীতিমালায় ক্রিপ্টোকারেন্সিকে সরকারি বন্ড বা সিকিউরিটিজের মতো বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হতে পারে।
ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে FSA একটি সুরক্ষা কাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনাও করছে, যাতে ক্রিপ্টো বিনিয়োগ ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্যে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে।
আলোচনার সূচনা ও বাজার প্রেক্ষাপট
এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে বুধবার, যখন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শদাতা ফিনান্সিয়াল সিস্টেম কাউন্সিলের ওয়ার্কিং গ্রুপ বৈঠক করবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই উদ্যোগ এমন সময়ে এসেছে যখন জাপানের ক্রিপ্টো বাজার দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে। আগস্ট মাসে দেশে সক্রিয় ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭.৮৮ মিলিয়নে, যা পাঁচ বছরে চারগুণ বেড়েছে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট
জাপানের বাইরে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও ধীরে ধীরে ক্রিপ্টো সম্পদকে তাদের পোর্টফোলিওতে অন্তর্ভুক্ত করছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ২০২৫ সালের জুলাই মাসে প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল সম্পদ ট্রেডিং সেবা চালু করেছে।
জাপানের ব্যাংকিং খাতের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের দরজা খুলে দিলে দেশটি বৈশ্বিক ডিজিটাল সম্পদ বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে পৌঁছাতে পারে। একই সঙ্গে এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সুযোগ আনবে, যদিও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক স্বচ্ছতার প্রশ্নে FSA-র কৌশল এখানে হবে মুখ্য।
#জাপান,#ক্রিপ্টোকারেন্সি,# ব্যাংকিং, #ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এজেন্সি,# ব্লকচেইন#, ডিজিটাল সম্পদ, #অর্থনীতি, #সারাক্ষণ রিপোর্ট