বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যু এবং নিজের দলীয় বহিষ্কার একই দিনে ঘটাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য বহিষ্কৃত সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তাঁর ভাষায়, জীবনের এই অধ্যায় রাজনৈতিকভাবে যেমন অস্বাভাবিক, তেমনি ব্যক্তিগতভাবে গভীর বেদনার।
মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, দলের প্রধানের মৃত্যুদিনেই বহিষ্কারের আদেশ পাওয়া তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর অভিজ্ঞতাগুলোর একটি। তবে বহিষ্কারের পরও তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানান।
রাজনীতিতে আপসহীন থাকার শিক্ষা
বহিষ্কার নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, আপস না করে একা দাঁড়িয়ে যাওয়ার সাহস তিনি খালেদা জিয়ার কাছ থেকেই শিখেছেন। যে নেত্রীর আদর্শে রাজনীতি করেছেন, যার স্নেহ ও আশ্রয়ে রাজনৈতিক পথচলা—সেই নেত্রীর মৃত্যুর দিনেই নিজের বহিষ্কারকে তিনি কেবল কাকতালীয় ঘটনা বলে মনে করেন না।
তিনি খালেদা জিয়াকে একজন আপসহীন নেত্রী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি তাঁর রাজনৈতিক অভিভাবককে হারিয়েছেন। যার আদর্শ তাঁকে রাজনীতিতে অনুপ্রাণিত করেছে এবং যিনি নীতির প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। তাঁর প্রয়াণে দেশ ও দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রুমিন ফারহানা।

ব্যক্তিগত স্মৃতি ও শেষ কথোপকথন
রুমিন ফারহানা জানান, খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন। তার আগে ২০ নভেম্বর তাঁর সঙ্গে কথা হয়। সে সময় খালেদা জিয়া প্রশ্ন করেছিলেন, কেন তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এই কথোপকথনের স্মৃতি এখনও তাঁকে নাড়া দেয় বলে জানান তিনি।
বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত
নিজেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানোর প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, এটি এক ধরনের আপসহীন অবস্থান, প্রবল স্রোতের বিপরীতে একা দাঁড়িয়ে যাওয়ার মতো। এই মনোভাব তিনি তাঁর নেত্রীর কাছ থেকেই শিখেছেন। আপস না করে নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকার শিক্ষা তাঁর রাজনৈতিক জীবনের মূল প্রেরণা।
বিএনপির বহিষ্কার সিদ্ধান্ত
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে মঙ্গলবার রুমিন ফারহানাসহ মোট নয়জন নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বহিষ্কৃতদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পর্যায়ের পদ বাতিল করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তিনি সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নিজে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
জোট প্রার্থী প্রসঙ্গ
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট থেকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এবং আসন্ন নির্বাচনে খেজুর গাছ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















