০৯:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
রাঙামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু গুলিতে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে চিরকুট, আতঙ্কে ছাত্রনেতা সায়মন জিয়নের পরিবার তারেক রহমান ও জামায়াত আমিরের চেয়েও বেশি নাহিদ ইসলামের বার্ষিক আয় সৌদি হামলায় ফাটল স্পষ্ট: ইয়েমেনে অস্ত্র চালান ঘিরে সৌদি–আমিরাত উত্তেজনা জলবায়ু সাংবাদিকতায় এক অনন্য কণ্ঠের বিদায়: তাতিয়ানা শ্লসবার্গের মৃত্যুতে নীরব হলো পরিবেশের গল্প রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় খালেদা জিয়ার শেষযাত্রা, ভুটানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের শ্রদ্ধা সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযানে মার্কিন বাহিনীর বড় সাফল্য, নিহত সাত জঙ্গি, আটক আরও বহু যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি টিকে আছে, তবু স্বস্তি নেই সাধারণ মানুষের জীবনে জলবায়ু নীতিতে উল্টো স্রোত: ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় খালেদা জিয়ার মৃত্যু ও একই দিনে বহিষ্কার: রুমিন ফারহানার মন্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি টিকে আছে, তবু স্বস্তি নেই সাধারণ মানুষের জীবনে

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুই হাজার পঁচিশ সালের মন্দার ফাঁদ এড়াতে পেরেছে। বাণিজ্যযুদ্ধ, শুল্ক টানাপোড়েন, শেয়ারবাজারের দোলাচল আর ইতিহাসের দীর্ঘতম সরকারি অচলাবস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়েনি। তবু এই টিকে থাকা সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি আনতে পারেনি। নতুন বছরের মুখে দাঁড়িয়ে বহু মার্কিন নাগরিক কাজ হারানোর শঙ্কায়, সংসারের খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত।

ডিসেম্বরে সরকারি অর্থনৈতিক তথ্য আবার প্রকাশ শুরু হলেও সেই চিত্র ছিল দ্বিধাবিভক্ত। কর্মসংস্থান কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু একই সঙ্গে বেকারত্ব ও ঊর্ধ্বমুখী। খুচরা বিক্রি ভালো থাকলে মজুরি বৃদ্ধির গতি কমেছে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা ঠান্ডা হয়েছে, কিন্তু নিত্যপণ্যের চাপ এখনও কাটেনি। ফলে অর্থনীতি ভালো না খারাপ, সেই প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর মিলছে না।

প্রবৃদ্ধি আছে, কিন্তু স্বস্তি নেই

গত বছরের শেষ ভাগে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হলে তার সুফল সবার ঘরে পৌঁছায়নি। তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল উল্লেখযোগ্য, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে পরের সময়ে সেই গতি কমতে পারে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ মনে করেন জীবনযাত্রার ব্যয় তাদের নাগালের বাইরে যাচ্ছে। তথ্য বলছে, ভোক্তা ব্যয়ের বড় অংশ আসছে ধনী পরিবারের হাত ধরে, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে।

শুল্কনীতি আর ব্যয়ের চাপ

শুল্কনীতির কারণে বড় ধরনের মূল্যস্ফীতি না হলেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। বাড়ি কেনা এখনও বহু মানুষের স্বপ্নই রয়ে গেছে। শিশু পরিচর্যা ব্যয়, বিদ্যুৎ বিল ও স্বাস্থ্য বিমার খরচ পরিবারগুলোর উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এসব বাস্তবতায় অর্থনীতি শক্তিশালী বললেও সাধারণ মানুষের বিশ্বাস তৈরি হচ্ছে না।

বৈষম্যের গভীরতা

অর্থনৈতিক সুফল সবচেয়ে বেশি পেয়েছে উচ্চ আয়ের পরিবার। শেয়ারবাজারের উত্থান তাদের সম্পদ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে শ্রমবাজার ঠান্ডা হওয়ায় কম আয়ের মানুষের মজুরি বৃদ্ধি থমকে গেছে। এর ফল হিসেবে ঋণখেলাপ, গাড়ি বাজেয়াপ্তের মতো ঘটনা বেড়েছে। তরুণ স্নাতকদের চাকরি পাওয়া আগের চেয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে। কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে বেকারত্ব উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।

সামনে কি অপেক্ষা করছে

বিশেষজ্ঞদের একাংশ আশা করছেন, করছাড়, সুদের হার কমা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা হ্রাস পেলে আগামী বছরে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়তে পারে। তবে আশঙ্কা কম নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতের বিনিয়োগ কমে গেলে বা নতুন নীতিগত ধাক্কা এলে অর্থনীতি আবার চাপের মুখে পড়তে পারে। শ্রমবাজার দুর্বল হলে কর ছাড়ের সুফল ও ম্লান হয়ে যাবে বলে সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা।

সার্বিক চিত্র

অর্থনীতি টিকে আছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ফেরেনি। খরচের চাপ, আয়ের অনিশ্চয়তা আর বৈষম্যের বাস্তবতা মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে এক অস্বস্তিকর সন্ধিক্ষণে।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি টিকে আছে, তবু স্বস্তি নেই সাধারণ মানুষের জীবনে

০৮:০১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুই হাজার পঁচিশ সালের মন্দার ফাঁদ এড়াতে পেরেছে। বাণিজ্যযুদ্ধ, শুল্ক টানাপোড়েন, শেয়ারবাজারের দোলাচল আর ইতিহাসের দীর্ঘতম সরকারি অচলাবস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়েনি। তবু এই টিকে থাকা সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি আনতে পারেনি। নতুন বছরের মুখে দাঁড়িয়ে বহু মার্কিন নাগরিক কাজ হারানোর শঙ্কায়, সংসারের খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত।

ডিসেম্বরে সরকারি অর্থনৈতিক তথ্য আবার প্রকাশ শুরু হলেও সেই চিত্র ছিল দ্বিধাবিভক্ত। কর্মসংস্থান কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু একই সঙ্গে বেকারত্ব ও ঊর্ধ্বমুখী। খুচরা বিক্রি ভালো থাকলে মজুরি বৃদ্ধির গতি কমেছে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা ঠান্ডা হয়েছে, কিন্তু নিত্যপণ্যের চাপ এখনও কাটেনি। ফলে অর্থনীতি ভালো না খারাপ, সেই প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর মিলছে না।

প্রবৃদ্ধি আছে, কিন্তু স্বস্তি নেই

গত বছরের শেষ ভাগে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হলে তার সুফল সবার ঘরে পৌঁছায়নি। তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল উল্লেখযোগ্য, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে পরের সময়ে সেই গতি কমতে পারে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ মনে করেন জীবনযাত্রার ব্যয় তাদের নাগালের বাইরে যাচ্ছে। তথ্য বলছে, ভোক্তা ব্যয়ের বড় অংশ আসছে ধনী পরিবারের হাত ধরে, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে।

শুল্কনীতি আর ব্যয়ের চাপ

শুল্কনীতির কারণে বড় ধরনের মূল্যস্ফীতি না হলেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। বাড়ি কেনা এখনও বহু মানুষের স্বপ্নই রয়ে গেছে। শিশু পরিচর্যা ব্যয়, বিদ্যুৎ বিল ও স্বাস্থ্য বিমার খরচ পরিবারগুলোর উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এসব বাস্তবতায় অর্থনীতি শক্তিশালী বললেও সাধারণ মানুষের বিশ্বাস তৈরি হচ্ছে না।

বৈষম্যের গভীরতা

অর্থনৈতিক সুফল সবচেয়ে বেশি পেয়েছে উচ্চ আয়ের পরিবার। শেয়ারবাজারের উত্থান তাদের সম্পদ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে শ্রমবাজার ঠান্ডা হওয়ায় কম আয়ের মানুষের মজুরি বৃদ্ধি থমকে গেছে। এর ফল হিসেবে ঋণখেলাপ, গাড়ি বাজেয়াপ্তের মতো ঘটনা বেড়েছে। তরুণ স্নাতকদের চাকরি পাওয়া আগের চেয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে। কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে বেকারত্ব উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।

সামনে কি অপেক্ষা করছে

বিশেষজ্ঞদের একাংশ আশা করছেন, করছাড়, সুদের হার কমা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা হ্রাস পেলে আগামী বছরে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়তে পারে। তবে আশঙ্কা কম নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতের বিনিয়োগ কমে গেলে বা নতুন নীতিগত ধাক্কা এলে অর্থনীতি আবার চাপের মুখে পড়তে পারে। শ্রমবাজার দুর্বল হলে কর ছাড়ের সুফল ও ম্লান হয়ে যাবে বলে সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা।

সার্বিক চিত্র

অর্থনীতি টিকে আছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ফেরেনি। খরচের চাপ, আয়ের অনিশ্চয়তা আর বৈষম্যের বাস্তবতা মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে এক অস্বস্তিকর সন্ধিক্ষণে।