০৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
রাঙামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু গুলিতে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে চিরকুট, আতঙ্কে ছাত্রনেতা সায়মন জিয়নের পরিবার তারেক রহমান ও জামায়াত আমিরের চেয়েও বেশি নাহিদ ইসলামের বার্ষিক আয় সৌদি হামলায় ফাটল স্পষ্ট: ইয়েমেনে অস্ত্র চালান ঘিরে সৌদি–আমিরাত উত্তেজনা জলবায়ু সাংবাদিকতায় এক অনন্য কণ্ঠের বিদায়: তাতিয়ানা শ্লসবার্গের মৃত্যুতে নীরব হলো পরিবেশের গল্প রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় খালেদা জিয়ার শেষযাত্রা, ভুটানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের শ্রদ্ধা সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযানে মার্কিন বাহিনীর বড় সাফল্য, নিহত সাত জঙ্গি, আটক আরও বহু যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি টিকে আছে, তবু স্বস্তি নেই সাধারণ মানুষের জীবনে জলবায়ু নীতিতে উল্টো স্রোত: ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় খালেদা জিয়ার মৃত্যু ও একই দিনে বহিষ্কার: রুমিন ফারহানার মন্তব্য

৪৭২ দিন অন্ধকার বাঙ্কারে জীবন: ইউক্রেনের সৈনিক সংকটের নীরব দলিল

ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে একজন সৈনিকের জন্য কয়েক সপ্তাহের মোতায়েনই যেখানে স্বাভাবিক, সেখানে টানা চার শত বাহাত্তর দিন অন্ধকার ও স্যাঁতসেঁতে বাঙ্কারে কাটানো এক মানবিক সীমা ছোঁয়া অভিজ্ঞতা। ইউক্রেনীয় সেনা সার্জেন্ট সেরহিই তিশচেনকোর এই দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধজীবন এখন দেশটির সৈনিক সংকট, মানসিক চাপ এবং ড্রোননির্ভর যুদ্ধ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।

প্রথমে ভেবেছিলেন এক মাস
কিয়েভের উপকণ্ঠে নিজের বাড়িতে বসে তিশচেনকো বলছেন, তিনি ভেবেছিলেন এই মোতায়েন হয়তো এক মাস বা সর্বোচ্চ দুই মাসের। বাস্তবে সেটি গড়িয়েছে এক বছরেরও বেশি। পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে একটি ছোট বাঙ্কারে দিনের আলো না দেখে, তাজা বাতাস ছাড়া, টানা গোলাবর্ষণ আর ড্রোনের নজরদারির মধ্যে থাকতে হয়েছে তাকে ও তার সহযোদ্ধাদের।

অন্ধকার বাঙ্কারের জীবন
মাটির নিচের বাঙ্কারটি ছিল নিচু ও স্যাঁতসেঁতে। শোয়ার জন্য কোনো গদি ছিল না, ভরসা ছিল জলরোধী স্লিপিং ব্যাগ। শুরুতে আশপাশের অবস্থান থেকে খাবার ও যোগাযোগের সুযোগ মিললেও পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়। হামলায় সহযোদ্ধারা নিহত হন, কিন্তু বদলি আসে না। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়, ফেরার দিন অনিশ্চিত।

Image

ড্রোনের দাপট ও মানসিক চাপ
ড্রোনের কারণে দিনের বেলা বের হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। একটি ছোট জানালাও ঢেকে দিতে হয়, যাতে আলো বের হয়ে অবস্থান ফাঁস না হয়। সময় গুনতে হতো মোবাইলের ঘড়ি দেখে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এত দীর্ঘ মোতায়েন সৈনিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং মনোবল ভেঙে দেয়।

বাড়ি ফেরা ও স্বীকৃতি
দীর্ঘ অপেক্ষার পর এক রাতে দৌড়ে নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছান তিশচেনকো। তখন হাঁটার শক্তিও প্রায় ছিল না। বাড়ি ফিরে পরিবারকে কাছে পেয়ে তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতা স্বাভাবিক নয়। পরে রাষ্ট্রীয় সম্মানে তাকে ইউক্রেনের বীর খেতাব দেওয়া হয়। তবে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ড্রোননির্ভর এই যুদ্ধে মানুষকে কি শুধু গর্তে বসিয়ে রাখা যায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙামাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু

৪৭২ দিন অন্ধকার বাঙ্কারে জীবন: ইউক্রেনের সৈনিক সংকটের নীরব দলিল

০৭:০৯:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে একজন সৈনিকের জন্য কয়েক সপ্তাহের মোতায়েনই যেখানে স্বাভাবিক, সেখানে টানা চার শত বাহাত্তর দিন অন্ধকার ও স্যাঁতসেঁতে বাঙ্কারে কাটানো এক মানবিক সীমা ছোঁয়া অভিজ্ঞতা। ইউক্রেনীয় সেনা সার্জেন্ট সেরহিই তিশচেনকোর এই দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধজীবন এখন দেশটির সৈনিক সংকট, মানসিক চাপ এবং ড্রোননির্ভর যুদ্ধ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।

প্রথমে ভেবেছিলেন এক মাস
কিয়েভের উপকণ্ঠে নিজের বাড়িতে বসে তিশচেনকো বলছেন, তিনি ভেবেছিলেন এই মোতায়েন হয়তো এক মাস বা সর্বোচ্চ দুই মাসের। বাস্তবে সেটি গড়িয়েছে এক বছরেরও বেশি। পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে একটি ছোট বাঙ্কারে দিনের আলো না দেখে, তাজা বাতাস ছাড়া, টানা গোলাবর্ষণ আর ড্রোনের নজরদারির মধ্যে থাকতে হয়েছে তাকে ও তার সহযোদ্ধাদের।

অন্ধকার বাঙ্কারের জীবন
মাটির নিচের বাঙ্কারটি ছিল নিচু ও স্যাঁতসেঁতে। শোয়ার জন্য কোনো গদি ছিল না, ভরসা ছিল জলরোধী স্লিপিং ব্যাগ। শুরুতে আশপাশের অবস্থান থেকে খাবার ও যোগাযোগের সুযোগ মিললেও পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হয়। হামলায় সহযোদ্ধারা নিহত হন, কিন্তু বদলি আসে না। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়, ফেরার দিন অনিশ্চিত।

Image

ড্রোনের দাপট ও মানসিক চাপ
ড্রোনের কারণে দিনের বেলা বের হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। একটি ছোট জানালাও ঢেকে দিতে হয়, যাতে আলো বের হয়ে অবস্থান ফাঁস না হয়। সময় গুনতে হতো মোবাইলের ঘড়ি দেখে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এত দীর্ঘ মোতায়েন সৈনিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং মনোবল ভেঙে দেয়।

বাড়ি ফেরা ও স্বীকৃতি
দীর্ঘ অপেক্ষার পর এক রাতে দৌড়ে নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছান তিশচেনকো। তখন হাঁটার শক্তিও প্রায় ছিল না। বাড়ি ফিরে পরিবারকে কাছে পেয়ে তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতা স্বাভাবিক নয়। পরে রাষ্ট্রীয় সম্মানে তাকে ইউক্রেনের বীর খেতাব দেওয়া হয়। তবে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ড্রোননির্ভর এই যুদ্ধে মানুষকে কি শুধু গর্তে বসিয়ে রাখা যায়।