০১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
কেভিন পার্কারের নতুন অ্যালবাম ‘ডেডবিট’: প্রযুক্তিগত পরিপূর্ণতায় হারিয়ে যাওয়া মানবিক স্পর্শ বিএনপি, জামায়াতের চোখে বিতর্কিত উপদেষ্টা কারা মোহাম্মদপুরে ভয় ও অনিশ্চয়তার ছায়া—এক বছরে বেড়েছে বোমা বিস্ফোরণ, গ্যাং সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ধানের শীষে ভোট দিন’ -তালিমুদ্দিন মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় বিএনপি নেতা কাজী গনি চৌধুরীর বক্তব্য দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতিতে সহজলভ্য মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিতের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন জরুরি—জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ জুলাই সনদকে নির্বাহী আদেশে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান—সালাহউদ্দিনের বক্তব্যে আইনি প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর মেধাভিত্তিক ইনক্রিমেন্ট ফের চালু—যোগ্য কর্মকর্তাদের প্রণোদনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের স্পিন ঝড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিধ্বস্ত—২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল টাইগাররা ভক্তদের জন্য চমক — স্ট্রে কিডসের নতুন অ্যালবাম ‘ডু ইট’ প্রকাশ নভেম্বরেই

‘ডিডিএলজে’: নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প থেকে সাংস্কৃতিক বিপ্লবে—কেন আজও মুম্বাইয়ের মারাঠা মন্দিরে বাজে রাজ-সিমরনের প্রেম

১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া বলিউডের কালজয়ী প্রেমের চলচ্চিত্র ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ (ডিডিএলজে) ত্রিশ বছর পরও ভারতীয় দর্শকদের হৃদয়ে একইভাবে বেঁচে আছে। মুম্বাইয়ের ঐতিহাসিক মারাঠা মন্দির সিনেমা হলে প্রতিদিনই এই ছবিটি চলছে—যেখানে রাজ-সিমরনের প্রেমের গল্প হয়ে উঠেছে এক প্রজন্মের চিরন্তন রোমান্স ও সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক।

সিনেমা হলে এক অমর আবেগ

মুম্বাইয়ের মারাঠা মন্দিরে সিনেমা শুরু হতেই বাজে সেই বিখ্যাত ম্যান্ডোলিনের সুর, দর্শকরা উঠে দাঁড়ায় উল্লাসে। কেউ ছবি তোলে, কেউ চোখের জল মুছে আবার হাসে। ত্রিশ বছর ধরে এমনটাই চলছে—সরকার বদলেছে, প্রজন্ম বদলেছে, কিন্তু রাজ ও সিমরনের গল্পে মানুষ খুঁজে পায় এক অবিনশ্বর ভালোবাসা।

৫০ বছর বয়সী হীরাকর্মী সুনীল শেডগে বলেন, “আমি প্রায় প্রতিদিন দেখি। কখনও হাসি, কখনও কাঁদি—এমন সিনেমা আর হবে না।” তার মতো অনেকেই এই সিনেমাকে জীবনের অংশ করে ফেলেছেন।

Raj (Shah Rukh Khan) and Simran (Kajol) on a London bus in a scene from "DDLJ."

‘ডিডিএলজে’ ও ভারতের নবজাগরণ

১৯৯৫ সালের ভারত তখন বিশ্বায়নের নতুন যুগে প্রবেশ করছে। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আধুনিকতার পথে, MTV, Star TV, আর নতুন প্রজন্মের উদ্যমে বদলে যাচ্ছিল সংস্কৃতি। এই পরিবর্তনের মাঝেই আদিত্য চোপড়ার প্রথম চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে নতুন ভারতের প্রতীক।

রাজ ও সিমরনের ইউরোপভ্রমণের গল্পে যেমন ছিল পশ্চিমা রোমান্সের ছোঁয়া, তেমনি ছিল ভারতীয় পারিবারিক মূল্যবোধের গভীরতা। ছবিটি যেন বলেছিল—প্রেম বিদ্রোহ নয়, বরং সম্মান ও পরিবারের অনুমোদনেই পূর্ণতা পায়।

সমালোচক অনুপমা চোপড়া বলেন, “যখন ভাগ্য মিলে যায়, তখনই এমন চলচ্চিত্র তৈরি হয় যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সংজ্ঞায়িত করে।”

চরিত্র ও গল্পের প্রতীকী শক্তি

সিমরন, এক দায়িত্বশীল কন্যা; রাজ, এক প্রাণবন্ত তরুণ। দুজনের প্রেমের পরিণতি পেতে হয় বাবার অনুমতি। শেষ দৃশ্যে সিমরনের দৌড়, রাজের রক্তাক্ত মুখ, আর বাবার সংলাপ—“জা সিমরন, জা।” আজও ভারতের প্রেমকাব্যের চূড়ান্ত প্রতীক।

ছবির প্রথম ভাগে লন্ডন ও ইউরোপের আধুনিকতা, আর পরের ভাগে পাঞ্জাবের গ্রামীণ আবহ—এই দুই পৃথিবীর মেলবন্ধনই ছিল ভারতের দ্বৈত পরিচয়ের প্রতিচ্ছবি।

Movie-goers in line for "DDLJ" tickets at the Mumbai cinema.

সংগীত ও ফ্যাশনের ছোঁয়ায় এক যুগ

জতিন-ললিতের সুরে তৈরি গানগুলো আজও প্রেমের প্রতীক। পোশাক ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রা বলেন, “সিমরনের পোশাকে আমি খুঁজেছি তার দুই দিক—লন্ডনের আধুনিকতা আর পাঞ্জাবের শিকড়। প্রতিটি দোপাট্টা, প্রতিটি ফুলেল স্কার্টে ছিল তার আত্মার গল্প।”

সিনেমাটি কেবল ফ্যাশন নয়, সঙ্গীত ও অনুভূতির দিক থেকেও হয়ে ওঠে এক সাংস্কৃতিক মানদণ্ড।

প্রবাসী ভারতীয়দের গল্পে প্রথম আলো

ডিডিএলজে–ই প্রথম মূলধারার বলিউড চলচ্চিত্র যা প্রবাসী ভারতীয়দের পরিচয় ও তাদের দ্বন্দ্বকে গল্পের কেন্দ্রে এনেছিল। আগে প্রবাসী চরিত্র মানেই নেতিবাচক ভাবমূর্তি—কিন্তু এই ছবিতে তারা হয়ে ওঠে নায়ক, প্রেমিক, আর নিজেদের শিকড়ের প্রতি অনুগত মানুষ।

“এই ছবিতে প্রত্যেক ভারতীয় নিজের একটা অংশ খুঁজে পায়,” বলেন মিডিয়া উদ্যোক্তা স্নিগ্ধা সুর।

ইউটিউবার লিলি সিং বলেন, “আমি যেমন বাবা-মায়ের অনুমোদন চাই, তেমনি সিমরনও চায়। তাই ছবির শেষটা আমার জীবনের প্রতিচ্ছবি।”

Raj (Shah Rukh Khan) and Simran (Kajol) at a London station in a scene from "DDLJ."

রেকর্ড ভাঙা সাফল্য

অর্ধমিলিয়ন ডলারের কম বাজেটে নির্মিত এই ছবি বিদেশে আয় করে প্রায় ২০ লাখ ডলার আয় করে, আর দেশে হয় বছরের সর্বোচ্চ আয়ের চলচ্চিত্র। সমালোচক অনুপমা চোপড়ার ভাষায়, “ডিডিএলজে আধুনিক বলিউডের নকশা তৈরি করেছে।”

এর পরের এক দশকে ‘পর্দেস’, ‘কভি খুশি কভি গম’ বা ‘কাল হো না হো’-এর মতো ছবিতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় ডিডিএলজের প্রভাব।

শাহরুখ–কাজলের অমর জুটি

এই চলচ্চিত্রেই জন্ম নেয় বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি—শাহরুখ খান ও কাজল। পরের কয়েক দশক ধরে তারা হয়ে ওঠেন রোমান্সের সোনার মানদণ্ড। “তাদের যুগলবন্দি বারবার দর্শক টেনে এনেছে,” বলেন অনুপমা চোপড়া।

মারাঠা মন্দির: প্রেমের মন্দির

আজও প্রতিদিন প্রায় ১০০ টিকিট বিক্রি হয়। ম্যানেজার মনোজ পাণ্ডে জানান, “২০১৫ সালে প্রদর্শনী বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর শত শত মানুষ চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানায়।” ফলে সিনেমাটি আজও চলছে।

A man buys a ticket for "DDLJ" at the Maratha Mandir theater in July 2010.

ত্রিশ বছর পরও দর্শকরা মোবাইল তুলে ভিডিও তোলে, প্রতিটি সংলাপে উল্লাসে ফেটে পড়ে। সুনীল শেডগে বলেন, “যতদিন বাঁচব, এই সিনেমা দেখে যাব।”

সময়ের দৃষ্টিতে বিতর্ক ও প্রভাব

কিছু দর্শক আজ বলেন, ছবির কিছু অংশ এখন ‘পুরনো ধাঁচের’। যেমন রাজের এক দৃশ্যে সিমরনকে মানসিকভাবে বিভ্রান্ত করা, বা নারী চরিত্রের সীমিত স্বপ্নচিত্রণ। সমালোচকরা বলেন, “তবুও এই সিনেমা তার সময়ের সন্তান—তখন কেউ ভাবেনি এতে সমস্যা আছে, কারণ সবাই প্রেমে মুগ্ধ ছিল।”

‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ কেবল একটি প্রেমের ছবি নয়—এটি ভারতের সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাস, প্রবাসী পরিচয় ও পারিবারিক মূল্যবোধের এক অমর প্রতীক। মারাঠা মন্দিরে প্রতিদিন বাজে রাজের ম্যান্ডোলিন, যেন স্মরণ করিয়ে দেয়—প্রেম যদি সত্য হয়, তবে সময়ও তাকে মুছে ফেলতে পারে না।

#বলিউড, #ডিডিএলজে, #শাহরুখ# কাজল,# মারাঠা মন্দির,# ভারতীয় সিনেমা,# প্রেমের গল্প,# চলচ্চিত্র সংস্কৃতি,# সারাক্ষণ রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

কেভিন পার্কারের নতুন অ্যালবাম ‘ডেডবিট’: প্রযুক্তিগত পরিপূর্ণতায় হারিয়ে যাওয়া মানবিক স্পর্শ

‘ডিডিএলজে’: নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প থেকে সাংস্কৃতিক বিপ্লবে—কেন আজও মুম্বাইয়ের মারাঠা মন্দিরে বাজে রাজ-সিমরনের প্রেম

০৭:২৬:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া বলিউডের কালজয়ী প্রেমের চলচ্চিত্র ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ (ডিডিএলজে) ত্রিশ বছর পরও ভারতীয় দর্শকদের হৃদয়ে একইভাবে বেঁচে আছে। মুম্বাইয়ের ঐতিহাসিক মারাঠা মন্দির সিনেমা হলে প্রতিদিনই এই ছবিটি চলছে—যেখানে রাজ-সিমরনের প্রেমের গল্প হয়ে উঠেছে এক প্রজন্মের চিরন্তন রোমান্স ও সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক।

সিনেমা হলে এক অমর আবেগ

মুম্বাইয়ের মারাঠা মন্দিরে সিনেমা শুরু হতেই বাজে সেই বিখ্যাত ম্যান্ডোলিনের সুর, দর্শকরা উঠে দাঁড়ায় উল্লাসে। কেউ ছবি তোলে, কেউ চোখের জল মুছে আবার হাসে। ত্রিশ বছর ধরে এমনটাই চলছে—সরকার বদলেছে, প্রজন্ম বদলেছে, কিন্তু রাজ ও সিমরনের গল্পে মানুষ খুঁজে পায় এক অবিনশ্বর ভালোবাসা।

৫০ বছর বয়সী হীরাকর্মী সুনীল শেডগে বলেন, “আমি প্রায় প্রতিদিন দেখি। কখনও হাসি, কখনও কাঁদি—এমন সিনেমা আর হবে না।” তার মতো অনেকেই এই সিনেমাকে জীবনের অংশ করে ফেলেছেন।

Raj (Shah Rukh Khan) and Simran (Kajol) on a London bus in a scene from "DDLJ."

‘ডিডিএলজে’ ও ভারতের নবজাগরণ

১৯৯৫ সালের ভারত তখন বিশ্বায়নের নতুন যুগে প্রবেশ করছে। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আধুনিকতার পথে, MTV, Star TV, আর নতুন প্রজন্মের উদ্যমে বদলে যাচ্ছিল সংস্কৃতি। এই পরিবর্তনের মাঝেই আদিত্য চোপড়ার প্রথম চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে নতুন ভারতের প্রতীক।

রাজ ও সিমরনের ইউরোপভ্রমণের গল্পে যেমন ছিল পশ্চিমা রোমান্সের ছোঁয়া, তেমনি ছিল ভারতীয় পারিবারিক মূল্যবোধের গভীরতা। ছবিটি যেন বলেছিল—প্রেম বিদ্রোহ নয়, বরং সম্মান ও পরিবারের অনুমোদনেই পূর্ণতা পায়।

সমালোচক অনুপমা চোপড়া বলেন, “যখন ভাগ্য মিলে যায়, তখনই এমন চলচ্চিত্র তৈরি হয় যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সংজ্ঞায়িত করে।”

চরিত্র ও গল্পের প্রতীকী শক্তি

সিমরন, এক দায়িত্বশীল কন্যা; রাজ, এক প্রাণবন্ত তরুণ। দুজনের প্রেমের পরিণতি পেতে হয় বাবার অনুমতি। শেষ দৃশ্যে সিমরনের দৌড়, রাজের রক্তাক্ত মুখ, আর বাবার সংলাপ—“জা সিমরন, জা।” আজও ভারতের প্রেমকাব্যের চূড়ান্ত প্রতীক।

ছবির প্রথম ভাগে লন্ডন ও ইউরোপের আধুনিকতা, আর পরের ভাগে পাঞ্জাবের গ্রামীণ আবহ—এই দুই পৃথিবীর মেলবন্ধনই ছিল ভারতের দ্বৈত পরিচয়ের প্রতিচ্ছবি।

Movie-goers in line for "DDLJ" tickets at the Mumbai cinema.

সংগীত ও ফ্যাশনের ছোঁয়ায় এক যুগ

জতিন-ললিতের সুরে তৈরি গানগুলো আজও প্রেমের প্রতীক। পোশাক ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রা বলেন, “সিমরনের পোশাকে আমি খুঁজেছি তার দুই দিক—লন্ডনের আধুনিকতা আর পাঞ্জাবের শিকড়। প্রতিটি দোপাট্টা, প্রতিটি ফুলেল স্কার্টে ছিল তার আত্মার গল্প।”

সিনেমাটি কেবল ফ্যাশন নয়, সঙ্গীত ও অনুভূতির দিক থেকেও হয়ে ওঠে এক সাংস্কৃতিক মানদণ্ড।

প্রবাসী ভারতীয়দের গল্পে প্রথম আলো

ডিডিএলজে–ই প্রথম মূলধারার বলিউড চলচ্চিত্র যা প্রবাসী ভারতীয়দের পরিচয় ও তাদের দ্বন্দ্বকে গল্পের কেন্দ্রে এনেছিল। আগে প্রবাসী চরিত্র মানেই নেতিবাচক ভাবমূর্তি—কিন্তু এই ছবিতে তারা হয়ে ওঠে নায়ক, প্রেমিক, আর নিজেদের শিকড়ের প্রতি অনুগত মানুষ।

“এই ছবিতে প্রত্যেক ভারতীয় নিজের একটা অংশ খুঁজে পায়,” বলেন মিডিয়া উদ্যোক্তা স্নিগ্ধা সুর।

ইউটিউবার লিলি সিং বলেন, “আমি যেমন বাবা-মায়ের অনুমোদন চাই, তেমনি সিমরনও চায়। তাই ছবির শেষটা আমার জীবনের প্রতিচ্ছবি।”

Raj (Shah Rukh Khan) and Simran (Kajol) at a London station in a scene from "DDLJ."

রেকর্ড ভাঙা সাফল্য

অর্ধমিলিয়ন ডলারের কম বাজেটে নির্মিত এই ছবি বিদেশে আয় করে প্রায় ২০ লাখ ডলার আয় করে, আর দেশে হয় বছরের সর্বোচ্চ আয়ের চলচ্চিত্র। সমালোচক অনুপমা চোপড়ার ভাষায়, “ডিডিএলজে আধুনিক বলিউডের নকশা তৈরি করেছে।”

এর পরের এক দশকে ‘পর্দেস’, ‘কভি খুশি কভি গম’ বা ‘কাল হো না হো’-এর মতো ছবিতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় ডিডিএলজের প্রভাব।

শাহরুখ–কাজলের অমর জুটি

এই চলচ্চিত্রেই জন্ম নেয় বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি—শাহরুখ খান ও কাজল। পরের কয়েক দশক ধরে তারা হয়ে ওঠেন রোমান্সের সোনার মানদণ্ড। “তাদের যুগলবন্দি বারবার দর্শক টেনে এনেছে,” বলেন অনুপমা চোপড়া।

মারাঠা মন্দির: প্রেমের মন্দির

আজও প্রতিদিন প্রায় ১০০ টিকিট বিক্রি হয়। ম্যানেজার মনোজ পাণ্ডে জানান, “২০১৫ সালে প্রদর্শনী বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর শত শত মানুষ চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানায়।” ফলে সিনেমাটি আজও চলছে।

A man buys a ticket for "DDLJ" at the Maratha Mandir theater in July 2010.

ত্রিশ বছর পরও দর্শকরা মোবাইল তুলে ভিডিও তোলে, প্রতিটি সংলাপে উল্লাসে ফেটে পড়ে। সুনীল শেডগে বলেন, “যতদিন বাঁচব, এই সিনেমা দেখে যাব।”

সময়ের দৃষ্টিতে বিতর্ক ও প্রভাব

কিছু দর্শক আজ বলেন, ছবির কিছু অংশ এখন ‘পুরনো ধাঁচের’। যেমন রাজের এক দৃশ্যে সিমরনকে মানসিকভাবে বিভ্রান্ত করা, বা নারী চরিত্রের সীমিত স্বপ্নচিত্রণ। সমালোচকরা বলেন, “তবুও এই সিনেমা তার সময়ের সন্তান—তখন কেউ ভাবেনি এতে সমস্যা আছে, কারণ সবাই প্রেমে মুগ্ধ ছিল।”

‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ কেবল একটি প্রেমের ছবি নয়—এটি ভারতের সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাস, প্রবাসী পরিচয় ও পারিবারিক মূল্যবোধের এক অমর প্রতীক। মারাঠা মন্দিরে প্রতিদিন বাজে রাজের ম্যান্ডোলিন, যেন স্মরণ করিয়ে দেয়—প্রেম যদি সত্য হয়, তবে সময়ও তাকে মুছে ফেলতে পারে না।

#বলিউড, #ডিডিএলজে, #শাহরুখ# কাজল,# মারাঠা মন্দির,# ভারতীয় সিনেমা,# প্রেমের গল্প,# চলচ্চিত্র সংস্কৃতি,# সারাক্ষণ রিপোর্ট