ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এই সপ্তাহে সূচকগুলো কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৮ শতাংশ। বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব এবং সীমিত পুনরুদ্ধারের প্রবণতার কারণে বাজারে ধীরগতি দেখা দিয়েছে, যা বাজারের অনিশ্চয়তা ও অপেক্ষামূলক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়।
সামগ্রিক বাজারচিত্র
ডিএসইর সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সপ্তাহজুড়ে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২৭ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের ৫২২ কোটি টাকা থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা কম।
তবে লেনদেন কমলেও সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসেই সব সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
সূচকের পরিবর্তন
মূল সূচক ডিএসইএক্স (DSEX) ৩০ পয়েন্ট বেড়ে সপ্তাহের শুরুতে ৫,১১৯ থেকে শেষে ৫,১৪৯ পয়েন্টে পৌঁছেছে।
ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ (DS30) বেড়েছে ৩০ পয়েন্ট, শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস (DSES) বেড়েছে ২ পয়েন্ট, আর ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সূচক ডিএসএমইএক্স (DSMEX) বেড়েছে ২৪ পয়েন্ট।
লেনদেন ও দামের ধারা
যদিও সূচক বেড়েছে, তবু বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারমূল্য হ্রাস পেয়েছে। মোট ৩৯২টি সক্রিয় কোম্পানির মধ্যে ২০৩টির দাম কমেছে, ১৫৭টির বেড়েছে এবং ৩২টির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
খাতভিত্তিক পারফরম্যান্স
২১টি খাতের মধ্যে ১৬টিতে দাম কমেছে, ৫টিতে বেড়েছে।
সবচেয়ে বড় পতন দেখা গেছে করপোরেট বন্ড খাতে, যেখানে দাম কমেছে ৭৭ শতাংশ।
এরপর ব্যাংকিং খাতে দাম কমেছে ২২ শতাংশ, সাধারণ বিমায় ৩৫.৫৯ শতাংশ এবং জীবন বিমায় ৩০.৬৭ শতাংশ।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পতনের মধ্যে রয়েছে—
- জ্বালানি খাত: ৩০.৯১%
- চামড়া খাত: ৪৭.৩৯%
- টেলিযোগাযোগ: ১০.৮৮%
- টেক্সটাইল: ৩২.৬৩%
- পর্যটন: ২৭.৫৮%
- সিরামিক: ২৬.২১%
- খাদ্য খাত: ৭.৮৮%
- বিবিধ খাত: ২১.৬৮%
- কাগজ: ৬.৫১%
- ওষুধ খাত: ৫.৫০%
অন্যদিকে, ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে, যার মূল্য বেড়েছে ৩২.৮৯ শতাংশ।
এরপর রয়েছে—
- আর্থিক প্রতিষ্ঠান: +২%
- রিয়েল এস্টেট: +২%
- তথ্যপ্রযুক্তি: +১৩%
- সিমেন্ট খাত: +৬.৩৪%
সপ্তাহের শীর্ষ পাঁচ লাভকারী প্রতিষ্ঠান (ডিএসই)
১. ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড
২. বাংলাদেশ ফাইন্যান্স পিএলসি
৩. ভিএফএস থ্রেড ডাইয়িং লিমিটেড
৪. সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেড
৫. আরামিট লিমিটেড
সপ্তাহের শীর্ষ পাঁচ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান (ডিএসই)
১. এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড
২. ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি
৩. খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড
৪. মন্নো এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারি লিমিটেড
৫. জাহিন স্পিনিং পিএলসি
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) চিত্র
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সপ্তাহজুড়ে মূল সূচক সিএএসপিআই (CASPI), ৫৫ পয়েন্ট কমেছে।
তবে সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ৪৬ পয়েন্ট, আর সিএসসিএক্স (CSCX) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
সপ্তাহজুড়ে মোট ৩১০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে—এর মধ্যে ১৯১টির দাম কমেছে, ৯৭টির বেড়েছে এবং ২২টির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সিএসইর শীর্ষ পাঁচ লাভকারী প্রতিষ্ঠান
১. বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড
২. ভিএফএস থ্রেড ডাইয়িং লিমিটেড
৩. ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পিএলসি
৪. ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড
৫. ক্রাউন সিমেন্ট পিএলসি
সিএসইর শীর্ষ পাঁচ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান
১. নিউ লাইন ক্লোদিংস লিমিটেড
২. এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড
৩. এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড
৪. ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি
৫. পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস
ডিএসইতে সূচকের সামান্য ঊর্ধ্বগতি বিনিয়োগকারীদের আস্থার ইঙ্গিত দিলেও লেনদেনের কমতি বাজারে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করছে।
খাতভিত্তিক বৈচিত্র্য ও বিনিয়োগকারীদের সতর্কতা ইঙ্গিত দিচ্ছে, বাজার এখনও স্থিতিশীলতার পথে ফেরেনি।
#ঢাকা_স্টক_এক্সচেঞ্জ #শেয়ারবাজার #লেনদেন #বিনিয়োগকারী #সিএসই #আর্থিক_খাত #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 

















