০৬:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
চেয়ারম্যান ঘাট: নোয়াখালীর ঐতিহাসিক নদী তীর রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে নতুন শর্ত মানতে প্রস্তুত রিলায়েন্স আরপিও সংশোধনে বিএনপির আপত্তি, ইসিকে চিঠি সাবেক প্রধান বিচারপতিকে কেন জামিন নয়, হাইকোটে রুল পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা ঘিরে যুদ্ধের হুমকি বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থবির, উত্তরাঞ্চলে লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তি বিএসসিআইসি শিল্প এলাকায় রঙ কারখানার বয়লার কক্ষে ভয়াবহ বিস্ফোরণ জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী তাকাইচির প্রথম পদক্ষেপ: ‘ক্যাশ রিলিফ’ আর দ্রুত সামরিক শক্তি সীমান্ত বাণিজ্য থমকে যাওয়ায় নীরব দর্শনা রেলওয়ে স্টেশন কোরিয়ান হিট ‘হাউস অব ডায়নামাইট’: শুধু ড্রামা নয়, সাউন্ডট্র্যাকও হচ্ছে আলাদা ব্যবসা

ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে কাতারের অর্থনীতি ও নিরাপত্তা কৌশল

বিশ্বকাপ-পরবর্তী বাস্তবতায় কাতারের নতুন চিন্তা

কাতার দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে এক অনন্য ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রেখেছিল। আঞ্চলিক বিদ্রোহী ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তার পরিচিতি গড়ে উঠেছে। নিরাপত্তার জন্য দেশটি নির্ভর করে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির ওপর, আর অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি ছিল ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন।

কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই মডেল নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। ২০২৫ সালের গ্রীষ্মে দেশটি দুইবার হামলার মুখে পড়ে—জুনে ইরান মার্কিন ঘাঁটিতে বোমা হামলা চালায়, আর তিন মাস পর ইসরায়েল হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যাচেষ্টা চালায়, যারা তখন দোহায় গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় ছিলেন। অর্থনৈতিক দিক থেকেও বিশ্বকাপ-পরবর্তী সময়ে পর্যটকের ঘাটতি ও অতিরিক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কারণে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।


মধ্যস্থতা থেকে বিশ্ব কূটনীতিতে প্রসার

গাজা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কাতার এখন এক মোড়ের মুখে—নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পররাষ্ট্রনীতি পুনর্বিন্যাস এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দিকে মনোযোগ দেওয়াই এখন প্রধান লক্ষ্য।

সাম্প্রতিক সময়ে কাতার মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে তার কূটনৈতিক ভূমিকা বিস্তৃত করছে। সেপ্টেম্বর মাসে দেশটি দুই বছর ধরে ইরাকি মিলিশিয়ার হাতে বন্দি ইসরায়েলি-রুশ গবেষক এলিজাবেথৎসুরকভের মুক্তির চুক্তিতে মধ্যস্থতা করে। এছাড়া রুয়ান্ডা ও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মধ্যে শান্তিচুক্তি, এবং কলম্বিয়ার সরকার ও মাদকচক্র ‘ক্লান দেল গোলফো’র মধ্যে আলোচনাও কাতারের তত্ত্বাবধানে হয়েছে।

দোহা কর্মকর্তারা জানান যে, মধ্যপ্রাচ্যে এখন আলোচনাযোগ্য সংঘাত কমে আসায় তারা বৈশ্বিক পরিসরে সক্রিয় হচ্ছেন। এতে ঝুঁকিও তুলনামূলক কম—যেমন, কলম্বিয়া দোহায় বোমা হামলার হুমকি দেবে না। তবে ইসলামপন্থীদের প্রতি কাতারের ঐতিহাসিক সমর্থন আগেও সমস্যার কারণ হয়েছিল; ২০১৭ সালে চার আরব দেশ মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থনের অভিযোগে কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।


ইসলামপন্থী সম্পর্ক শিথিল হবে কি?

কূটনৈতিক মহলে ধারণা, বর্তমান আমির ও তার পিতার (প্রাক্তন আমির) ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের মধ্যে নীতিগত টানাপোড়েন চলছে। পুরোনো উপদেষ্টারা এখনো আদর্শনির্ভর পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখতে চান, তবে নতুন প্রজন্ম বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

এই পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ব্যবস্থাপনায়ও। আরবি সার্ভিসটি গাজা যুদ্ধজুড়ে হামাসপন্থী অবস্থান নিয়েছিল, গত মাসে সরকার সেখানে নেতৃত্ব পরিবর্তন করেছে—নতুন প্রধান এখন রাজপরিবারের সদস্য।


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি ও নতুন নিশ্চয়তা

২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ঘোষণা করেন যে, কাতারের ওপর যেকোনো হামলা যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হবে। যদিও এটি ন্যাটোর মতো আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা চুক্তি নয়, দোহা আশা করছে, এটি আক্রমণ ঠেকাতে এক ধরনের কার্যকর প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে। নভেম্বর মাসে আরও বিস্তারিত একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


বিশ্বকাপ-পরবর্তী অর্থনীতির বাস্তব চিত্র

কাতারের অর্থনীতি এখনো বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগে গড়ে তোলা হয় স্টেডিয়াম, হোটেল, মেট্রো ও অবকাঠামো। কিন্তু এই “বিল্ডিং বুম”-এর পর অতিরিক্ত সরবরাহ ও পর্যটক সংকটে বাজারে মন্দা দেখা দেয়।

২০২৪ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়ে ২.৮ শতাংশে দাঁড়ালেও, আবাসন ও পর্যটন খাতে অতিরিক্ত সক্ষমতা রয়ে গেছে। দোহায় হোটেল দখল হার ৬৯ শতাংশ, যা দুবাইয়ের চেয়ে ৯ এবং আবুধাবির চেয়ে ১০ শতাংশ কম। ভিলার ভাড়া এক বছরে ৭ শতাংশ, আর অ্যাপার্টমেন্টের ৫ শতাংশ কমেছে। শপিং মলের প্রায় ২০ শতাংশ দোকান এখনো খালি পড়ে আছে।


আধুনিক দোহা ও ‘ঘোস্ট টাউন’ লুসাইল

দোহা শহরের ওয়েস্ট বে বা ঐতিহ্যবাহী সুক ওয়াকিফে কিছুটা প্রাণচাঞ্চল্য থাকলেও, লুসাইল—যেখানে বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল—এখন প্রায় জনশূন্য শহর। রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেগুলো খালি, শ্রমিকেরা অভিযোগ করছেন বেতন বকেয়া আছে।

এর বিপরীতে সৌদি আরব দ্রুত বৈচিত্র্যমুখী অর্থনীতি গড়ছে, আর সংযুক্ত আরব আমিরাত ধনাঢ্য প্রবাসীদের আগমনে সমৃদ্ধি পাচ্ছে। কাতার এখনো মূলত গ্যাস, রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সীমিত পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল পুরোনো মডেলে আটকে আছে।


সীমিত নাগরিকসংখ্যা, গ্যাসই ভরসা

কাতারের নাগরিকসংখ্যা মাত্র ৪ লাখ—প্রতিবেশী সৌদি আরবের তুলনায় অনেক কম নাগরিক। ফলে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের প্রয়োজনও তুলনামূলকভাবে কম জরুরি। তেলের চাহিদা আগামী বছরগুলোতে কমলেও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজারে কাতার এখনো শক্ত অবস্থানে থাকবে।


অতীতের প্রতিধ্বনি ও ভবিষ্যতের অপেক্ষা

দোহা বিমানবন্দর থেকে শহরে ঢোকার পথে এখনো দেখা যায় বিশ্বকাপের উজ্জ্বল লাল সাইনবোর্ড, যেগুলোর একটি আসলে খুলে ফেলার কথা ছিল। এগুলো যেন এক উচ্ছল সময়ের স্মারক। তবে ডিসেম্বরেই আবার নতুন আয়োজন—আরব কাপের আয়োজক হচ্ছে কাতার—টানা দ্বিতীয়বারের মতো।

এই ছোট উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি হয়তো এখনো পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে—অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও রাজনৈতিক নিরাপত্তার মাঝে ভারসাম্য খুঁজে নিতে।


#কাতার #মধ্যপ্রাচ্য #অর্থনীতি #বিদেশনীতি #নিরাপত্তা #বিশ্বকাপপরবর্তী_পরিবর্তন

জনপ্রিয় সংবাদ

চেয়ারম্যান ঘাট: নোয়াখালীর ঐতিহাসিক নদী তীর

ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে কাতারের অর্থনীতি ও নিরাপত্তা কৌশল

০২:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

বিশ্বকাপ-পরবর্তী বাস্তবতায় কাতারের নতুন চিন্তা

কাতার দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে এক অনন্য ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রেখেছিল। আঞ্চলিক বিদ্রোহী ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তার পরিচিতি গড়ে উঠেছে। নিরাপত্তার জন্য দেশটি নির্ভর করে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির ওপর, আর অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি ছিল ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন।

কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই মডেল নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। ২০২৫ সালের গ্রীষ্মে দেশটি দুইবার হামলার মুখে পড়ে—জুনে ইরান মার্কিন ঘাঁটিতে বোমা হামলা চালায়, আর তিন মাস পর ইসরায়েল হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যাচেষ্টা চালায়, যারা তখন দোহায় গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় ছিলেন। অর্থনৈতিক দিক থেকেও বিশ্বকাপ-পরবর্তী সময়ে পর্যটকের ঘাটতি ও অতিরিক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কারণে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।


মধ্যস্থতা থেকে বিশ্ব কূটনীতিতে প্রসার

গাজা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কাতার এখন এক মোড়ের মুখে—নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পররাষ্ট্রনীতি পুনর্বিন্যাস এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দিকে মনোযোগ দেওয়াই এখন প্রধান লক্ষ্য।

সাম্প্রতিক সময়ে কাতার মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে তার কূটনৈতিক ভূমিকা বিস্তৃত করছে। সেপ্টেম্বর মাসে দেশটি দুই বছর ধরে ইরাকি মিলিশিয়ার হাতে বন্দি ইসরায়েলি-রুশ গবেষক এলিজাবেথৎসুরকভের মুক্তির চুক্তিতে মধ্যস্থতা করে। এছাড়া রুয়ান্ডা ও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মধ্যে শান্তিচুক্তি, এবং কলম্বিয়ার সরকার ও মাদকচক্র ‘ক্লান দেল গোলফো’র মধ্যে আলোচনাও কাতারের তত্ত্বাবধানে হয়েছে।

দোহা কর্মকর্তারা জানান যে, মধ্যপ্রাচ্যে এখন আলোচনাযোগ্য সংঘাত কমে আসায় তারা বৈশ্বিক পরিসরে সক্রিয় হচ্ছেন। এতে ঝুঁকিও তুলনামূলক কম—যেমন, কলম্বিয়া দোহায় বোমা হামলার হুমকি দেবে না। তবে ইসলামপন্থীদের প্রতি কাতারের ঐতিহাসিক সমর্থন আগেও সমস্যার কারণ হয়েছিল; ২০১৭ সালে চার আরব দেশ মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থনের অভিযোগে কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।


ইসলামপন্থী সম্পর্ক শিথিল হবে কি?

কূটনৈতিক মহলে ধারণা, বর্তমান আমির ও তার পিতার (প্রাক্তন আমির) ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের মধ্যে নীতিগত টানাপোড়েন চলছে। পুরোনো উপদেষ্টারা এখনো আদর্শনির্ভর পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখতে চান, তবে নতুন প্রজন্ম বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

এই পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ব্যবস্থাপনায়ও। আরবি সার্ভিসটি গাজা যুদ্ধজুড়ে হামাসপন্থী অবস্থান নিয়েছিল, গত মাসে সরকার সেখানে নেতৃত্ব পরিবর্তন করেছে—নতুন প্রধান এখন রাজপরিবারের সদস্য।


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি ও নতুন নিশ্চয়তা

২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ঘোষণা করেন যে, কাতারের ওপর যেকোনো হামলা যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হবে। যদিও এটি ন্যাটোর মতো আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা চুক্তি নয়, দোহা আশা করছে, এটি আক্রমণ ঠেকাতে এক ধরনের কার্যকর প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে। নভেম্বর মাসে আরও বিস্তারিত একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


বিশ্বকাপ-পরবর্তী অর্থনীতির বাস্তব চিত্র

কাতারের অর্থনীতি এখনো বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগে গড়ে তোলা হয় স্টেডিয়াম, হোটেল, মেট্রো ও অবকাঠামো। কিন্তু এই “বিল্ডিং বুম”-এর পর অতিরিক্ত সরবরাহ ও পর্যটক সংকটে বাজারে মন্দা দেখা দেয়।

২০২৪ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়ে ২.৮ শতাংশে দাঁড়ালেও, আবাসন ও পর্যটন খাতে অতিরিক্ত সক্ষমতা রয়ে গেছে। দোহায় হোটেল দখল হার ৬৯ শতাংশ, যা দুবাইয়ের চেয়ে ৯ এবং আবুধাবির চেয়ে ১০ শতাংশ কম। ভিলার ভাড়া এক বছরে ৭ শতাংশ, আর অ্যাপার্টমেন্টের ৫ শতাংশ কমেছে। শপিং মলের প্রায় ২০ শতাংশ দোকান এখনো খালি পড়ে আছে।


আধুনিক দোহা ও ‘ঘোস্ট টাউন’ লুসাইল

দোহা শহরের ওয়েস্ট বে বা ঐতিহ্যবাহী সুক ওয়াকিফে কিছুটা প্রাণচাঞ্চল্য থাকলেও, লুসাইল—যেখানে বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল—এখন প্রায় জনশূন্য শহর। রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেগুলো খালি, শ্রমিকেরা অভিযোগ করছেন বেতন বকেয়া আছে।

এর বিপরীতে সৌদি আরব দ্রুত বৈচিত্র্যমুখী অর্থনীতি গড়ছে, আর সংযুক্ত আরব আমিরাত ধনাঢ্য প্রবাসীদের আগমনে সমৃদ্ধি পাচ্ছে। কাতার এখনো মূলত গ্যাস, রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সীমিত পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল পুরোনো মডেলে আটকে আছে।


সীমিত নাগরিকসংখ্যা, গ্যাসই ভরসা

কাতারের নাগরিকসংখ্যা মাত্র ৪ লাখ—প্রতিবেশী সৌদি আরবের তুলনায় অনেক কম নাগরিক। ফলে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের প্রয়োজনও তুলনামূলকভাবে কম জরুরি। তেলের চাহিদা আগামী বছরগুলোতে কমলেও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজারে কাতার এখনো শক্ত অবস্থানে থাকবে।


অতীতের প্রতিধ্বনি ও ভবিষ্যতের অপেক্ষা

দোহা বিমানবন্দর থেকে শহরে ঢোকার পথে এখনো দেখা যায় বিশ্বকাপের উজ্জ্বল লাল সাইনবোর্ড, যেগুলোর একটি আসলে খুলে ফেলার কথা ছিল। এগুলো যেন এক উচ্ছল সময়ের স্মারক। তবে ডিসেম্বরেই আবার নতুন আয়োজন—আরব কাপের আয়োজক হচ্ছে কাতার—টানা দ্বিতীয়বারের মতো।

এই ছোট উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি হয়তো এখনো পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে—অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও রাজনৈতিক নিরাপত্তার মাঝে ভারসাম্য খুঁজে নিতে।


#কাতার #মধ্যপ্রাচ্য #অর্থনীতি #বিদেশনীতি #নিরাপত্তা #বিশ্বকাপপরবর্তী_পরিবর্তন