০১:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
শত্রুর তুলনায় বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতা  অধিক আঘাত দেয়  বলিউডের তারকারা এখন চায় স্ট্রিমিংয়ের লাভের শেয়ার, শুধু অগ্রিম চেক নয় মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৩) যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি ৩ শতাংশে পৌঁছালেও প্রত্যাশার নিচে, সুদহার কমাতে স্বস্তিতে ফেড অধিকাংশ শেয়ারদরের পতনে ডিএসই ও সিএসই সপ্তাহ শুরু করল লাল সূচকে শেহবাজ শরিফ ও আসিম মুনির ‘মহান মানুষ’, বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আত্মসাৎ হওয়া ৪৫০০ কোটি টাকার ফেরত দাবি—দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় গ্রাহকরা এক টাকার নিচে মূল্যের শেয়ারে ‘টিক সাইজ’ হবে ০.০১ টাকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৪৬) পুলিশের প্রশাসনিক রদবদল—একযোগে বদলি ১১ কর্মকর্তার

গুলশান ও মতিঝিলের ব্যাংক হিসাবে দেশের ২০% আমানত

রাজধানীর আমানতের চিত্র

ঢাকা শহরের ব্যাংক আমানতের বণ্টনে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে মতিঝিল ও গুলশান এলাকায়। দেশের মোট ব্যাংক আমানতের প্রায় ২০ শতাংশ এই দুটি এলাকাতেই কেন্দ্রীভূত।

নগরীর ৫৭টি থানার ব্যাংক হিসাবের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মতিঝিল ও গুলশানের মোট ব্যাংক আমানত দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৭২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, যা সারাদেশের আমানতের উল্লেখযোগ্য অংশ।


ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে মতিঝিলের আধিপত্য

মতিঝিল এখনও দেশের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়িক ও আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। দেশের মোট ব্যাংক আমানতের ১০.২ শতাংশ এখনো এই অঞ্চলে রয়েছে।
যদিও অনেক ব্যাংক তাদের প্রধান কার্যালয় গুলশানে স্থানান্তর করেছে, তবুও মতিঝিলের পুরনো ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টগুলো সক্রিয় থাকায় এখানে আমানতের পরিমাণ এখনো বিপুল।


নতুন আর্থিক কেন্দ্র গুলশান

গুলশান বর্তমানে অনেক ব্যাংক সদর দপ্তর ও বেসরকারি কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এর ফলে গুলশান এলাকায় জাতীয় আমানতের ৯.৭ শতাংশ রয়েছে। এই দুই অঞ্চল—মতিঝিল ও গুলশান—মিলে দেশের মোট ব্যাংক আমানতের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।


বিপরীতে বসন্তেকের সীমিত আমানত

গুলশান থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বসন্তেক থানা এলাকায় অবস্থান একেবারেই বিপরীত। এটি রাজধানীর সবচেয়ে কম আমানতের এলাকা, যেখানে দেশের মোট ব্যাংক আমানতের মাত্র ০.০১ শতাংশ রয়েছে।

২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, বসন্তেকে ৫,৭২৫টি অ্যাকাউন্টে মোট আমানত ছিল ২৪৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এক বছর আগে, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৩০ জুন, এই সংখ্যা ছিল ৫,৬৫৪টি অ্যাকাউন্টে ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
অর্থাৎ এক বছরে নতুন অ্যাকাউন্ট বেড়েছে মাত্র ৫১টি, আর আমানত বেড়েছে মাত্র ৫ কোটি ৪ লাখ টাকা—যা তুলনামূলকভাবে নগণ্য।


নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর বাস্তবতা

বসন্তেক এলাকার স্থানীয়রা জানান, এই অঞ্চলটি অপেক্ষাকৃত নতুন এবং বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা শিল্পকারখানা এখানে নেই। ফলে ব্যাংকে জমার প্রধান উৎস ব্যক্তিগত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ব্যবসা।
এলাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রমজীবী মানুষের বসবাস বেশি হওয়ায় ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা এবং আমানতের পরিমাণ উভয়ই সীমিত।

ঢাকার অর্থনৈতিক মানচিত্রে স্পষ্ট বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়—একদিকে মতিঝিল ও গুলশানের মতো সম্পদকেন্দ্র, অন্যদিকে বসন্তেকের মতো শ্রমনির্ভর এলাকা। ব্যাংক আমানতের এই অসম বণ্টন রাজধানীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের একটি প্রতিফলন।

#ঢাকা #ব্যাংক_আমানত #গুলশান #মতিঝিল #বসন্তেক #অর্থনীতি

জনপ্রিয় সংবাদ

শত্রুর তুলনায় বন্ধুর বিশ্বাসঘাতকতা  অধিক আঘাত দেয় 

গুলশান ও মতিঝিলের ব্যাংক হিসাবে দেশের ২০% আমানত

০৮:৫০:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর আমানতের চিত্র

ঢাকা শহরের ব্যাংক আমানতের বণ্টনে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে মতিঝিল ও গুলশান এলাকায়। দেশের মোট ব্যাংক আমানতের প্রায় ২০ শতাংশ এই দুটি এলাকাতেই কেন্দ্রীভূত।

নগরীর ৫৭টি থানার ব্যাংক হিসাবের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মতিঝিল ও গুলশানের মোট ব্যাংক আমানত দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৭২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, যা সারাদেশের আমানতের উল্লেখযোগ্য অংশ।


ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে মতিঝিলের আধিপত্য

মতিঝিল এখনও দেশের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়িক ও আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। দেশের মোট ব্যাংক আমানতের ১০.২ শতাংশ এখনো এই অঞ্চলে রয়েছে।
যদিও অনেক ব্যাংক তাদের প্রধান কার্যালয় গুলশানে স্থানান্তর করেছে, তবুও মতিঝিলের পুরনো ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টগুলো সক্রিয় থাকায় এখানে আমানতের পরিমাণ এখনো বিপুল।


নতুন আর্থিক কেন্দ্র গুলশান

গুলশান বর্তমানে অনেক ব্যাংক সদর দপ্তর ও বেসরকারি কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এর ফলে গুলশান এলাকায় জাতীয় আমানতের ৯.৭ শতাংশ রয়েছে। এই দুই অঞ্চল—মতিঝিল ও গুলশান—মিলে দেশের মোট ব্যাংক আমানতের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।


বিপরীতে বসন্তেকের সীমিত আমানত

গুলশান থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বসন্তেক থানা এলাকায় অবস্থান একেবারেই বিপরীত। এটি রাজধানীর সবচেয়ে কম আমানতের এলাকা, যেখানে দেশের মোট ব্যাংক আমানতের মাত্র ০.০১ শতাংশ রয়েছে।

২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, বসন্তেকে ৫,৭২৫টি অ্যাকাউন্টে মোট আমানত ছিল ২৪৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এক বছর আগে, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৩০ জুন, এই সংখ্যা ছিল ৫,৬৫৪টি অ্যাকাউন্টে ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
অর্থাৎ এক বছরে নতুন অ্যাকাউন্ট বেড়েছে মাত্র ৫১টি, আর আমানত বেড়েছে মাত্র ৫ কোটি ৪ লাখ টাকা—যা তুলনামূলকভাবে নগণ্য।


নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর বাস্তবতা

বসন্তেক এলাকার স্থানীয়রা জানান, এই অঞ্চলটি অপেক্ষাকৃত নতুন এবং বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা শিল্পকারখানা এখানে নেই। ফলে ব্যাংকে জমার প্রধান উৎস ব্যক্তিগত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ব্যবসা।
এলাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রমজীবী মানুষের বসবাস বেশি হওয়ায় ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা এবং আমানতের পরিমাণ উভয়ই সীমিত।

ঢাকার অর্থনৈতিক মানচিত্রে স্পষ্ট বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়—একদিকে মতিঝিল ও গুলশানের মতো সম্পদকেন্দ্র, অন্যদিকে বসন্তেকের মতো শ্রমনির্ভর এলাকা। ব্যাংক আমানতের এই অসম বণ্টন রাজধানীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের একটি প্রতিফলন।

#ঢাকা #ব্যাংক_আমানত #গুলশান #মতিঝিল #বসন্তেক #অর্থনীতি