০৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
জাপানে সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে এলো—ট্রাম্প ও তাকাইচির নীতি প্রভাব ফেলছে অর্থনীতিতে চিকিৎসকের চেম্বারে নিজের পক্ষেই কণ্ঠ তুলুন—নারীর স্বাস্থ্যে আত্মবিশ্বাস ও প্রস্তুতির গুরুত্ব স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লব—বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বেঁচে থাকার নতুন আশা নারী বন্ধুত্ব কেবল বিপ্লব নয়, বিবর্তনের গল্প —সংগ্রাম, সমর্থন ও আত্মচেতনার সংযোগ বিজ্ঞান বলছে, এই সুগন্ধগুলো সবার মন জয় করবে ভারসাম্য, শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের বিজ্ঞান—হ্যান্ডস্ট্যান্ড আয়ত্ত করার কৌশল টেইলর সুইফটের ‘অ্যাকুস্টিক ভল্ট’: স্টেডিয়াম থেকে সরাসরি, এখন সেটাই হবে অফিসিয়াল রিলিজ গ্রামীণ খেলাধুলা: শীতের ছুটিতে বাংলাদেশের শিশুদের জাদুকরী শৈশব জাতির ‘মাতৃমূর্তি’র প্রতি শ্রদ্ধায় শোকাভিভূত থাইল্যান্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওষুধ ব্যবসায়ীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে ভারতীয় তেল আমদানি

নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা রাশিয়ার তেল খাতে

রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান — রসনেফট পিজেএসসি ও লুকওইল পিজেএসসি — নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে প্রতিদিন প্রায় ৩.১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি ঝুঁকিতে পড়েছে, যা রাশিয়ার মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেক।

ভারতের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বড় ধরনের সরবরাহ সংকট সৃষ্টি করতে পারে। দেশটি ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে প্রতিদিন গড়ে ১.৭ মিলিয়ন ব্যারেল রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। ভারতের প্রধান ক্রেতা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের রসনেফটের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে, যা এখন নতুন বাস্তবতায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ও সময়সীমা

নিষেধাজ্ঞার আওতায় রসনেফট ও লুকওইলের সম্পদ জব্দ এবং তাদের সঙ্গে যেকোনো আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২১ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত একটি সমাপ্তি সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে চলমান চুক্তি সমন্বয়ের সুযোগ থাকবে।

Oil jumps 5% as US sanctions target Russia's Rosneft and Lukoil | World  News - Business Standard

যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি নিষিদ্ধ এই দুই রুশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন চালিয়ে যায়, তবে তাদের ওপরও দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।

এদিকে, রাশিয়ার তেল রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

ভারতে সরবরাহ সংকটের সম্ভাবনা

ভারতের তেল আমদানির ওপর নির্ভরতা অত্যন্ত বেশি। ২০২৪ সালে দেশটি প্রতিদিন প্রায় ৪.৮৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ব্যবহার করেছে, যার বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আসে। ২০২২ সালের পর থেকে রাশিয়ার তেল ভারতের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, কারণ তখন দেশটি ছাড়ে তেল বিক্রি শুরু করেছিল।

কিন্তু নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়া থেকে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হলে ভারতকে মধ্যপ্রাচ্য বা আফ্রিকার দিকে ঝুঁকতে হতে পারে। এতে খরচ বাড়বে এবং অনেক পরিশোধনাগারকে প্রযুক্তিগতভাবে নতুন সরবরাহের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।

Oil surges 5% after U.S. sanctions Russian firms Rosneft and Lukoil - The  Japan Times

বৈশ্বিক বাজারে ঢেউ

রসনেফটের ২০২৪ সালের উৎপাদন ছিল দৈনিক প্রায় ৩.৩ মিলিয়ন ব্যারেল (রাশিয়ার মোট উৎপাদনের ৩১ শতাংশ), আর লুকওইলের উৎপাদন ১.৬ মিলিয়ন ব্যারেল (১৫ শতাংশ)। সম্মিলিতভাবে এ দুই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি প্রায় ৩.১ মিলিয়ন ব্যারেল, যা বিশ্ব সরবরাহের প্রায় ৩ শতাংশ। ফলে সামান্য ব্যাঘাতও বৈশ্বিক বাজারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, রুশ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। ভারতীয় পরিশোধনাগারগুলোকে হয় সরাসরি নিষিদ্ধ রুশ কোম্পানির সঙ্গে কেনাবেচা বন্ধ করতে হবে, নয়তো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে লেনদেন চালাতে হবে—যা ব্যয়বহুল ও জটিল হবে।

মার্কিন বার্তা: সতর্ক থাক চীনও

বিশ্লেষকেরা আরও উল্লেখ করেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এক ধরনের বার্তা—যে দেশ বা প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন চালাবে, তাদের জন্যও মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশ সীমিত হতে পারে। এই বার্তা কেবল ভারতের নয়, চীনের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত পাঠিয়েছে।

 

#তেলবাজার #রাশিয়া #যুক্তরাষ্ট্র #ভারত #নিষেধাজ্ঞা #জ্বালানি_সংকট #ব্রেন্ট_তেল

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানে সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে এলো—ট্রাম্প ও তাকাইচির নীতি প্রভাব ফেলছে অর্থনীতিতে

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে ভারতীয় তেল আমদানি

০২:৪৫:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা রাশিয়ার তেল খাতে

রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান — রসনেফট পিজেএসসি ও লুকওইল পিজেএসসি — নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে প্রতিদিন প্রায় ৩.১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি ঝুঁকিতে পড়েছে, যা রাশিয়ার মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেক।

ভারতের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বড় ধরনের সরবরাহ সংকট সৃষ্টি করতে পারে। দেশটি ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে প্রতিদিন গড়ে ১.৭ মিলিয়ন ব্যারেল রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। ভারতের প্রধান ক্রেতা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের রসনেফটের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে, যা এখন নতুন বাস্তবতায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ও সময়সীমা

নিষেধাজ্ঞার আওতায় রসনেফট ও লুকওইলের সম্পদ জব্দ এবং তাদের সঙ্গে যেকোনো আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২১ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত একটি সমাপ্তি সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে চলমান চুক্তি সমন্বয়ের সুযোগ থাকবে।

Oil jumps 5% as US sanctions target Russia's Rosneft and Lukoil | World  News - Business Standard

যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি নিষিদ্ধ এই দুই রুশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন চালিয়ে যায়, তবে তাদের ওপরও দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।

এদিকে, রাশিয়ার তেল রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

ভারতে সরবরাহ সংকটের সম্ভাবনা

ভারতের তেল আমদানির ওপর নির্ভরতা অত্যন্ত বেশি। ২০২৪ সালে দেশটি প্রতিদিন প্রায় ৪.৮৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ব্যবহার করেছে, যার বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আসে। ২০২২ সালের পর থেকে রাশিয়ার তেল ভারতের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, কারণ তখন দেশটি ছাড়ে তেল বিক্রি শুরু করেছিল।

কিন্তু নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়া থেকে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হলে ভারতকে মধ্যপ্রাচ্য বা আফ্রিকার দিকে ঝুঁকতে হতে পারে। এতে খরচ বাড়বে এবং অনেক পরিশোধনাগারকে প্রযুক্তিগতভাবে নতুন সরবরাহের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।

Oil surges 5% after U.S. sanctions Russian firms Rosneft and Lukoil - The  Japan Times

বৈশ্বিক বাজারে ঢেউ

রসনেফটের ২০২৪ সালের উৎপাদন ছিল দৈনিক প্রায় ৩.৩ মিলিয়ন ব্যারেল (রাশিয়ার মোট উৎপাদনের ৩১ শতাংশ), আর লুকওইলের উৎপাদন ১.৬ মিলিয়ন ব্যারেল (১৫ শতাংশ)। সম্মিলিতভাবে এ দুই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি প্রায় ৩.১ মিলিয়ন ব্যারেল, যা বিশ্ব সরবরাহের প্রায় ৩ শতাংশ। ফলে সামান্য ব্যাঘাতও বৈশ্বিক বাজারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, রুশ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। ভারতীয় পরিশোধনাগারগুলোকে হয় সরাসরি নিষিদ্ধ রুশ কোম্পানির সঙ্গে কেনাবেচা বন্ধ করতে হবে, নয়তো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে লেনদেন চালাতে হবে—যা ব্যয়বহুল ও জটিল হবে।

মার্কিন বার্তা: সতর্ক থাক চীনও

বিশ্লেষকেরা আরও উল্লেখ করেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এক ধরনের বার্তা—যে দেশ বা প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন চালাবে, তাদের জন্যও মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশ সীমিত হতে পারে। এই বার্তা কেবল ভারতের নয়, চীনের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত পাঠিয়েছে।

 

#তেলবাজার #রাশিয়া #যুক্তরাষ্ট্র #ভারত #নিষেধাজ্ঞা #জ্বালানি_সংকট #ব্রেন্ট_তেল