১০:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
সাঙ্গু নদী: পাহাড়ের কোলে জন্ম, জীবনের ধারায় প্রবাহ রণক্ষেত্রে (পর্ব-১১৬) পাকিস্তানে প্রথম চীনা নির্মিত সাবমেরিন- ২০২৬ সালে উদ্বোধন সরকার বলছে, নেত্র নিউজের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিবেদন বিভ্রান্তিকর প্রার্থী বাছাইয়ে নারীদের প্রতি অবহেলা: বিএনপির রাজনীতিতে অদৃশ্য অর্ধেক বাংলাদেশে এ শীতে ১০ দফা শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা: আবহাওয়া অধিদপ্তর ভ্যাটিকান মন্ত্রীর কক্সবাজার সফর: রোহিঙ্গা শিবিরে মানবিক সংহতির বার্তা শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন, দুই বোরসের সূচক নিম্নমুখী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হলেন মাহমুদুল হাসান রাজধানীতে মঙ্গলবার সিএনজি অটোরিকশা চালকদের সমাবেশ

ট্রাম্পের সতর্কতা: নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের হত্যার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকি

ট্রাম্পের সামরিক হুমকি

২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন যে, তিনি পেন্টাগনকে নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক হামলার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। ট্রাম্প বলেন, যদি নাইজেরিয়া খ্রিস্টানদের হত্যার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত হামলা চালাবে।

ট্রাম্প আরও উল্লেখ করেন যে, তিনি নাইজেরিয়াকে সব ধরনের সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী যদি সেখানে যায়, তাহলে তারা ‘অত্যন্ত দ্রুত এবং তীব্রভাবে’ আইসলামিক জঙ্গিদের পরাজিত করবে।

নাইজেরিয়ার প্রতিক্রিয়া

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু ট্রাম্পের এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “নাইজেরিয়া ধর্মীয় সহিষ্ণুতায় বিশ্বাসী, এবং আমাদের সরকার সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।” তিনি আরও বলেন, নাইজেরিয়া সারা বিশ্বের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।

Donald Trump has threatened to shut down broadcasters, but can he? |  Brookings

যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ

ট্রাম্পের হুমকি দেওয়ার একদিন পর, তার প্রশাসন নাইজেরিয়াকে আবার ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ তালিকায় আগে থেকে চীন, মিয়ানমার, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও পাকিস্তান অন্তর্ভুক্ত ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী পশ্চিম আফ্রিকায় আগের তুলনায় কম উপস্থিতি রাখলেও, এখনও কিছু সেনা বাহিনী প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে অবস্থান করছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি পূর্ব আফ্রিকায়, ডিজিবুতি, যেখানে ৫,০০০ সেনা অবস্থান করছে।

খ্রিস্টানদের নিরাপত্তা

ট্রাম্প বলেছেন, “নাইজেরিয়ায় হাজার হাজার খ্রিস্টানকে হত্যা করা হচ্ছে,” যদিও তিনি এই হত্যাকাণ্ডের নির্দিষ্ট কোন প্রমাণ দেননি। তবে, নাইজেরিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তরাঞ্চলে বোকো হারামের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ ও সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। এই সহিংসতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

Security personnel patrol the streets amid a surge in violence in Mangu

সামরিক সহায়তা ও রাজনীতি

মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর চলমান নির্যাতন সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আরও বলছেন, এই পরিস্থিতির মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রোগ্রামের জন্য তহবিল বাড়ানোর প্রয়োজন।

নাইজেরিয়ার অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ

নাইজেরিয়া, যেখানে ২০০টির বেশি এথনিক গ্রুপ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সহাবস্থানে পরিচিত, তবে সেখানে সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়েছে, যা প্রায়শই জাতিগত বৈষম্য বা অপর্যাপ্ত সম্পদ নিয়ে সংঘর্ষের ফলস্বরূপ।

ট্রাম্প নাইজেরিয়াকে ‘ধর্মীয় সহিষ্ণুতার অভাব’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তবে দেশটি তাদের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও ট্রাম্পের কথায় অনেক বিতর্ক রয়েছে, তবে নাইজেরিয়া তার অবস্থান বজায় রাখতে এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সাঙ্গু নদী: পাহাড়ের কোলে জন্ম, জীবনের ধারায় প্রবাহ

ট্রাম্পের সতর্কতা: নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের হত্যার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকি

১২:৫৪:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫

ট্রাম্পের সামরিক হুমকি

২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন যে, তিনি পেন্টাগনকে নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক হামলার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। ট্রাম্প বলেন, যদি নাইজেরিয়া খ্রিস্টানদের হত্যার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত হামলা চালাবে।

ট্রাম্প আরও উল্লেখ করেন যে, তিনি নাইজেরিয়াকে সব ধরনের সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী যদি সেখানে যায়, তাহলে তারা ‘অত্যন্ত দ্রুত এবং তীব্রভাবে’ আইসলামিক জঙ্গিদের পরাজিত করবে।

নাইজেরিয়ার প্রতিক্রিয়া

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু ট্রাম্পের এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “নাইজেরিয়া ধর্মীয় সহিষ্ণুতায় বিশ্বাসী, এবং আমাদের সরকার সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।” তিনি আরও বলেন, নাইজেরিয়া সারা বিশ্বের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।

Donald Trump has threatened to shut down broadcasters, but can he? |  Brookings

যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ

ট্রাম্পের হুমকি দেওয়ার একদিন পর, তার প্রশাসন নাইজেরিয়াকে আবার ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ তালিকায় আগে থেকে চীন, মিয়ানমার, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও পাকিস্তান অন্তর্ভুক্ত ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী পশ্চিম আফ্রিকায় আগের তুলনায় কম উপস্থিতি রাখলেও, এখনও কিছু সেনা বাহিনী প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে অবস্থান করছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি পূর্ব আফ্রিকায়, ডিজিবুতি, যেখানে ৫,০০০ সেনা অবস্থান করছে।

খ্রিস্টানদের নিরাপত্তা

ট্রাম্প বলেছেন, “নাইজেরিয়ায় হাজার হাজার খ্রিস্টানকে হত্যা করা হচ্ছে,” যদিও তিনি এই হত্যাকাণ্ডের নির্দিষ্ট কোন প্রমাণ দেননি। তবে, নাইজেরিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তরাঞ্চলে বোকো হারামের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ ও সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। এই সহিংসতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

Security personnel patrol the streets amid a surge in violence in Mangu

সামরিক সহায়তা ও রাজনীতি

মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর চলমান নির্যাতন সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আরও বলছেন, এই পরিস্থিতির মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রোগ্রামের জন্য তহবিল বাড়ানোর প্রয়োজন।

নাইজেরিয়ার অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ

নাইজেরিয়া, যেখানে ২০০টির বেশি এথনিক গ্রুপ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সহাবস্থানে পরিচিত, তবে সেখানে সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়েছে, যা প্রায়শই জাতিগত বৈষম্য বা অপর্যাপ্ত সম্পদ নিয়ে সংঘর্ষের ফলস্বরূপ।

ট্রাম্প নাইজেরিয়াকে ‘ধর্মীয় সহিষ্ণুতার অভাব’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তবে দেশটি তাদের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও ট্রাম্পের কথায় অনেক বিতর্ক রয়েছে, তবে নাইজেরিয়া তার অবস্থান বজায় রাখতে এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।