একাদশ পরিচ্ছেদ
‘খেয়াল রাখিস ফোঁদয়া… ছেলেটারে লস্ট করে দিলে ভালো হবে না কিন্তু। আরে, আমার দিকে অমন চোখ পাকিয়ে তাকালে কী হবে, আমি সোজা কথা বলছি কিন্তু, হাঁ।’
এর উত্তরে ফেদিয়া সকলের অজান্তে আমার দিকে তাকিয়ে একবার চোখ মটকাল। যেন বলতে চাইল: ‘ঠিক আছে, তবে আমরাও জানি, বাছাধন, কত ধানে কত চাল হয়।’
এর মাসখানেকের মধ্যে দেখা গেল, খাঁটি ঘোড়সওয়ারের নিদর্শন হিসেবে ফেদিয়াকে আদর্শ করে আমি ওর অনুকরণ করতে শুরু করে দিয়েছি। পা দুটো রীতিমতো ফাঁক করে হাঁটতে শুরু করেছি, ঘোড়সওয়ারের গোড়ালির নাল পায়ে জড়িয়ে গিয়ে আর হাঁটায় বাধা পড়ছে না, আর বিশ্রামের সবটুকু সময় আমি বুরদিউকভের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে-পাওয়া শাদা আর বাদামীর ছোপ-দেয়া টিল্ডটিঙে বাজে জাতের ঘোড়াটার পেছনে লেগে রয়েছি।
ফেদিয়া সির্সভের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গেল, যদিও স্বভাবে তার সঙ্গে চুবুকের ছিল অনেক পার্থক্য। সত্যি বলতে কী, চুবুকের থেকে ফেদিয়ার সঙ্গে থাকার সময় আমি আরও বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করতে লাগলুম। চুবুক আমার যত-না বন্ধ ছিলেন তার চেয়ে অনেক বেশি ছিলেন বাপের মতো। কখনও কখনও, যখন তিনি ধমক দিতেন কিংবা কোনো কথা বলে লজ্জায় ফেলতেন, তখন রাগে গা জ্বলে গেলেও মুখে-মুখে জবাব দিতে সাহস হত না।
কিন্তু ফেদিয়ার সঙ্গে দরকারমতো ঝগড়া করে পরে আবার ভাব করে নিলেই চলত। আমাদের দল যখন বেকায়দায় পড়ত তখনও ফেদিয়ার সঙ্গে থাকতে ভারি মজা লাগত। কেবল মুশকিল ছিল এই যে ফেদিয়া ছিল খামখেয়ালী। যখন কোনো একটা জিনিস ওর মাথায় ঢুকত তখন সেটা করে তবে ছাড়ত ও, কিছুতেই তখন ওকে ঠেকানো যেত না।
																			
																আর্কাদি গাইদার								 


















